আসমা চৌধুরী'র একগুচ্ছ কবিতা


Literature/final g dfg d 5555.jpg

কিছু সহজ গান

প্রতিটি মানুষ আলাদা এ সত্য জেনেও তুলে ধরি
অন্য কোন সময়ের,অন্য কোন ভুবনের  আলো
সব পরিচিত চেহারা পাঠযোগ্য নয়,
কিছু বার্তা ভাঙনেও বেঁচে থাকে।

তুমি- আমি, যেখানে প্রতিদিন দেখি কিছু ক্ষয়।

কিছু গান বাজে, সহজ সুন্দর আনন্দে
ধরো পৃথিবীর পচনের ইতিহাস দেখি
তার গঠনে মুখ ভার করে থাকি
আমি যে সেই এক পাপেই দোষী।

আমাকে দিও না রঙ, এমন দুরাশায় যদি
আরো আঁধার বনে দেহ রেখে যাই
কিছু কষ্ট গোপনে রেখো হে সুধাভরা মাটি
জানতে চেয়ো না আমি কত ভালোবাসি
ঐ ফ্রকে সেলাই করেছি ফুল,
ইতিহাস সবুজ মুকুল।

রেখো কিছু খড় পৌষের দরজায় শীত তাড়াবো।


অপরিচিত মুখ

যেখানেই যাই এত লোকের ভিতরে
কাউকেই চেনা মনে হয় না
সব মুখ অপরিচিত
আমরা পাশাপাশি বসে নাস্তা খাই
এক্সকিউজ মি বলে, ধাক্কা খাওয়ার ভয়ে
সন্তর্পণে পাশ থেকে অন্য পথ ধরি
পড়ে যেতে যেতে দাঁড়িয়ে যাই
কারো হাত ধরি না।

এই যে হল ভর্তি মানুষ
কেন যেন তাদেরকে মনে হয় দাবারু
এখনই সুবিধামতো চাল দিয়ে
ঘোড়ার পাশে বসবে
উদ্দেশ্য কিস্তি মাত করা
আমি কিংবা তুমি
কি করে হাত ধরবো তার?

হল ভর্তি তরুণদের দেখো
একই রংয়ের পোশাক
প্রায় সমবয়সী তারা
হাসছে, বসছে, উঠে যাচ্ছে
দেখে মনে হচ্ছে না বাটপার
একই পোশাক,প্রায় একই বয়স
ওরা পরস্পরের সাথে ঝুঁকে আছে
পরামর্শ করছে, খবর বলছে
ওদের বিশ্বাসের হাতগুলো
ঠিকঠাক থাকবে তো ?

প্রজেক্টরে তাকিয়ে দেখি
একই সমাবর্তনের পোশাকে
প্রতিটি মুখ আমার সন্তান...


মেয়েরা ঘর ছাড়ার পর

বাড়ি বলে একটা টানা দুঃখ থাকে মেয়ের
মা থাকে না, বাবা অথবা ভাইও থাকে না
চোখ বন্ধ করলে তারা দেখে এটাই নিয়তি।

অজগর সাপের পেটে শুয়ে স্বপ্নের হরিণ
ঝিরিঝিরি ঘাস খায় আর চোখ মোছে
কেউ তাকে বলেনা, কেমন যাচ্ছে দিনকাল।

অনেক শেকড় ছেঁড়া মুখ বহুদিন পার করে
বাড়ির উঠোনে দেখে কেউ আর নাই আপন
জমির হিসাব নেই ,কলাকৌশলে বাড়ে বঞ্চনা।

তুমি মেয়ে, কার কাছে বলবে চাই উঠোনের দাম
আমগাছটির ডালে দোল খাওয়া সকালের রোদ্দুর
শৈশবের সাঁতারের জল, তেঁতুলের চিরল পাতা! 

তুমি ছেড়ে গেলে, বদলে গেছে বাড়ির আসবাব
এতকিছু বদলায় মেয়ে, মায়ের কাছে জানতে চেয়ো
একটুও কী বদলিয়েছে বড় হওয়া জখমের দাগ।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×