ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত থাকলে কোনো পারমাণবিক আলোচনা হবে না, বললেন ইরানের প্রেসিডেন্ট

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সাথে কথা বলেছেন। মি. ম্যাক্রো তাকে “ উত্তেজনা এড়াতে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের ” আহ্বান জানিয়েছেন। একইসাথে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইরানকে পারমাণবিক আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু পেজেশকিয়ান ম্যাক্রোকে বলেছেন, ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত থাকলে ইরান আলোচনার টেবিলে বসবে না। রোববারের নির্ধারিত যুক্তরাষ্ট্র - ইরান পারমাণবিক আলোচনা বাতিল ঘোষণা করার পরে ইরান এই কথা বলেছে।

হাজার মাইল উড়ে ফিরে এলেন ইসরায়েলি নারী পাইলট

ইরানে হামলার পর ফিরে এসেছেন ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর একজন নারী পাইলট (যুদ্ধ নেভিগেটর)। তিনি বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাতের হামলায় অংশ নেন। সফলভাবে লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করে ইসরায়েলের মাটিতে ফেরার পর এ পাইলট নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। খবর দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের। ওই পাইলট ইরানের ওপর ভয়াবহ বিমান হামলায় অংশ নেন। হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার, পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। মেজর শিন নামের ওই পাইলট ফিরে এসে বলেন, এটি ইসরায়েলের জন্য ঐতিহাসিক এবং আবেগপ্রবণ মিশন ছিল। একটি বড় হুমকি ঠেকানোর লক্ষ্যে এ অভিযান করা হয়। পাইলটের পুরো পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। শুধু তার নামের প্রথম হিব্রু অক্ষর দিয়ে তাকে পরিচিত করে আইএএফ (ইসরায়েলি বিমান বাহিনী)। বলা হয়, গর্বিত এয়ার ক্রু-এর একজন নারী সদস্য হিসেবে বিরল প্রকাশ্য মন্তব্য করলেন তিনি। শিন বলেন, আমি ককপিটে দায়িত্ব অনুভব করেছি। ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্য একটি সজাগ এবং অস্তিত্বের হুমকি দূর করার দায়িত্ব আমার কাঁধে অনুভব করি। আমরা এটি করছি আগামী দিনের শান্তির জন্য। আমাদের বাড়ির জন্য। এটাই আমাদের মিশন। মেজর শিন ইসরায়েল থেকে ১,৫০০ কিলোমিটারের (প্রায় ১,০০০ মাইল) বেশি দূরত্বে উড়ে হামলার পর ফিরে আসেন। তিনি এ অভিযানকে বহুমুখী, কঠিন ও শক্তিশালী বিমান অপারেশন হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এ অভিযান এমনভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে যাতে নিশ্চিত করা যায়, আমাদের সন্তানদের একটি উন্নত এবং নিরাপদ ভবিষ্যৎ হবে। প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের ১০টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইরানি সংবাদমাধ্যম। এর মধ্যে যুদ্ধবিমান দুটি শুক্রবার হামলায় অংশ নিয়েছিল। সেনাবাহিনীর বরাতে দেশটির আধা সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিমের এক প্রতিবেদনে এই দাবি করা হয়, হামলায় নিয়োজিত এক নারী পাইলটকে আটক করা হয়েছে। তবে তার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেয়নি ইরানের সেনাবাহিনী।

একযোগে ইসরায়েলে দুদেশের মিসাইল হামলা

ইরানের মিসাইল বৃষ্টি থেকে বাঁচতে রাতের ঘুম হারাম করে ইসরায়েলি নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর দিকে ছুটতে হয়েছে। তবুও ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যায়নি। ইসরায়েলে গতকাল শনিবার রাতে একের পর এক হামলা হয়েছে। স্মরণকালের ভয়াবহ এ হামলায় যখন ইসরায়েল দিশেহারা তখন জানা গেল ইয়েমেন থেকেও মিসাইল আঘাত হেনেছে। রোববার (১৫ জুন) দ্য টাইমস অব ইসরায়েল বলছে, ইয়েমেনের হুতিরা ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে। একই সময় ইরানের হামলা চলছিল। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ইরান-ইসরায়েল সংঘাত শুরুর পর এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ইসরায়েলে হামলা চালায় হুতিরা। ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুতিরা দাবি করেছে, তারা ইরানের সঙ্গে সমন্বয় করে তেলআবিব অঞ্চলে সংবেদনশীল ইসরায়েলি শত্রু লক্ষ্যবস্তুতে দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। দাবি সত্ত্বেও সামরিক কর্মকর্তারা টাইমস অব ইসরায়েলকে বলেছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ইয়েমেন থেকে কোনো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের বিষয়ে আইডিএফ অবগত নয়। কেবল শুক্রবার হুতিদের দ্বারা ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র পশ্চিম তীরের একটি ফিলিস্তিনি শহরে আঘাত হানে। যার ফলে বেশ কয়েকজন আহত হয়। তবে ফিলিস্তিনি শহরে আঘাত হানা এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের দায় গোষ্ঠীটি স্বীকার করেনি। তারা বলেছে, ইসরায়েলের স্থাপনা ধ্বংস করাই তাদের লক্ষ্য। গত রাতে এ যাবৎকালের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার মুখোমুখি হয় ইসরায়েল। ভোরের আলো ফুটতেই সেই ক্ষত দৃশ্যমান হচ্ছে। দ্য টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপ থেকে একের পর এক লাশ উদ্ধার হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। রাতে হাইফা, তেলআবিব, বাত ইয়াম, জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ শহরে আঘাত হানে ইরানের মিসাইল। এ ছাড়া ইসরায়েলের বাত ইয়ামে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর কয়েক ডজন মানুষ নিখোঁজ বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইয়নেট। হোম ফ্রন্ট কমান্ডের অনুমান, তেলআবিবের ঠিক দক্ষিণে বাত ইয়ামে হামলার স্থানে ৩৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করছে ইয়েমেনের হুতিরাও

ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করছে ইরান। এর পাশাপাশি ইয়েমেন থেকে হুতিরাও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে। আজ রোববার (শনিবার দিবাগত রাত) একের পর এক হামলা হয়েছে ইসরায়েলে। বোমা হামলা থেকে বাঁচতে ইসরায়েলি নাগরিকদের বারবারই নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর দিকে ছুটতে হয়েছে। খবর আল জাজিরার ইসরায়েল বলছে, এবার এসব ক্ষেপণাস্ত্র শুধু ইরান থেকেই যে আসছে তা নয়, ইয়েমেন থেকে হুতিরাও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছেন হুতিরা। এর আগে তারা গত মঙ্গলবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল। এর জবাবে হুতিদের নিয়ন্ত্রণাধীন হোদেইদা বন্দরে বোমা হামলা চালায় ইসরায়েল। হুতিরা বলছেন, গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলে হামলায় অংশ নিচ্ছেন তারা। গত মার্চ মাসে যুদ্ধবিরতির সময় হুতিরা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বন্ধ রেখেছিল। তবে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ভাঙতেই হুতিরা আবার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে শুরু করেছেন। ইয়েমেনভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতি ইরানের সমর্থনপুষ্ট।

অপারেশন সিন্দুরের পর প্রথম বিদেশ ভ্রমণ মোদির

রোববার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাইপ্রাস সফরের মাধ্যমে তিন দেশের সরকারি সফর শুরু করেছেন। এই সফরে তিনি সাইপ্রাস, কানাডা ও ক্রোয়েশিয়া যাবেন। অপারেশন সিন্দুরের পর এটি তার প্রথম বিদেশ সফর। এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ১৫ থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত এই সফরে নরেন্দ্র মোদি প্রথমে সাইপ্রাস যাবেন, এরপর কানাডার কানানাসকিসে জি-৭ সম্মেলনে অংশ নেবেন এবং সবশেষে ক্রোয়েশিয়া ভ্রমণের মাধ্যমে দেশে ফিরবেন। সাইপ্রাস সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডুলাইডেসের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং লিমাসোলে ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন। দুই দশকেরও বেশি সময় পর এই প্রথম কোন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী সাইপ্রাস সফর করছেন। সাইপ্রাস ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাউন্সিলের সভাপতিত্ব গ্রহণ করবে। এই সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার এবং ইউরোপ ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে ভারতের প্রভাব বাড়ানোর দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। ১৬ জুন মোদি কানাডা পৌঁছাবেন এবং ১৬-১৭ জুন জি-৭ সম্মেলনে অংশ নেবেন। এটি হবে তার ষষ্ঠতম অংশগ্রহণ জি-৭ সম্মেলনে । এবার তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির আমন্ত্রণে এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। এই সফরে মোদি ও কার্নির মধ্যেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে। এছাড়াও, নরেন্দ্র মোদী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন এই সফরে। জি-৭ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদি জ্বালানি নিরাপত্তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন নিয়ে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এরপর, ১৮ জুন তিনি ক্রোয়েশিয়ায় যাবেন। এটিই হবে কোন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম ক্রোয়েশিয়া সফর। এই সফর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও মজবুত করবে বলে ধারনা করছে বিশেষজ্ঞরা। সূত্র: এনডিটিভি এমআর/ এএস

ইরানের নতুন সেনাপ্রধান আমির হাতেমি

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনির নির্দেশে মেজর জেনারেল আমির হাতেমিকে ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ২০১৩ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা জেনারেল হাতেমির ‘নিষ্ঠা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা’-কে বিবেচনায় নিয়ে এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে আয়াতুল্লাহ খামেনির আনুষ্ঠানিক আদেশে উল্লেখ করা হয়। নিয়োগপত্রে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর বিশাল ও বিশ্বস্ত জনশক্তি, পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধ ও তৎপরবর্তী সময়ে অর্জিত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আপনার নেতৃত্বে যুদ্ধ প্রস্তুতি জোরদার, আধ্যাত্মিক ও আদর্শিক ভিত্তি শক্তিশালী করা, সেনা সদস্যদের কল্যাণ উন্নয়ন এবং সশস্ত্র বাহিনীর অন্যান্য শাখার সঙ্গে সমন্বয় আরও ত্বরান্বিত হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এছাড়াও জেনারেল মোহাম্মদ হোসেইন বাঘেরি নিহতের পর আয়াতুল্লাহ খামেনি সদ্য পদত্যাগকারী প্রধান মেজর জেনারেল সাইয়্যেদ আব্দুর রহিম মুসাভির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং তার সততা ও মূল্যবান প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন। একইসঙ্গে আয়াতুল্লাহ খামেনি মেজর জেনারেল সাইয়্যেদ আব্দুর রহিম মুসাভিকে সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ হিসেবে নিয়োগ দেন।

মার্কিন সেনাদের লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা

মার্কিন সেনাদের লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা হয়েছে। তবে এতে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। শনিবার (১৪ জুন) রাতে এ তথ্য জানা গেছে। এপি নিউজ এজেন্সি দুজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ইরাকের পশ্চিমাঞ্চলের আইন আল-আসাদ বিমানঘাঁটির দিকে নিক্ষেপ করা তিনটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। ওই ঘাঁটিতে মার্কিন সৈন্যরা অবস্থান করছে। এ হামলায় কোনো গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেনি। যুক্তরাষ্ট্র আশঙ্কা করছে, ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে মার্কিন বাহিনীর ওপর আক্রমণ করতে পারে। কারণ ইসরায়েল-ইরান সংঘাত তীব্রতর হচ্ছে এবং এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করছে তেহরান। সংঘাত শুরুর আগেই মধ্যপ্রাচ্যের সব মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার হুমকি দিয়েছিল ইরান। এ নিয়ে চাপা উত্তেজনার মধ্যে ড্রোন হামলার খবর এলো। শনিবার ফার্স সংবাদ সংস্থার বরাত দিয়ে স্পুটনিক ইন্টারন্যাশনাল দাবি করেছে, ইরান ইসরায়েলে আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতেও হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে। ইরানের সামরিক নেতৃত্বের পরিকল্পনার সঙ্গে পরিচিত একটি অজ্ঞাত সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানানো হয়। এক সূত্র সংস্থাটিকে জানিয়েছে, ইহুদিবাদী [ইসরায়েলি] সরকারের আগ্রাসনের ফলে শুরু হওয়া যুদ্ধ এই সরকারের দখলকৃত সব অঞ্চল এবং এই অঞ্চলে মার্কিন ঘাঁটিতে ছড়িয়ে পড়বে। আক্রমণকারীরা ইরানের কাছ থেকে একটি বড় আকারের প্রতিক্রিয়া পাবে। প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশনায় মধ্যপ্রাচ্যে সব মার্কিন সাম‌রিক ঘাঁ‌টি সক্রিয় করা হয়েছে। ইরান-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যে বড় ধরনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এ পদেক্ষেপ। শনিবার (১৪ জুন) ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ইরানে ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা এবং তেহরানের পাল্টা আক্রমণের প্রেক্ষিতে সব ঘাঁটিকে সক্রিয় থাকতে নির্দেশ জারি করা হয়েছে। যেকোনো সময় হুমকি মোকাবিলায় বা শত্রুপক্ষে আঘাত হানতে ঘাঁটিগুলোকে সজাগ ও সক্ষম রাখা হয়েছে। আমেরিকা কয়েক দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক ঘাঁটি পরিচালনা করে আসছে। কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস অনুসারে, আমেরিকা এই অঞ্চলের কমপক্ষে ১৯টি স্থানে স্থায়ী এবং অস্থায়ী উভয় ধরণের সামরিক ঘাঁটির একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে। এর মধ্যে আটটি স্থায়ী ঘাঁটি বাহরাইন, মিশর, ইরাক, জর্ডান, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থিত।

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ থামাতে বললেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ থামা উচিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এ পোস্টে এ কথা জানিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউক্রেনের সংঘাত নিয়ে কথা বলেছিলেন তিনি। তাকে তিনি তার অভিমত জানিয়েছেন। বলেছেন ইসরায়েল-ইরানের এই যুদ্ধেরও অবসান হওয়া উচিত। পাশাপাশি তার (রাশিয়া-ইউক্রেন) যুদ্ধেরো অবসান হওয়া উচিত। এদিকে, ইসরায়েলে আবারো বড় হামলা চালাতে যাচ্ছে ইরান। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই হামলা চালাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। আলজাজিরা জানিয়েছে, কয়েক ঘন্টার মধ্যে ইসরাইলে ‘বড়সর ও ধ্বংসাত্মক’ হামলা হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে ইসরায়েল আগেই ধারণা করেছিল শনিবার (১৪ জুন) রাতে আবারও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারে ইরানের সামরিক বাহিনী। ইসরায়েলি আর্মি রেডিওর প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে আলজাজিরা জানিয়েছিল, তেহরানের হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছে ইসরায়েল সেনাবাহিনী। শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে ইসরায়েলে যেভাবে ইরানের বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে ইরান, ঠিক একইভাবে আবারও হামলা চালাতে পারে তেহরান। এর আগে শুক্রবার রাতে তেল আবিবে ইরান শতাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে চারজন নিহত ও অনেক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

সৌদি যুবরাজকে ফোন করলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে ফোন করেছেন। এ সময় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইসরায়েলের হামলা-পাল্টা হামলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি সৌদি যুবরাজকে জানান। খবর আল-জাজিরারইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাসুদ পেজেশকিয়ান সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে ফোন করে বলেন, ‘আমি রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এই অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা জোরদার করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু ইহুদিবাদী সরকার (ইসরায়েল) আমরা যেখানে কিছু অর্জন করতে চেয়েছিলাম প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ও নাশকতা সৃষ্টি করেছে।’ তবে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এ সময় ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানকে কি বলেছেন সেই বিষয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ করেনি আল-জাজিরা। ইরান ও সৌদি আরব ২০২৩ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন করে চালু করার ঘোষণা দেয়। ওই সময় থেকে দেশ দুটির সম্পর্কে শীতলতা কাটতে শুরু করে।

ইরানে ১ ঘণ্টায় ইসরায়েলের ১০টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত

মাত্র এক ঘণ্টায় ইসরায়েলের ১০টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইরান। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ খবর জানিয়েছে। খাতাম আল-আম্বিয়া বিমান প্রতিরক্ষা ঘাঁটির এক কমান্ডারের বরাত দিয়ে এই খবরে বলা হয়, গত এক ঘণ্টায় ইরানের বিভিন্ন এলাকায় ১০টি ইসরায়েলি সামরিক বিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। এদিকে, ইসরায়েলের আয়রন ডোম আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ব্যর্থ করে তেল আবিবে অবস্থিত প্রতিরক্ষা সদর দপ্তরে হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইরান। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইরানে দফায় দফায় ইসরায়েলি বিমান হামলার পর তেহরানের এই প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ শুরু হয়। খবর এনডিটিভি। ইসরাইলের সর্বাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নাম ‘আয়রন ডোম’। মূলত এটা এমন একধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, যা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগেই শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্রকে আকাশেই ধ্বংস করতে সক্ষম। বড় ক্ষেপণাস্ত্র তো বটেই, ক্ষুদ্র রকেটও ধ্বংস করে দেয় ইসরায়েলের আয়রন ডোম। ইহুদিদের কাছে তাদের এই আয়রন ডোম জাতীয় নিরাপত্তা আর গৌরবের প্রতীক। ইসরায়েলের সেই গর্বকে এবার চূর্ণ করে দিল ইরান। সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসের যাচাই করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, তেল আবিবের একেবারে কেন্দ্রস্থলে আঘাত হানে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র, যেখানে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরসহ বেশ কয়েকটি সামরিক স্থাপনা অবস্থিত। এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ১৯ সেকেন্ডের ওই ক্লিপে দেখা যায়, ইসরায়েলের আয়রন ডোম একটি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে ক্ষেপণাস্ত্রটি ওই আয়রন ডোম ভেঙে চোখের পলকে প্রতিরক্ষা সদর দপ্তরে আঘাত হানে। ক্লিপটি শুরু হয় বিকট শব্দে বেরিয়ে আসা প্রজেক্টাইল দিয়ে। তারপর আলোর ঝলক এবং আগুনের একটি গোলা বিকট শব্দে ভবনটিতে আঘাত করে।

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত বন্ধে ঘণ্টাব্যাপী ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপ

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত বন্ধে শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফোন করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ সময়, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের নিন্দা জানান তিনি। সেইসাথে এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের বিষয়েও আলোচনা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাথে। শনিবার (১৪ জুন) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে এ তথ্য। ফোনালাপের ব্যাপ্তি ছিল প্রায় ৫০ মিনিট। ক্রেমলিনের শীর্ষ পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টাইউরি উশাকভ সাংবাদিকদের জানান, ভ্লাদিমির পুতিন ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের নিন্দা জানিয়েছেন এবং সংঘাতের সম্ভাব্য বৃদ্ধি সম্পর্কে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সেইসাথে, এই যুদ্ধের ফলে মধ্যপ্রাচ্যের পুরো পরিস্থিতির অপ্রত্যাশিত পরিণতি হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। উশাকভের আরও জানান, ট্রাম্প তার পক্ষ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনাবলিকে ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন। এ সময়, দুই নেতা বলেন, তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার পথে ফিরে আসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। অপরদিকে রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা আরআইএ অনুসারে, ইউক্রেন সম্পর্কে পুতিন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বলেছেন, রাশিয়া ২২ জুনের পরে ইউক্রেনীয়দের সাথে আলোচনা চালিয়ে যেতে প্রস্তুত। ফোনালাপকালে ট্রাম্প সংঘাতের দ্রুত সমাধানের জন্য তার আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেছেন বলেও জানানো হয়।

ব্রিটিশ গুপ্তচর জাহাজকে আটকে দিল ইরান

ওমান সাগরে একটি বিট্রিশ গুপ্তচর জাহাজকে আটকে দিয়েছে ইরানের নৌবাহিনীর সদস্যরা। শুধু আটকে দিয়ে ক্ষান্ত হয়নি দিক পরিবর্তন করতেও বাধ্য করেছে তারা। ইরানের সংবাদমধ্যম মেহের নিউজ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। মেহের নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে ইরানের ভূখণ্ডে নির্ভুলভাবে প্রবেশে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে এই ব্রিটিশ জাহাজটি আগের রাতে উত্তর ভারত মহাসাগর দিয়ে প্রবেশ করে। তবে ইরানের নৌবাহিনীর গোয়েন্দা ব্যবস্থা জাহাজটিকে সহজেই শনাক্ত করে ফেলে। পরে তাদের ব্রিটিশ জাহাজটিকে গতিপথ পরিবর্তন করতে বাধ্য করে ইরান। এদিকে, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলে বড় হামলা চালাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। আলজাজিরা জানিয়েছে, কয়েক ঘন্টার মধ্যে ইসরাইলে ‘বড়সর ও ধ্বংসাত্মক’ হামলা হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, ইসরায়েল আগেই ধারণা করেছিল শনিবার (১৪ জুন) রাতে আবারও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারে ইরানের সামরিক বাহিনী। ইসরায়েলি আর্মি রেডিওর প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে আলজাজিরা জানিয়েছিল, তেহরানের হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছে ইসরায়েল সেনাবাহিনী। শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে ইসরায়েলে যেভাবে ইরানের বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে ইরান, ঠিক একইভাবে আবারও হামলা চালাতে পারে তেহরান। এর আগে শুক্রবার রাতে তেল আবিবে ইরান শতাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে চারজন নিহত ও অনেক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার ভোরে ইরানের রাজধানী তেহরানে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কারখানা লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়। এ ছাড়া আবাসিক স্থানেও হামলা চালায় তেল আবিব। হামলায় ইরানের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ একাধিক কমান্ডারসহ ৮০ জন নিহত হয়েছে। যাদের মধ্যে ২০ জন শিশু রয়েছে। এদিকে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান সংঘাতে নিজেদের সেনাদলে আহত হওয়ার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। শনিবার (১৪ জুন) দেশটির সেনাবাহিনীর দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে, মধ্য ইসরায়েলে গভীর রাতে এই হামলা হয়, যা ছিল তাদের ওপর ইরানের পাল্টা আক্রমণের অংশ। আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ব্যালিস্টিক মিসাইলগুলোর আঘাতে অন্তত ৭ সেনা আহত হন। তাদের তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসার পর সবাইকে হাসপাতাল থেকে ছাড়াও দেওয়া হয়েছে।

শুরু হয়ে গেছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ: রুশ জেনারেল

রাজধানী তেহরানসহ ইরানের ৮টি শহরে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী (আইএএফ)। শুক্রবার (১৩ জুন) স্থানীয় সময় ভোররাতে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ শুরু করে ইসরায়েল। হামলার শুরুতেই অন্তত ২০০ যুদ্ধবিমান অংশ নেয় এবং ১০০টিরও বেশি স্থানে আক্রমণ চালায়। এর মধ্যে রয়েছে পরমাণু স্থাপনা, ব্যালিস্টিক মিসাইল ঘাঁটি, সামরিক ঘাঁটি ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এদিকে ইরানে ইসরায়েলের এমন ভয়াবহ হামলার মধ্য দিয়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ‘শুরু হয়ে গেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন এক রুশ জেনারেল। ৫১ বছর বয়সী আপতি আলাদিনোভ নামের ওই মেজর জেনারেল রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বেশ প্রভাবশালী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিররের খবরে জানানো হয়, ইসরায়েলের এমন বিধ্বংসী হামলার পর ওই সেনা কর্মকর্তা ১০ লাখ নতুন সেনা নিয়োগ দিতে ক্রেমলিনকে আহ্বান জানিয়েছেন। বর্তমানে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ‘সামরিক-রাজনৈতিক’ বিভাগের উপপ্রধান হিসেবে নিয়োজিত আলাদিনোভ বলেছেন, ‘নতুন মোড় নেওয়ার পাশাপাশি যুদ্ধ ইতোমধ্যে একটি গতি পেয়েছে।’ আমাদের সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেওয়া উচিত উল্লেখ করে এক টেলিগ্রাম পোস্টে তিনি বলেন, ‘অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ আগেভাগে প্রস্তুত করতে হবে। তবে বাস্তবে তা হওয়া উচিত ১০ লাখ।’ ‘যুদ্ধ ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। এটি নতুন মোড় নিয়েছে এবং নতুন গতি পেয়েছে। তাই নতুন সেনা নিয়োগ দিয়ে তাদেরকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করতে হবে।’ ইসরায়েলসহ পশ্চিমা দেশগুলোর দিকে ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, ‘যেভাবে তারা অন্যদের সঙ্গে খেলছে, এখন ইরানের সঙ্গে খেলছে, একইভাবে যেন আমাদের সঙ্গে এমনকিছু করার সাহস না পায়, সেজন্যও নতুন সেনা প্রস্তুত করতে হবে।’ এরইমধ্যে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে, সেগুলো লক্ষ্যভ্রষ্ট করতে কাজ করছে। ইসরায়েলের জনগণকে সুরক্ষিত জায়গায় যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়ার কথাও জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। এর মধ্যে ইসরায়েলের তেল আবিব শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছে আলজাজিরা। আলজাজিরা জানায়, ইরানের হামলায় তেল আবিবে বিস্ফোরণ ঘটেছে এবং ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে সাইরেন বেজে উঠেছে। তেল আবিব ও জেরুজালেমে সাইরেনের শব্দ শোনা গেছে। এদিকে ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, ইরানের পক্ষ থেকে ইসরায়েলকে জবাব দেওয়া শুরু হয়েছে। ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে কয়েকশ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ইরানে হামলার পর নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। শুক্রবার ভোরে ঘটা এই হামলায় এরইমধ্যে সৌদি আরব, তুর্কিসহ বিশ্বের অনেক দেশ তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। জানা গেছে, ইরানে পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর অংশ হিসেবে অনেক দিন ধরেই পরিকল্পনা করছিল ইসরায়েল। এর অংশ হিসেবে তারা সেখানে একটা ড্রোন ঘাঁটি স্থাপন ও নির্ভুল অস্ত্র ব্যবস্থা ও কম্যান্ডো পাচার করেছে। ইসরায়েলের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা টাইমস অফ ইসরায়েলকে বলেন, মোসাদ এজেন্টরা তেহরানে সেই ঘাঁটি স্থাপন করেছিলেন। তারপর রাতারাতিতে সেই ঘাঁটি ব্যবহার করেই ভূমিতে স্থাপন করা ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চারগুলিতে আঘাত হানে। এর ফলেই ইরান তাৎক্ষণিক পাল্টা হামলা চালাতে সক্ষম হয়নি এবং তাদের বিমানপ্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অনেকটাই ধ্বংস হয়ে যায়। ইরানে ইসরায়েলির হামলায় অন্তত ৭৮ জন নিহত ও ৩২৯ জন আহত হয়েছে। দেশটির রেভল্যুশনারি গার্ড পরিচালিত নিউজ এজেন্সিতে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ে, বাস্তবে নিহত ও আহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রবিবারের পারমাণবিক আলোচনা বাতিল করেছে ইরান

ওমানে রবিবার (১৫ জুন) অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্ধারিত ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক আলোচনার পরবর্তী পর্ব বাতিল করা হয়েছে। শনিবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে। আরাঘচিকে জিজ্ঞেস করা হয়, ‘আমরা কি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি যে রোববারের আলোচনা বাতিল?’ জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ।’ এর কিছুক্ষণ পর ওমানও নিশ্চিত করে যে আলোচনাটি ‘এখন আর অনুষ্ঠিত হচ্ছে না।’ এর আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আরাঘচির উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, ইরান পরিষ্কারভাবে ইঙ্গিত দিয়েছে যে, যখন ‘নির্মম’ ইসরায়েলি হামলা দেশটিকে লক্ষ্য করছে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনা চালিয়ে যাওয়া অযৌক্তিক। ইসরায়েল ও ইরানের হঠাৎ ও ব্যাপক সংঘাতের ফলে আলোচনা স্থগিত হওয়াকে অবশ্যম্ভাবী বলেই মনে করা হচ্ছিল। ইসরায়েল যখন ইরানের বিরুদ্ধে তার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক হামলা চালায়, তখন তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনাকে ‘অর্থহীন’ বলে অভিহিত করে। তেহরান অভিযোগ করে, ওয়াশিংটন এই হামলায় ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পারমাণবিক আলোচনার ষষ্ঠ পর্ব রবিবার ওমানে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে, তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম শুধুই বেসামরিক উদ্দেশ্যে এবং এটি গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে বলে ইসরায়েলের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অঙ্গীকার করেছেন, ‘ইরানকে ‘পারমাণবিক হুমকি’ তৈরি করা থেকে বিরত রাখতে যতদিন লাগবে, ততদিন হামলা অব্যাহত থাকবে।’ ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে বলেন, তিনি ইরানি নেতাদের আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, ‘তারা যা জানে বা যা কল্পনা করেছে তার চেয়েও অনেক খারাপ কিছু হতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সেরা এবং সবচেয়ে প্রাণঘাতী সামরিক সরঞ্জাম তৈরি করে এবং ইসরায়েলের হাতে এর অনেক কিছু রয়েছে—আরও আরও আসছে।’ ট্রাম্প ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের জন্য দায়ী করেন এবং আরও কঠোর ইসরায়েলি হামলার হুমকি দেন। তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিজ্ঞানের অধ্যাপক হামেদ মুসাভি আল জাজিরাকে বলেন, অনেক ইরানির মতে, যখন তাদের ওপর বোমাবর্ষণ চলছে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনা চালিয়ে যাওয়াটা সত্যিই অর্থহীন। তিনি বলেন, ইসরায়েল কার্যত কূটনৈতিক সমাধানের পথটাই বন্ধ করে দিয়েছে। এবং আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র পুরোপুরি ইসরায়েলের সঙ্গে সমন্বয় করেই চলেছে। তাই আমি মনে করি না যে এই আলোচনা আর এগোবে। মুসাভি আরও বলেন, ইসরায়েলিরা আশা করেছিল ইরানের রাজধানীতে জনগণের কোনও বিক্ষোভ বা দাঙ্গা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এমন কিছু দেখা যায়নি। ভবিষ্যতে হবে কি না, বলা কঠিন। তবে এই মুহূর্তে জনগণের মনোভাব আসলেই বেশ প্রতিরোধমূলক।

ইরানের পর পাকিস্তান : নেতানিয়াহু

ইরানে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এর জবাবে পাল্টা হামলা শুরু করেছে ইরানও। মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমেই ঘনাচ্ছে উত্তেজনার মেঘ। এর মধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। মুসলিম বিশ্বের ইরান ও পাকিস্তানকে ঘিরে দেওয়া এক পুরোনোসাক্ষাৎকারের ভিডিওআবারও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ওই সাক্ষাৎকারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন যে ইসলামি মিলিটাইজেশনকে কেন্দ্র করে ইরান ও পাকিস্তান এই অঞ্চলে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে এবং এ দুটি দেশই থাকতে পারে ইসরায়েলের পরবর্তী টার্গেট। নেতানিয়াহু বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় পাকিস্তানকে অত্যন্ত সাবধানে ও দূরদর্শিতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা কী পথ বেছে নেবে। তার ভাষায়, এখনই পাকিস্তানে উচিত একটা সুস্পষ্ট ও কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেওয়া— তারা কি ইরানে বিশ্বাস ও বন্ধুত্ব বজায় রাখবে নাকি আত্মরক্ষায় আলাদা পথ নেবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত সেই সাক্ষাৎকারের ভিডিওটি এরই মধ্যেই লাখোবার দেখা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। অনেকেই বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে, তা আরও বিস্তার পেতে পারে এবং এর সুদূরপ্রসারী পরিণতি পেতে পারে।

অপ্রতিরোধ্য ইরান, ইসরায়েলের কোনো ওষুধই কাজে আসছে না

ইসরায়েলের হামলার জবাবে মুহুর্মুহু ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে ইরান। সব বাধা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উপেক্ষা করে একের পর এক আঘাত হেনে যাচ্ছে তারা- গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ঘাঁটি। এবার ইরান ইসরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম সম্পূর্ণরূপে চুরমার করে দিয়েছে এবং গুঁড়িয়ে দিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা সদর দপ্তরও। শনিবার (১৪ জুন) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা গেছে, রাজধানী তেল আবিবের কেন্দ্রস্থলে আঘাত হেনেছে ইরানি মিসাইল- যে এলাকায় রয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরসহ আরও অনেক সামরিক স্থাপনা। ১৯ সেকেন্ডের সেই ভিডিও ক্লিপে আরও প্রকাশিত হয়েছে যে, ইসরায়েলের আয়রন ডোম একটি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু তা ব্যর্থ হয়। ক্ষেপণাস্ত্রটি আয়রন ডোমকে বিদ্ধ করে সরাসরি আঘাত হানে প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর ভবনটিতে। ক্লিপটি শুরু হয় প্রকাণ্ড শব্দে বের হওয়া এক টানা আলো ও অগ্নিগোলক দিয়ে। তারপর বিস্ফোরণের সাথে সাথে ভবনটি কেঁপে ওঠে। এর পেছনে তেলআবিবের কিরিয়া এলাকার মার্গানিত টাওয়ারটি স্পষ্ট দেখা যায়, যা আইডিএফ সদর দপ্তরের ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই হামলা আবারও প্রকাশ করেছে যে, ইরানে রয়েছে আধুনিক ও সুসংগঠিত সামরিক ক্ষমতা, যা যে কোনো হুমকির জবাব দিতে সক্ষম। অপর দিকে, ইসরায়েলের পক্ষে এই হামলা ঠেকানো ক্রমেই দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিরসনে সৌদি যুবরাজকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ফোন

ইরানে ইসরায়েলের হামলার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে শুরু হওয়া উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্য। আজ শনিবার ডাউনিং স্ট্রিট জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে কথা বলেছেন। এই ফোনালাপে মধ্যপ্রাচ্যের সংকট নিয়ে আলোচনা করেছেন এই দুই নেতা। খবর আল জাজিরার প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র জানান, উভয় নেতা ‘গভীর উদ্বেগজনক পরিস্থিতি’ নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং উত্তেজনা প্রশমনের প্রয়োজনীয়তার ওপর একমত হয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাজ্য আগামী দিনে কূটনৈতিক সমাধানে মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে। এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো যখন ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলায় অঞ্চলজুড়ে নতুন করে সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রাতে আবারও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারে ইরান, আতঙ্কে ইসরায়েল

ইরানের সামরিক বাহিনী শনিবার রাতে আবারও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারে। ইসরায়েলি আর্মি রেডিও’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেহেরানের হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছে ইসরায়েল সেনাবাহিনী। খবর আল জাজিরা এতে বলা হয়েছে যে, আজ রাতে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারে ইরান। এই হামলার তীব্রতা শুক্রবার রাতে চালানো ইরানের প্রতিশোধমূলক আক্রমণগুলোর মতোই হতে পারে বলেও জানানো হয় প্রতিবেদনে। এর আগে শুক্রবার ভোরে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে দুই শতাধিক হামলা চালায় ইসরাইল। এতে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন কর্মকর্তাসহ ১২ জন পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন। এছাড়া ইরানজুড়ে হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এই হামলার জবাবে ইসরাইলে প্রতিশোধমূলক হামলা চালায় ইরান। এতে তিনজন ইসরাইলি নিহত হন। এছাড়া ইরানের হামলায় ইসরাইলের অন্তত সাত সেনা সদস্যের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর আগে হামলায় ইসরাইলের দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি জানায় ইরান। একজন নারী পাইলটকে আটক করার খবরও জানা যায়। তবে এই তথ্য অস্বীকার করে ইসরাইল।

হঠাৎ বিকট শব্দের পর সবকিছু অন্ধকার, ইসরায়েলি নারীর মুখে হামলার বর্ণনা

গত রাতে ইসরায়েল জুড়ে সাইরেন বেজে উঠলে পরিবারসহ বাসার বেসমেন্টে ছুটে যান ইফাত বেনহাইম। তিনি বলেন, ‘আমরা দরজা বন্ধ করে দিই, এবং হঠাৎই একটা বিকট শব্দ শুনতে পাই। ভেবেছিলাম, পুরো বাড়িটা হয়তো আমাদের উপর ভেঙে পড়বে। তারপর অন্ধকার।’ ইফাত জানান, এই ঘটনার পর বাইরে বেরিয়ে দেখতে পান আশেপাশের এলাকাজুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ। অনেকগুলো বাড়ির ছাদ ধসে পড়েছে, রাস্তায় কাঁচ পড়ে আছে এবং কমপক্ষে ৩০টি গাড়ি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, ভাঙা জানালা এবং দেয়ালে বিশাল ছিদ্র। তার দুই প্রতিবেশী নিহত হয়েছেন, নিয়মিত রাস্তায় দেখা হলে যাদেরকে সে হ্যালো বলতো। ‘এটি একটি ট্র্যাজেডি,’ তিনি বলেন। গত রাতের ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর একটি, তেল আবিবের ঠিক বাইরে অবস্থিত রিশন লেজিওন শহর। এখন ২৯ বছর ধরে বসবাস করা বাড়িটি থেকে তাদের জিনিসপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন ইফাত, তার স্বামী জিওন এবং কম বয়সী ছয়জন আত্মীয়। আর এটা ঠিক করার চেষ্টা করছেন যে, আজ রাতে তারা কোথায় থাকবেন। সূত্র: বিবিসি

ইরানের পাশে দাঁড়াল পরমাণু অস্ত্রধারী দেশ পাকিস্তান

ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে পাকিস্তান। একই সঙ্গে মুসলিম দেশগুলোর প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ শনিবার পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে দেওয়া বক্তব্যে বলেন, `আমরা ইরানের পাশে আছি এবং তাদের স্বার্থ রক্ষায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।‘ তিনি আরও বলেন, `ইসরায়েল শুধু ইরান নয়, ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনকেও টার্গেট করেছে। যদি মুসলিম রাষ্ট্রগুলো এখনই ঐক্যবদ্ধ না হয়, তাহলে একে একে সবাইকে একই পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।‘ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসিফ সব মুসলিম দেশকে অবিলম্বে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (OIC)-কে একটি জরুরি বৈঠক ডাকার অনুরোধ করেন, যাতে একটি যৌথ কৌশল নির্ধারণ করা যায়। তার ভাষায়, ইসলামি জাহানের এখন ঐক্যবদ্ধ প্রতিক্রিয়ার সময়। আলাদা আলাদা নিন্দা যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন সম্মিলিত প্রতিরোধ। পাকিস্তানের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক ডার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইরানের ওপর ইসরায়েলের এই আক্রমণ তাদের সার্বভৌমত্বের জঘন্য লঙ্ঘন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং ইরানের পাশে থাকছি। ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রায় ৭৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। উভয় দেশ দীর্ঘদিন ধরে সামরিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। সম্প্রতি সীমান্ত এলাকায় উভয় দেশের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত ঘনিষ্ঠতা আরও জোরদার হচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

৩টি যু’দ্ধবিমান ভূপাতিত ও ২ পাইলট আটকের দাবি ইরানের

আরও একটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিতসহ ইসরায়েলের ৩টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত ও দুই ফাইলটকে আটকের ঘোষণা দিয়েছে ইরানের সেনাবাহিনী। শনিবার (১৪ জুন) ইরানের সংবাদ মাধ্যম তেহরান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ইরানের পশ্চিমাঞ্চলের আকাশে ইসরায়েলি ওই যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের আরেকটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে ইরানের সেনাবাহিনী। ইরানের তৈরি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার ইসরায়েলি ওই যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই নিয়ে মোট ৩টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়েছে। ইরানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, পশ্চিম ইরানের আকাশে ইসরায়েলি ওই যুদ্ধবিমান অবৈধ অনুপ্রবেশ করে। পরে সৈন্যরা ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেন। ওই যুদ্ধবিমানের পাইলটকে জীবিত আটক করা হয়েছে। তেহরান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ এই যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার মাধ্যমে ইরান এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের অন্তত তিনটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে। বাকি দুটি বিমানের একটির পাইলট নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া অপর পাইলটকেও ইরানি বাহিনী আটক করেছে। প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ অন্তত ৮টি শহরে বড় ধরনের বিমান হামলা করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী (আইএএফ)। এতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৭৮ জন এবং আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৩০০ জন। এদিকে শুক্রবার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’ সেনা অভিযান শুরু করে ইরান। এতে ২ জন নিহতসহ আহত হয়েছেন ৬৩ জন। আহতদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

‘আয়রন ডোম’ চুরমার, ইসরায়েলি সদর দপ্তর গুঁড়িয়ে দিল ইরান

ইসরায়েলের আয়রন ডোম বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ব্যর্থ করে তেল আবিবে অবস্থিত প্রতিরক্ষা সদর দপ্তরে হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইরান। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইরানে দফায় দফায় ইসরায়েলি বিমান হামলার পর তেহরানের এই প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ শুরু হয়। ইসরাইলের সর্বাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নাম ‘আয়রন ডোম’। মূলত এটা এমন একধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, যা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগেই শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্রকে আকাশেই ধ্বংস করতে সক্ষম। বড় ক্ষেপণাস্ত্র তো বটেই, ক্ষুদ্র রকেটও ধ্বংস করে দেয় ইসরায়েলের আয়রন ডোম। ইহুদিদের কাছে তাদের এই আয়রন ডোম জাতীয় নিরাপত্তা আর গৌরবের প্রতীক। ইসরায়েলের সেই গর্বকে এবার চূর্ণ করে দিল ইরান। সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসের যাচাই করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, তেল আবিবের একেবারে কেন্দ্রস্থলে আঘাত হানে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র, যেখানে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরসহ বেশ কয়েকটি সামরিক স্থাপনা অবস্থিত। এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ১৯ সেকেন্ডের ওই ক্লিপে দেখা যায়, ইসরায়েলের আয়রন ডোম একটি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে ক্ষেপণাস্ত্রটি ওই আয়রন ডোম ভেঙে চোখের পলকে প্রতিরক্ষা সদর দপ্তরে আঘাত হানে। ক্লিপটি শুরু হয় বিকট শব্দে বেরিয়ে আসা প্রজেক্টাইল দিয়ে। তারপর আলোর ঝলক এবং আগুনের একটি গোলা বিকট শব্দে ভবনটিতে আঘাত করে।আয়রন ডোম চুরমার, ইসরায়েলি সদর দপ্তর গুঁড়িয়ে দিল ইরান। এর পেছনে তেল আবিবের কিরিয়া এলাকার মার্গানিট টাওয়ারটি দেখা যায়। যা আইডিএফ সদর দপ্তরের কাছে শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। শুক্রবার সকালে ইসরাইল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা এবং সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ভয়াবহ হামলা চালায়। এতে ইরানের বেশ কয়েকজন সামরিক শীর্ষ কর্মকর্তা এবং পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত হন। এরপর ইসরাইলে প্রতিশোধ নিতে শুরু করে তেহরান। গতকাল শুক্রবার সকালে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা এবং সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ভয়াবহ হামলা চালায়। এতে ইরানের বেশ কয়েকজন সামরিক শীর্ষ কর্মকর্তা এবং পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত হন। এরপর ইসরায়েলে পাল্টা হামলা শুরু করে তেহরান।

গোপনে ইসরায়েলকে ভয়ংকর অস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র গোপনে ইসরায়েলকে ৩০০টি ভয়ংকর ‘হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র’ দিয়েছে। এই অস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে ইরানে হামলার ঠিক আগে। এছাড়া ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সহায়তা করেছে বলেও জানিয়েছে মার্কিন কর্মকর্তারা। খবর দ্য জেরুজালেম পোস্টের। খবরে বলা হয়, মার্কিন কংগ্রেস ফেব্রুয়ারিতে যে ৭.৪ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তি অনুমোদন করেছে, এই ক্ষেপণাস্ত্র সেই প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত ছিল। তাই এই অস্ত্র সরবরাহের জন্য নতুন কোনো অনুমতির প্রয়োজন হয়নি। মঙ্গলবার (১০ জুন) ইসরায়েলে এই ৩০০টি ‘হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র’ পাঠানো হয়। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক একটি সংবাদমাধ্যমকে মার্কিন দুই কর্মকর্তা জানান, ইসরায়েল কবে ইরানে হামলা চালাবে, তা আগেই জানত যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার ভোরে ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েই হামলা চালায় ইসরায়েল। মার্কিন কর্মকর্তারা আরও বলেন, ইরানের পাল্টা হামলার সময় যুক্তরাষ্ট্রের মাটিভিত্তিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইসরায়েলকে সাহায্য করে। ইরান তখন ইসরায়েলে ১৫০টির বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। ‘হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র’ ‘হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র’ লক্ষ্যভেদে খুবই কার্যকর। এটি সাধারণত ব্যক্তিকে নিশানা করা বা কোনো নির্দিষ্ট ঘাঁটি ধ্বংসে ব্যবহৃত হয়। একজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানান, এই ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের অনেক কাজে লেগেছে। ইসরায়েলি বিমান বাহিনী ইরানের অভ্যন্তরে ১০০টির বেশি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে। তারা ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের, পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের এবং নিয়ন্ত্রণ ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৭৮ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে ৩২০ জনের বেশি। অপরদিকে, ইরানের পাল্টা হামলায় তেলআবিবে এক ইসরায়েলি নারী নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ৪০ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা ইরানের ছোড়া ১৫০টির বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ১০০টি ড্রোনের বেশিরভাগই ভূপাতিত করেছে। তারা আরও জানায়, এই প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সরাসরি সহায়তা করেছে।

নেতানিয়াহু এখন কোথায়?

ইসরায়েলের হামলার প্রতিশোধস্বরূপ ইরান একের পর এক পাল্টা বিমান হামলা শুরু করেছে। এই সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার কারণে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গোপন স্থানে চলে গেছেন। শুক্রবার (১৩ জুন) স্থানীয় সময় মধ্যরাতে ইরানে যে হামলা চালায় ইসরায়েল, তা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। রাজধানী তেহরানসহ দেশটির গুরুত্বপূর্ণ অনেক স্থানে বিমান হামলা হয়েছে- এর মধ্যেই ইরানের পালটা হামলায় নিরাপত্তার স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ইরনা। ইরনার প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে যে, হামলা শুরু হওয়ার সাথে সাথে বিশেষ নিরাপত্তার অংশ হিসেবে নেতানিয়াহুকে অজ্ঞাত গন্তব্যে স্থানান্তরিত করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে গ্রিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমও প্রকাশ করেছে যে, নেতানিয়াহুর উড়োজাহাজকে ইসরায়েল ছাড়তে দেখা গেছে। সেই মুহূর্তে দুটি জঙ্গিবিমান তাকে পাহারা দিচ্ছিল- যা তার নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে মোতায়েন ছিল। ইসরায়েলের টেলিভিশন চ্যানেল ১২ জানিয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানটি গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে অবতরণ করেছে। প্রসঙ্গত, শুক্রবার ভোররাতে যে হামলা হয়েছে ইরানে, তা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার মাত্রা অনেক বাড়িয়েছে। হামলায় ইরানের ২০ ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন- যাদের মধ্যে রয়েছে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি, ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসিতে) প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামিসহ খাতাম আল-অনিবিয়া ঘাঁটির কমান্ডার মেজর জেনারেল গোলাম আলী রশিদ। ইরানে এই হামলার পর সেনাবাহিনী হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, এর উপযুক্ত জবাব দেওয়ার, যা মধ্যপ্রাচ্যে আরও অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে পারে।