
ঢাকায় দেশের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচী ও ছায়ানটের ভবনে নৃশংস ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিবাদে লন্ডনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে প্রবাসী সাংস্কৃতিক কর্মীরা একাত্মতা প্রকাশ করেন।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় শুরু হওয়া সমাবেশে প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে শতাধিক মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন যুক্তরাজ্যপ্রবাসী সাংস্কৃতিক কর্মী ঊর্মি মাজহার ও গায়ক-চিকিৎসক ইমতিয়াজ আহমেদ। শিশু-কিশোরদের কণ্ঠে ‘ফিরে চল মাটির টানে’ ও ‘মোরা ঝঞ্ঝার মত উদ্দাম’ গান পরিবেশনার মাধ্যমে কর্মসূচির সূচনা হয়।

এরপর গানে-সুরে উত্তাল হয়ে ওঠে প্রতিবাদ সমাবেশ। ‘বাঁধ ভেঙে দাও’, ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু’, ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’, ‘আমার প্রতিবাদের ভাষা’সহ আরও কয়েকটি গণসংগীতে অংশ নেন শিল্পীরা। দর্শকরাও শিল্পীদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে প্রতিবাদে শামিল হন।
ছায়ানটে হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘দেশের অন্যতম বৃহৎ সঙ্গীত বিদ্যায়তন ছায়ানট, উদীচী এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের উপর হামলা আমাদের জাতিসত্তার, আমাদের মানবিক চেতনার উপর আঘাত বলেই আমরা মনে করছি।’
বিচারের দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে এই ঘটনার বিচার প্রার্থনা করছি। অন্যথায় আমাদের প্রতিবাদ, প্রতিরোধ জারি থাকবে।’
ঊর্মি মাজহার বলেন, ‘গত এক বছরের বেশি সময় ধরে আমরা লক্ষ্য করছি বাউল, লোকসঙ্গীতসহ অন্যান্য শিল্পীদের উপর বিভিন্ন সময়ে ক্রমাগত হামলা হয়েছে। কিন্তু এর মাধ্যমে আমাদের কণ্ঠ রোধ করা যাবে না। এক কণ্ঠ হাজার কণ্ঠ হয়ে প্রতিবাদ করছে। সরকারকে বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় সচেষ্ট হতে হবে।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্যে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সক্রিয় লুসি রহমান, হিমাংশু গোস্বামী, হাবিব রহমান, সৈয়দ নাহাস পাশা, গোলাম মোস্তফা, নুরুল ইসলাম, গোপাল দাস, মৃত্তিকা সংহিতা অথই, শামীম চৌধুরী, হামিদ মোহাম্মদসহ অনেকে।
এ কর্মসূচি থেকে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত সাংস্কৃতিক কর্মীরা ভবিষ্যতেও সব সাংস্কৃতিক আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশের সমাপ্তি ঘটে।