কমল স্বর্ণের দাম

দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে এক হাজার ৪৮১ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ৩৭ হাজার ২২৭ টাকা নির্ধারণ করেছে সংগঠনটি। রোববার (১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। সোমবার (২ ডিসেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিউর গোল্ড) মূল্য কমেছে। ফলে, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।’নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে এক লাখ ৩৭ হাজার ২২৭ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৩০ হাজার ৯৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ১২ হাজার ২৮৯ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ১৩৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজুস জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত পাঁচ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ছয় শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে, গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

পাচার হওয়া টাকা ফেরাতে এফবিআইসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে বৈঠক করবে সরকার

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনসহ (এফবিআই) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে অন্তর্বর্তী সরকার বৈঠক করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বিগত সরকারের আমলে চোখের সামনে লুটপাট হলেও অনেকেই সেগুলোর বৈধতা দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। রোববার (১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন প্রেস সচিব। এতে উপস্থিত ছিলেন উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর। এ দিন, দুপরে আর্থিক খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনটি প্রকাশের বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি সোমবার (২ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।’ প্রতিবেদনটি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের উন্নয়নের গল্পের ময়নাতদন্ত বলে উল্লেখ করেন তিনি। শফিকুল আলম বলেন, ‘ময়নাতদন্তে ভয়াবহ চিত্র বেরিয়ে এসেছে। আমাদের চোখের সামনে দিয়ে লুটপাট চলেছে। লুটপাটতন্ত্র জারি হয়েছিল। দুর্ভাগ্যবশত আমাদের অনেকেই এটার বৈধতাও দিয়েছেন। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে।’ শ্বেতপত্রে আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতিচিত্রে মুহাম্মদ ইউনূস আতঙ্কিত হয়েছেন বলে জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এটা রক্ত হিম করার মত অবস্থা। বাংলাদেশের জনগণের ট্যাক্সের টাকা এটা। দেশের বহু গরিব মানুষের টাকা এরা লুটপাট করেছে।’ লুটপাটকারী খুব বেশি নয় জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘সেখান রাজনৈতিক ব্যক্তি, আমলা, অলিগার্ক কিছু ব্যবসায়ী ছিলেন। তাদের যোগসাজশে এ টাকা পাচার হয়েছে।’ যার বৈধতা বহু সাংবাদিক দিয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন শফিকুল আলম। পাচার করা টাকা ফেরত আনা সরকারের অন্যতম প্রতিশ্রুতি জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘টাকা যেভাবে হোক ফেরত আনার চেষ্টা করব। সেই অনুযায়ী আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে অনেকগুলো কাজ শুরু হয়ে যাচ্ছে। এফবিআইসহ আন্তর্জাতিক যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করে, তাদের সঙ্গে বহু ধরনের বৈঠক হচ্ছে, কথা হবে। আমাদের পুরো ফোকাস থাকবে টাকাটা কীভাবে ফেরত আনা যায়।’ তবে, টাকাতো চুরি করে নিয়ে গেছে, সেটা আগে সন্ধান করতে হবে বলেও জানান তিনি। শফিকুল আলম বলেন, ‘যারা চুরি হয়ে যাওয়া টাকা ফেরত আনা নিয়ে কাজ করে তাদের সঙ্গে কথা হবে। টাকা নেওয়া সহজ। কিন্তু, ফেরত আনার বিষয়ে আইনি দিক দেখতে হয়, কোথায় টাকা চলে গেছে তা নিশ্চিত হতে হয়। এ জন্য আন্তর্জাতিক বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান আছে। তাদের সঙ্গে বৈঠক হচ্ছে, পরামর্শ নিচ্ছি। কীভাবে টাকা ফেরত আনা যায়।’ তিনি বলেন, ‘টাকা ফেরত আনা কষ্টসাধ্য কাজ। এটা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের একটা।’ আমার বাসার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক, আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার এমন বক্তব্য উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ‘তিনি অনেক বীরত্বের সঙ্গে বলেছিলেন তার পিয়নও ৪০০ কোটি টাকা বানিয়েছে।’ শ্বেতপত্রে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রতিটি খাতের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে বলেও জানান শফিকুল আলম। শ্বেতপত্রে আরও কিছু নতুন তথ্য যোগ হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অফিসিয়াল তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। না হলে সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানুষের টাকা কীভাবে লুটপাট হয়েছে, প্রতিষ্ঠানগুলোকে কীভাবে ফোকলা করে দেওয়া হয়েছে, তার পুরো চিত্রটা পাওয়া যাবে।’ দুর্নীতি দমন কমিশন খুব শিগগিরই মনোনয়ন পাবে বলে জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, ‘কমিশনের কমিশনারদের বাছাই করা হবে। কারা কারা চুরিতে জড়িত ছিলেন তা বের করতে তারা খুব দ্রুতই কাজ শুরু করবেন।’ মেগা প্রকল্পে বড় দুর্নীতি হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত টানেলের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘পুরো প্রকল্পটাই করা হয়েছে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর (সাবেক ভূমিমন্ত্রী) সংসদীয় এলাকায় যাওয়ার জন্য। সেখানে উনি সাড়ে ২০০ কোটি টাকা দিয়ে প্রাসাদ করে রেখেছেন। কিন্তু যাবেটা কে? এখন মেনটেন্যান্স খরচ ওঠানো যাচ্ছে না। অথচ এ চুরিটা আমাদের চোখের সামনে হয়েছে। এটা নিয়ে গণমাধ্যমে বহু লেখালেখি হয়েছে। বলতে গিয়ে মুখে ফেনা উঠিয়ে ফেলেছেন। তখন কেউ যদি ভাল অর্থনীতিবিদ বা ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা বললে কর্ণফুলী টানেলের অর্থনৈতিক ভ্যালু জানতে পারত।’ দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতায় আনতে সরকার ধারাবাহিক বৈঠক করছে বলে জানান প্রেস সচিব। সাড়ে ২২ হাজার টাকা ছাপিয়ে ব্যাংককে সহায়তা দেওয়ায় মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়বে কিনা- এমন প্রশ্নে শফিকুল আলম বলেন, ‘এতে বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়বে না। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কয়েক মাস আগেও ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়েছিল। ওই টাকা ছাপানোর মূল্য উদ্দেশ্য ছিল এস আলমকে টাকা পাচারে সাহায্য করা।’ সরকার কিছু ব্যাংককে সহায়তার জন্য টাকা ছাপিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ টাকাটা চৌবাচ্চার পানির মত। এক দিক দিয়ে আসছে, আরেক দিক দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। ফলে, বাজারে যে টাকা আছে, তা সমান থাকছে। এতে অতিরিক্ত টাকার জোগান হবে না। বিধি মেনেই হয়েছে। এতে মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়বে না।’

অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বরে কম এসেছে রেমিট্যান্স

নভেম্বর মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ অক্টোবরের তুলনায় কমেছে। সদ্যবিদায়ী নভেম্বর মাসে দেশে ২১৯ কোটি ৯৫ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা প্রতিদিন গড়ে ৭ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, অক্টোবরে দেশে এসেছিল ২৩৯ কোটি ৫১ লাখ ডলার, তাই নভেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে। নভেম্বর মাসে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো থেকে এসেছে ৮২ কোটি ৪২ লাখ ১০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো থেকে ১৪ কোটি ৫৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকে ১২২ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার, এবং বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলো থেকে এসেছে ৬২ লাখ ৮০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ২৪ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ৪৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার, ১৭ থেকে ২৩ নভেম্বরের মধ্যে ৪৭ কোটি ১২ লাখ ২০ হাজার ডলার, ১০ থেকে ১৬ নভেম্বর ৬০ কোটি ১ লাখ ৪০ হাজার ডলার, ৩ থেকে ৯ নভেম্বর ৬১ কোটি ২৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং ১ থেকে ৩ নভেম্বর ৪ কোটি ২৪ লাখ ১০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এর আগে, জুন মাসে ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ ডলার রেমিট্যান্স আসার পর জুলাইয়ে প্রবাসী আয় ছিল সবচেয়ে কম, প্রায় ১৯১ কোটি ডলার। তবে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। আগস্টে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার ডলার এবং সেপ্টেম্বর মাসে সর্বোচ্চ ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ৮০ হাজার ডলার।

সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স গ্রহীতার স্বীকৃতি পেল ইসলামী ব্যাংক

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আয়োজিত বাংলাদেশ রেমিট্যান্স ফেয়ার এ ঘোষিত “টপ রেমিট্যান্স রিসিভার ব্যাংক অ্যাওয়ার্ড ২০২৪” পুরস্কার পেয়েছে। এ উপলক্ষে রবিবার (১ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের নিকট ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট হস্তান্তর করেন বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রায়হানুল ইসলাম চৌধুরী। উল্লেখ্য বাংলাদেশ-আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, মুক্ত ধারা নিউইয়র্ক এবং ইউএস-বাংলা বিজনেস লিংকের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত রেমিট্যান্স ফেয়ারে ইসলামী ব্যাংকের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় সংগ্রহের মাধ্যমে বাংলাদেশে ক্রমাগত রিজার্ভ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অসামান্য অবদান রাখায় এ সম্মাননা ঘোষণা করে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোঃ ওমর ফারুক খান, মোঃ আলতাফ হুসাইন, মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার, ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মোঃ রফিকুল ইসলাম, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এ কে এম মাহবুব মোরশেদ, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মাসুদ ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির বাংলাদেশ প্রতিনিধি মধুসূদন সাহা, বাংলাদেশ ইমিগ্র্যান্ট ডে অ্যান্ড ট্রেড ফেয়ারের বাংলাদেশ সমন্বয়ক রীতেশ সাহাসহ ইসলামী ব্যাংকের নির্বাহী ও কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন। ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ পুরস্কার প্রদানকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই স্বীকৃতি প্রবাসী রেমিট্যান্স-যোদ্ধাদের। তিনি ইসলামী ব্যাংকের উপর আস্থা রাখার জন্য প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি আরো বলেন, দেশের প্রবাসী আয়ের এক তৃতীয়াংশ সংগ্রহ করে ইসলামী ব্যাংক এবং ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত রাখার আশা ব্যক্ত করেন।

ইসলামী ব্যাংকের ৫শ কোটি টাকার বন্ড অনুমোদন

শেয়ারবাজারে ব্যাংকিং খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইসলামী ব্যাংক পিএলসির ৫০০ কোটি টাকার বন্ড ইস্যুর অনুমোদন দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। রোববার (০১ ডিসেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, ইসলামী ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকার বন্ডটি হবে পঞ্চম মুদারাবা রিডিমেবল নন-কনভার্টেবল সাবঅর্ডিনেটেড বন্ড। ব্যাংকটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টায়ার-২ মূলধন বৃদ্ধি এবং ব্যাংকের মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী করতেই এই বন্ড ইস্যু করা হবে। এতে ১০ হাজার ইউনিট থাকবে, যার প্রতিটির মূল্য পাঁচ লাখ টাকা। ২০২৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ৫০০ কোটি টাকার বন্ড ইস্যুর পূর্ববর্তী ঘোষণার পর এই অনুমোদন দেওয়া হলো।

শিল্প উদ্যোক্তাদের মূলধনী পণ্যের আমদানিতে ৩ বছর মেয়াদী বৈদেশিক ঋণ

শিল্প উদ্যোক্তাদের মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য বায়ার্স এবং সাপ্লাইয়ার্স ক্রেডিটের আওতায় এক বছরের পরিবর্তে এখন থেকে তিন বছর মেয়াদি বৈদেশিক ঋণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর যেসব গ্রাহক মূলধনী যন্ত্রপাতি আনার জন্য ইতোমধ্যে মধ্যমেয়াদী এবং স্বলাপমেয়াদী ঋণের চুক্তি করেছে তাদের ঋণের মেয়াদ বৃদ্ধি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ঋণের মেয়াদ বাড়লেও সুদের হার না বাড়াতে বলা হয়েছে। এ বিষয় রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য বাড়তি উৎসাহ যোগাতে জারি করা এই নির্দেশনা কেবলমাত্র এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন, প্রাইভেট এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন, ইকোনমকি জোন, হাই-টেক পার্ক এবং সরকার কর্তৃক ঘোষিত বিশেষায়াতি জোনের অভ্যন্তরে কারখানান জন্য প্রযোজ্য হবে। আর সুবিধা প্রাপ্তির জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বস্ত্র বভিগের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সভাপতিত্বে বিডার ফরেন ঋণ/সাপ্লাইয়ার্স ক্রেডিট সংক্রান্ত স্ক্রুটিনি কমিটির ১৮২ তম সভায় তিন বছর মেয়াদী ঋণের সিদ্ধান্ত হয়। মূলত মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য বাড়তি উৎসাহ যোগাতে দেশের সকল অনুমোদিত ডিলার (এডি) ব্যাংকগুলোকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গত বুধবার এক প্রজ্ঞাপনে কেন্দ্রিয় ব্যাংকের পক্ষ্য থেকে জানানো হয়, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে যেসব আমদানি–নির্ভর শিল্প খাত ক্ষতির মুখে পড়েছে, সেই ব্যবসায়ীরা ঋণ পরিশোধে আট বছর পর্যন্ত সময় দিয়েছে। এসব ঋণ আলাদাভাবে হিসাব করে এক বছরের বিরতিসহ প্রতি মাসে বা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে পরিশোধ করা যাবে। কোভিড-১৯-এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দাসহ নানা কারণে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার মূল্যমান উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় স্থানীয় উৎপাদনমুখী শিল্পগুলো কাঁচামাল আমদানিকালে বিনিময় হারজনিত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন সক্ষমতা হ্রাসসহ ফোর্সড ঋণ সৃষ্টি হচ্ছে এবং চলতি মূলধনের ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন সুবিধা দেওয়া হয়।

প্রধান উপদেষ্টার কাছে ‘অর্থনীতির শ্বেতপত্র’ কমিটির প্রতিবেদন জমা

দেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত শ্বেতপত্র তৈরির জন্য গঠিত কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। রোববার দুপুরে (১ ডিসেম্বর) বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং অর্থনীতিতে অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদনটি জমা দেয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ‍্য জানিয়েছে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হবে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রতিবেদনের ফলাফল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে তুলে ধরবেন। ঢাকার আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ প্ল্যানিং কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষের একনেক রুমে সোমবার (২ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।জানা গেছে, ২৪টি অধ্যায়ে সন্নিবেশিত হয়েছে দুর্নীতির বর্ণনা। অনিয়মের ফিরিস্তি তুলে ধরার পাশাপাশি এতে আছে প্রতিবেদনের ভূমিকা, উপসংহার ও অন্যান্য সংযুক্তি। প্রসঙ্গত, গেল ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অর্থনীতির ক্ষত ও পরিস্থিতি পরিমাপ করে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।

মতিউল হাসান মার্কেন্টাইল ব্যাংকের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক

মতিউল হাসান মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসির নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। এর আগে তিনি একই ব্যাংকে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ রিস্ক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি আইএফআইসি ব্যাংকের ওভারসিজ অপারেশনসের পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ পদে এবং নেপাল বাংলাদেশ ব্যাংকের (জয়েন্ট ভেঞ্চার অব আইএফআইসি) ডিএমডি ছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি মার্কেন্টাইল ব্যাংকে ডিএমডি পদে যোগ দেন। কর্মজীবনে তিনি দেশে ও বিদেশে ব্যাংকিং বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নেন। তিনি ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ থেকে ব্যাংকিং ডিপ্লোমা অর্জন করেন এবং ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স পাকিস্তানের একজন অ্যাসোসিয়েটস। মতিউল হাসান ১৯৮৪ সালে আইএফআইসি ব্যাংকে প্রবেশনারি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কর্মক্ষেত্রে তিনি ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা, হেড অফিস ও লোকাল অফিস মতিঝিল শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন।

এবার সূর্যমুখী ও ক্যানোলা তেলের শুল্ক-কর কমানোর সুপারিশ

সয়াবিন ও পাম তেলে শুল্ক-কর কমানোর পর এবার সান ফ্লাওয়ার ও ক্যানোলা তেল আমদানিতেও শুল্ক-কর কমানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)। সম্প্রতি সান ফ্লাওয়ার ও ক্যানোলা তেল শুল্ক-কর কমানোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে। যার অনুলিপি অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের কার্যালয়েও দেয়া হয়েছে।চিঠিতে ট্যারিফ কমিশন জানায়, দেশের বাজারে ভোজ্যতেল হিসেবে বেশি চাহিদা রয়েছে সয়াবিন ও পাম তেলের। অথচ সান ফ্লাওয়ার (সূর্যমুখী) ও ক্যানোলা তেল উত্তম বিকল্প হতে পারে। বিশ্ব বাজারে এ দুই পণ্যের দাম সয়াবিন ও পামের কাছাকাছিই। উচ্চ শুল্ক আরোপ করে পণ্য দুইটি আমদানি নিরুৎসাহিত করে রাখা হয়েছে।বাংলাদেশে অপরিশোধিত ভোজ্যতেল আমদানিতে আরোপিত শুল্ক-কর বিবেচনায় সানফ্লাওয়ার এবং ক্যানোলা তেলকে বিলাসী পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে উল্লেখ করে বিটিটিসি জানায়, যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রাসঙ্গিক নয়। সমজাতীয় তেলে আমদানি শুল্ক-করে পার্থক্য দূর করলে এক দিকে আমদানির উৎস সম্প্রসারিত হবে; অন্য দিকে ভোক্তার পছন্দে বৈচিত্র্য সৃষ্টি হবে।এ পরিস্থিতিতে ভোজ্যতেল হিসেবে ব্যবহারের জন্য অপরিশোধিত সানফ্লাওয়ার তেল ও অপরিশোধিত বা পরিশোধিত ক্যানোলা তেল আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক প্রত্যাহার করে অপরিশোধিত বা পরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের মত ১৫ শতাংশ ভ্যাট (স্বাভাবিক সময়ে) এবং একই কারণে রমজানকে সামনে রেখে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ শতাংশ ভ্যাট ও আরোপ করা যেতে পারে। তবে, পরিশোধিত সান ফ্লাওয়ার ও ক্যানোলা তেলের শুল্ক-কর প্রস্তাব করা হয়েছে ২০ শতাংশ, যার মধ্যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও পাঁচ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি)।

সরাসরি গ্রাহকের কাছে বিক্রির জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে: জ্বালানি উপদেষ্টা

বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তার সবটা সরকারের কাছে বিক্রির মডেল বহু পুরোনো বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেছেন, ‘বেসরকারি খাতে নতুন করে ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার (আইপিপি) বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হবে না। মার্চেন্ট বিদ্যুৎ নীতি করা হচ্ছে। এতে সরাসরি গ্রাহকের কাছে বিক্রির জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে।’ ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত সেমিনারে এ সব কথা বলেন ফাওজুল কবির খান। ‘জ্বালানির দ্রুত রূপান্তর: স্থানীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা’ শীর্ষক এ সেমিনার শনিবার (৩০ নভেম্বর) ঢাকার ইআরএফের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে বিদ্যুৎ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘হুইলিং চার্জ দিয়ে সরকারি সংস্থার বিতরণ লাইন ব্যবহার করতে পারবে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র।’ উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশের সব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে চুক্তি অনুসারে নির্ধারিত দামে সব বিদ্যুৎ কিনে নেয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। বেশি দামে কিনলেও তারা সরকার নির্ধারিত দামে বিদ্যুৎ বিক্রি করে বিতরণ সংস্থার কাছে। এতে প্রতি বছর পিডিবিকে লোকসান গুনতে হয়, যা ভর্তুকি হিসেবে দেয় সরকার। সেমিনারে বিদ্যুৎ উপদেষ্টা বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতে বছরে ভর্তুকি ৩২ হাজার কোটি টাকা। জ্বালানিতে ভর্তুকি ২০ হাজার কোটি টাকা। এমন ভর্তুকিনির্ভর বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাত চলবে না। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘গেল আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতি করার জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন করেছিল। এটি অসাংবিধানিক, তাই ইতিমধ্যে এটি বাতিল করা হয়েছে।’ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কোন বিকল্প নেই বলে জানান ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের বাধ্যবাধকতা আছে সরকারের। এর জন্য জমির কোন সমস্যা নেই। সরকারি জমি অব্যবহৃত পড়ে আছে। রেলওয়ের জমি আছে, সড়কের জমি আছে। হাজার হাজার একর জমি ইকোনমিক জোনের নামে অধিগ্রহণ করা হয়েছে। সরকারি এসব জমি নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ব্যবহার করা হবে।’ পূর্বের সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রসারের কথা বললেও আন্তরিকভাবে তা চায়নি বলে মন্তব্য করেন বিদ্যুৎ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘সরকার চাইলে এটি হত। নবায়নযোগ্য জ্বালানির অর্থায়নে সব সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে।’ শুল্ক কমানোর পরিবর্তে উদ্যোক্তাদের আমদানি এড়িয়ে দেশে সৌর বিদ্যুৎ যন্ত্রপাতি উৎপাদনের পরামর্শ দেন তিনি। দেশে জ্বালানির প্রাথমিক চাহিদা পূরণ করাই বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘দিনে গ্যাসের চাহিদা ৪০০ কোটি ঘনফুট। সরবরাহ করা হয় প্রায় ৩০০ কোটি ঘনফুট। ঘাটতি ১০০ কোটি ঘনফুট, যা দিন দিন আরও বাড়ছে। আমদানি বেশি বাড়ানো যাবে না। তাই, কূপ খনন করে দেশে উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। জ্বালানির অভাবে হাজার হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র পড়ে আছে। বিদ্যুৎ খাতে গ্যাসের ব্যবহার কমাতে পারলে শিল্প খাতে সরবরাহ বাড়বে।’ ব্যাংকের ঋণ দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘সম্পদ দেখে নয়, ব্যালান্স শিট দেখে ঋণ দেওয়ায় বেশি উৎসাহী ব্যাংক। খেলাপি ঋণের বেশির ভাগই ব্যালান্স শিটনির্ভর, যা আসলে সবই ফাঁকা, শুধু কিছু সংখ্যানির্ভর। বেক্সিমকো ও এস আলম ব্যালান্স শিট দেখিয়ে ঋণ নিয়েছে, এখন বেতন দিতে পারছে না। খেলাপি ঋণ এখন তিনি লাখ কোটি টাকা।’ সেমিনারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে অর্থায়ন এখনো শুরুর দিকে। ব্যাংকগুলো স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগে ঋণ দিতে উৎসাহী। তাই, নবায়নযোগ্য জ্বালানির মত দীর্ঘমেয়াদি খাতে ঋণের ঝুঁকি নিতে চায় না। ব্যাংকগুলোকে নতুন ধারার অর্থায়নে উৎসাহী করতে হবে। তবে, বিদেশি বিনিয়োগ না এলে জ্বালানি রূপান্তরে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ‘গেম চেঞ্জার’ হবে না।’ সিটি ব্যাংকের চিফ ইকোনমিস্ট ও কান্ট্রি বিজনেস ম্যানেজার মো. আশানুর রহমান বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতে দেশি মোট বিনিয়োগের ১৫ শতাংশ সিটি ব্যাংকের। তারা সম্প্রতি সৌর ও বায়ুচালিত দুইটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ করেছেন। উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ চাহিদা নিয়ে ব্যাংকে আসতে হবে। এ খাতের যন্ত্রপাতি আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্কের কারণে বিনিয়োগ লাভজনক মনে করে না অনেকে।’ ইআরএফ, সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড পার্টিসিপেটরি রিসার্চ (সিইপিআর), কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (ক্লিন) ও বিডব্লিউজিইডি যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করেছে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিইপিআরের চেয়ারপারসন গৌরাঙ্গ নন্দী। তিনি সহজে অর্থায়নের জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠনের প্রস্তাব করেন। ইআরএফের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মৃধার সভাপতিত্বে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সেমিনার সঞ্চালনা করেন।

ই-কমার্স খাতে নতুন মাইলফলক গড়ে শেষ হল দারাজ ১১.১১ ক্যাম্পেইন

দেশের বৃহত্তম অনলাইন মার্কেটপ্লেস এবং দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম দারাজ নতুন মাইলফলক গড়ে সফলভাবে শেষ করেছে বছরের সবচেয়ে বড় অনলাইন শপিং উৎসব দারাজ ১১.১১। ১১ নভেম্বর মধ্যরাতে শুরু হয়ে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত চলা এই ক্যাম্পেইনে ভোক্তাদের জন্য ছিল ৫০ কোটি টাকার ভাউচার, ফ্রি ডেলিভারি সুবিধা এবং ফ্ল্যাশ সেলে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়ের মতো আকর্ষণীয় অফার। ক্রেতাদের পছন্দের পণ্য ও কেনাকাটার ধারাএবারের ১১.১১ ক্যাম্পেইনে পুরুষ ও নারীদের এক্সেসরিজ, অডিও ডিভাইস, মোবাইল এক্সেসরিজ, স্কিনকেয়ার এবং বাথ অ্যান্ড বডি পণ্যগুলো শীর্ষ বিক্রিত পণ্যের তালিকায় ছিল। বিশেষ করে, ডিটারজেন্ট, ফোন কাভার, স্যানিটারি ন্যাপকিন, বডি ওয়াশ এবং ক্যাপ ও মোজা ছিল সবচেয়ে বেশি চাহিদাসম্পন্ন পণ্য। ফ্যাশন, ফার্নিচার ও ডেকর, গ্রোসারি, হেলথ অ্যান্ড বিউটি এবং হোম অ্যাপ্লায়েন্স ক্যাটাগরিগুলোর বিক্রি গত বছরের তুলনায় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিসংখ্যান ইঙ্গিত দেয় যে, ক্রেতারা এখন দারাজের প্ল্যাটফর্মে শুধুমাত্র দৈনন্দিন পণ্য নয়, বরং জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন ধরনের পণ্য কিনছেন। জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহও ছিল লক্ষণীয়। লোটো, প্যারাস্যুট, টেকনো, হায়ার এবং ডেটল ছিল ক্যাম্পেইনের শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই সফলতা দারাজের মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ এবং ক্রেতাদের আস্থা অর্জনের ধারাবাহিকতার প্রতিফলন। শহরের বাইরে ই-কমার্সের প্রসারএবারের ক্যাম্পেইনে অর্ধেকের বেশি অর্ডার এসেছে মেট্রোপলিটন শহরের বাইরের অঞ্চল থেকে। দারাজের এই সফলতা ই-কমার্সকে গ্রামীণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে সহজলভ্য করার প্রচেষ্টার একটি বড় উদাহরণ। অন্যদিকে, ডিজিটাল পেমেন্টের জনপ্রিয়তাও ছিল লক্ষণীয়। ক্যাম্পেইনের মোট লেনদেনের এক-তৃতীয়াংশই মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এবং ব্যাংক কার্ডের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। এটি ক্রেতাদের মধ্যে ক্যাশলেস পেমেন্ট পদ্ধতির প্রতি আস্থা বৃদ্ধির ইঙ্গিত। দ্রুততম সময়ের মধ্যে পণ্যের ডেলিভারিক্যাম্পেইনের সময় দারাজের লজিস্টিকস টিম ডেলিভারির গতি ও কার্যকারিতা বাড়াতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। ডেলিভারি রুট উন্নত করা, লাস্ট-মাইল কানেকশন শক্তিশালী করা এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত এবার ১১.১১ ক্যাম্পেইনে চট্টগ্রাম থেকে দিনাজপুর পর্যন্ত ৫৮২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দেশের দীর্ঘতম ডেলিভারি সম্পন্ন হয়। দারাজ বাংলাদেশের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার এ এইচ এম হাসিনুল কুদ্দুস রুশো বলেন, ‘১১.১১ ক্যাম্পেইন আবারও দেখিয়েছে কীভাবে ই-কমার্স আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছে। ক্রেতা, বিক্রেতা এবং ব্র্যান্ডগুলো আমাদের সঙ্গে একসঙ্গে এই ইভেন্টকে সফল করতে কাজ করেছে। দারাজ গর্বিত যে আমরা এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য এবং আনন্দ যোগ করতে পেরেছি।’ ১১.১১ ক্যাম্পেইনের এই সাফল্যের মধ্য দিয়ে দারাজ স্থানীয় ব্যবসা ও উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আরও দৃঢ় সংযোগ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দেশের প্রতিটি কোণে ই-কমার্সকে আরও সহজলভ্য ও উপভোগ্য করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দারাজ।

অনিয়ম-দুর্নীতি ২-৪ মাসে স্বাভাবিক করা সম্ভব নয় : অর্থ উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আগের সরকারের রেখে যাওয়া অনিয়ম-দুর্নীতি ২-৪ মাসে স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়। তবে ভবিষ্যতে কেউ আর টাকা পাচার করতে পারবে না। শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত এক বাণিজ্য সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ক্ষয় হয়ে যেতে শুরু করা দেশের অর্থনীতিতে কিছুটা স্থিতিশীলতা আসতে শুরু করেছে। একইসঙ্গে বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও। এ ক্ষেত্রে বিদেশি সহযোগী সংস্থাগুলো খুবই ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে। এ সময় বিগত সরকারের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়েও কথা বলেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন, ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ লিমিটেডের (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ রহমান, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) সভাপতি জাভেদ আখতারসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোতে লেজুড়বৃত্তি রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ

ব্যবসার পরিবেশ নিশ্চিত আর ব্যবসায়ীদের স্বার্থ দেখার কথা থাকলেও গেলো দেড় দশকে কেবল সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশই ছিলো শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই ও বিজিএমইএ নেতাদের কাজ। যেখানে এসব নেতাও নির্বাচন করা হতো প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক প্রভাবে। ফলে একরকম খাতাকলমের সংগঠন হয়ে পড়ে ব্যবসায়ীদের এসব মোর্চা। ৫ আগস্টের পর এই খাতেও শুরু হয়েছে সংস্কার কার্যক্রম। গেলো বছরের শেষ দিকে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই- এর নতুন পর্ষদ গঠন হয়। তখন টানা ৬ বছর পর সংগঠনটির নির্বাচন হলেও তা ছিল আংশিক এবং প্রশ্নবিদ্ধ। যে কারণে গণঅভ্যুত্থানের পর সদস্যদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পর্ষদ ভেঙে প্রশাসক নিয়োগ দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। পাঁচ মাসের মাথায় ভেঙে দেয়া হয় তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ- এর নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদও। সেখানেও ইস্যু ছিল অস্বচ্ছ নির্বাচন ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের আধিপত্য। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিগত দিনে দলীয়করণের মাধ্যমে সংগঠনগুলোকে দুর্বল করে রাখা হয়। নেতৃত্ব গঠন করা হয় সমঝোতা ও ভুয়া ভোটারের মাধ্যমে। যেখানে আমুল সংস্কার দরকার। বিজিএমইএ সাবেক সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে সঠিক নেতৃত্ব আনা সম্ভব হয়নি। তাতে করে সংগঠনগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীদের পরামর্শে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ১২ দফা সংস্কার প্রস্তাব পাঠিয়েছেন এফবিসিসিআই প্রশাসক। যেখানে সংগঠনটিকে রাজনীতিমুক্ত রাখা, পরিচালনা পর্ষদের আকার ছোট করা এবং সভাপতিসহ সব পদে সরাসরি নির্বাচনের প্রস্তাব রয়েছে। এফবিসিসিআই প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, এমন কিছু পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, যার সুদূর প্রসারী ফল পাওয়া যাবে।আসছে মার্চের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যবসায়ী নেতাদের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন এই দুসংগঠনের প্রশাসক।

সুপার স্টার গ্রুপের বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাক্সেসরিজ এবং লাইটিং খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান সুপার স্টার গ্রুপ (এসএসজি) বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে তাদের বহুল প্রতীক্ষিত বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। এসএসজির ৩০ বছর পূর্তির এই মাহেন্দ্রক্ষণে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে সেলস টিম, পরিবেশক, দেশের বাইরের বিজনেস পার্টনার, সেলস হেড, বিজনেস হেড এবং অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাবৃন্দসহ তিন হাজারের বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন; যা এই আয়োজনকে বছরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কর্পোরেট অনুষ্ঠানে পরিণত করে। প্রথম দিন ছিল এসএসজির সেলস টিমের পরিশ্রম এবং বার্ষিক পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি দেওয়ার দিন। যেখানে ফিল্ড অফিসার থেকে শুরু করে চিফ সেলস অফিসার পর্যন্ত সবার অবদানের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। প্রোগ্রামে অন্তর্ভুক্ত ছিল মোটিভেশনাল সেশন, স্ট্রাটেজিক আলোচনা এবং মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা যা আগামীর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সবাইকে উজ্জীবিত করে। দ্বিতীয় দিন উদযাপিত হয় বাংলাদেশজুড়ে থাকা এক হাজারের বেশি পরিবেশকদের নিয়ে। এদিন এসএসজির সাফল্যের মজবুত ভিত হিসেবে পরিবেশকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি জানানো হয়। এর পাশাপাশি ব্যবসায়িক কৌশলগত আলোচনা, র‍্যাফেল ড্র এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে সবাইকে বিনোদিত করা হয়। এসএসজির বার্ষিক এই সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুপার স্টার গ্রুপ লিমিটেডের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুন অর রশীদ, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক তোফায়েল আহমেদ, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ সাদী আব্দুল মজিদ, পরিচালক–এসসিএম মাহবুবুর রহমান। পরিবারসহ তাদের উপস্থিতি পুরো আয়োজনে এক উষ্ণ ও পারিবারিক স্পর্শ যোগ করে, যা এসএসজির ঐক্য এবং সংহতির মূল্যবোধকে তুলে ধরে।

পেঁয়াজের দাম সামান্য কমলেও আলুর কেজি ৮০ টাকা

বাজারে নতুন আলুর দাম কমতে শুরু করলেও দিন দিন বাড়ছে পুরনো আলুর দাম। বাজারে প্রতি কেজি ডায়মন্ড আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে। এদিকে সামান্য কমেছে পেঁয়াজের। এই দামকে স্বাভাবিকভাবে দেখছেন না ক্রেতারা। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের হাজী জয়নাল আবেদীন বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।বিক্রেতাদের মতে, এক সপ্তাহ আগেও এই আলু বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকায়। দাম বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিক্রেতারা জানান, ভারতীয় সীমান্ত বন্ধ থাকার প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারে। আলু ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতীয় স্থলবন্দর হিলি সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিনই আলু-পেঁয়াজ আমদানি হতো। যা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে৷ ফলে ডায়মন্ড আলুর দাম বাড়ছে। এদিকে দাম বৃদ্ধির কারণে হতাশা প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। মিনারা বেগম নামে একজন পোশাক শ্রমিক শুক্রবার ঢাকা উদ্যান এলাকায় বাজার করতে আসেন। এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলুর দাম প্রসঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘এক কেজি আলুর দাম ৮০ টাকা! চিন্তা করা যায়? আমরা গরীব মানুষ কি খাইয়া বাঁচি?’ এদিকে বাজারে দেশীয় জাতের নতুন আলুর সরবরাহ বেড়েছে। একই সঙ্গে কমতে শুরু করেছে দাম। সপ্তাহ তিন আগেও চড়া দামে বিক্রি হওয়া নতুন আলু এখন ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দোকানির সঙ্গে খানিক দর-কষাকষি করলে ৯০ টাকার বিনিময়েও এক কেজি নতুন আলু ঢুকছে ক্রেতার থলেতে। আবার বাজারে সুখবর দিচ্ছে দেশি পেঁয়াজ। ১৩০ টাকা থেকে নেমে এ সপ্তাহে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে।

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রকাশ সোমবার

দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা কেমন, তার শ্বেতপত্র জাতির সামনে প্রকাশ করা হবে আগামী সোমবার (২ ডিসেম্বর)। এর আগে রোববার (১ ডিসেম্বর) এই শ্বেতপত্রের চূড়ান্ত প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করা হবে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) শ্বেতপত্র প্রণয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটির সভাপতি দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য জানান, আগামী রোববার (২ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ঢাকায় ইআরএফ মিলনায়তনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র‌্যাপিড) আয়োজিত ‘বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও উন্মুক্ত বাজেট জরিপ ২০২৩’ ফলাফল প্রকাশ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। দেবপ্রিয় আরও জানান, আগামী সোমবার (২ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করে শ্বেতপত্রের ফল গণমাধ্যমকে জানানো হবে। তিনি বলেন, ‘ব্যাংক ও জ্বালানিখাতে বেশি লুটপাট হয়েছে। এসব তুলে ধরা হবে শ্বেতপত্রে।’

দুর্নীতির সম্পদের পাহাড় ফেরাতে না পারলে কিসের বিপ্লব

‘দুর্নীতি ও লুন্ঠনের মাধ্যমে সম্পদে গড়ে তোলা হয়েছে। এগুলো কেন বাজেয়াপ্ত হল না? এ সম্পদ কোথায় গেল? এই সম্পদ কেন আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকার অধিগ্রহণ করল না! লুণ্ঠনকারীদের যাদের ব্যাংক ঋণ আছে, সেগুলো সমন্বয়ের জন্য তাদের সম্পত্তি কেন দ্রুত সময়ের মধ্যে অধিগ্রহণ করা হল না। এমন পদক্ষেপের কথা শোনা গেলেও দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নেই।’ এটি করা গেলে আমি নিশ্চিত মানুষের মধ্যে কর দেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ বাড়বে বলে জানান শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের যে পাহাড় গড়ে উঠেছে, সেখান থেকে জনগণের সম্পদ ফিরিয়ে নিতে না পারলে কিসের বিপ্লব হল।’ বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ঢাকার পল্টনে অর্থনীতি বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইআরইফ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংলাপে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান এসব কথা বলেন। ইআরএফ ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান র‌্যাপিডের যৌথ আয়োজনে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও বাজেটের উন্মুক্ততা নিয়ে জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। আর্থিক খাতসহ নানা বিষয়ে সরকারের উদ্যোগ আছে, তবে কেন যেন উদ্বেগটা কাটছে না, এর কারণ ব্যাখ্যা করে সরকারের কাছে প্রশ্ন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘সরকার যেসব উদ্যোগ নিচ্ছে, তার ফল আসছে না। মানুষ অত ধৈর্য্য রাখতে পারছে না। কিংবা আস্থার সংকট হচ্ছে।’ এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারে থাকাকালীন ইআরএফের এক অনুষ্ঠানে এই বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ বলেছিলেন ‘ডাল মে কুচ কালা হে’। এই উদ্বৃতি ফের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আগামী রোববার বলতে পারব কোন কোন ডাল পচা, আর কোন কোন ডাল ভাল ছিল। রোববার প্রধান উপদেষ্টার কাছে শ্বেতপত্র হস্তান্তর করা হবে। পর দিন সংবাদ সম্মেলনে জনগণের জন্য গত সরকারের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরা হবে। দেশের দুইটি ফুসফুস ব্যাংক ও জ্বালানি খাত। এই দুই খাতে বড় ধরনের অনিয়মের কথা উল্লেখ করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘ব্যাংক ও জ্বালানিখাতে বেশি লুটপাট হয়েছে। এসব তুলে ধরা হবে প্রতিবেদনে।’ দুর্নীতি প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় বলেন, ‘সাধারণ মানুষের যে ধারণা আছে, তার চেয়ে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল। এমন একটি অর্থনীনৈতিক পরিস্থিতিতে কোন উত্তারাধিকার সরকারের করার কিছু থাকে না। ব্যাংকি খাতে সমস্যা বেশি ছিল। তাৎক্ষণিক দূর করার চেষ্টা চলছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর যতটা উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে, তা যদি সরকার দক্ষতার সাথে পরিচালনা করতে না, পারে তবে দেশের মানুষকে ততটাই হতাশ করা হবে। এ জন্য বছর শেষে সরকারকে পাঁচ মাসের মূল্যায়ন উপস্থাপন করতে হবে। কি কি সরকারের দিক থেকে করা হয়েছে। এগুলো একত্রিত করে প্রকাশ করতে হবে। বাজেটের আগে চলমান পরিস্থিতিতে আগামী আগামী ছয় মাসের পরিকল্পনা প্রকাশ করতে হবে। এর মধ্যে মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ, সরকারি ব্যয়, রাজস্ব আয় ও বৈদেশিক খাতের ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা তুলে ধরতে হবে। আগামী জানুয়ারিতে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা জন্য অন্তভূক্তিমূলক টেকসই উন্নয়ন ফোরাম গঠন করতে পারলে আগামী বাজেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবে।’ দেবপ্রিয় বলেন, ‘আর্থিক স্বস্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে সংস্কার করা কঠিন হবে।’ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র‌্যাপিড) চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার এমনভাবে রেখে গেছে, তার খেসারত আমরা গুনছি। বেপরোয়া অনেক নীতি নিয়ে ছিল। ফলে মূল্যস্ফীতি হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এখন ব্যাংক থেকে টাকা লুটপাট ও চুরি বন্ধ হয়েছে। এর সুফল পাওয়া যাবে। ব্যাংকের আমানত সংগ্রহ ও রপ্তানি বেড়েছে। বর্তমানে নেওয়া নীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ সাড়া দেখতে পাচ্ছি। তবে, আর্থিক ব্যবস্থাপনা কঠিন হবে। কারণ, আগামী ছয় মাস অত্যন্ত কঠিন সময় যাবে। এর মধ্যে রিজার্ভ বাড়াতে হবে। রিজার্ভ না বাড়লে মূল্যস্ফীতি কমানো সম্ভব হবে না।’ জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন র‌্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক আবু ইউসুফ বলেন, ‘সরকারের ব্যয় সচ্ছতার সঙ্গে হচ্ছে কিনা। জনগন খুবই কম জানতে পারছে। বাজেট ব্যয়ে সচ্ছতা ৩৭ শতাংশ। যা যথেষ্ট নয়। এক্ষেত্রে ভারত, নেপাল ও শ্রীলংকার চেয়ে পিছিয়ে আছে। কেবল পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে। বাজেটে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ১১ শতাংশ আর বাজেট বাস্তবায়ন তদারকি হচ্ছে ৩৭ শতাংশ।’ অর্থ মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব আনোয়ারুল কবির বলেন, ‘বাজেট বাস্তবায়নে কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। এটা কিভাবে তরান্বিত করা যায় তার চেষ্টা করা হবে। জরিপে বেশ কিছু সুপারিশ এসেছে, তা নিয়ে কাজ করবে অর্থ মন্ত্রণালয়।’প্রথম আলোর হেড অফ অনলাইন শওকত হোসেন মাসুম বলেন, ‘এখন প্রত্যাশা সবার বেশি। রাতারাতি মূল্যস্ফীতি কমে যাবে না। এর জন্য সময় গালবে। তবে, মূল্যস্ফীতি কমানোর ক্ষেত্রে আস্থার সংকট আছে। মূল্যস্ফীতি কমাতে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু, শুরুতে বেসরকারি খাতের সঙ্গে যোগাযোগে ঘাটতি ছিল। আর আস্থা সংকটের আরেকটি কারণ আইন শৃঙ্খলার ঘাটতি।’ তিনি আরো বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে সরকার যা করতে চায়, তার আগামী ছয় মাসের পরিকল্পনা মানুষকে জানালে আস্থা ফিরবে।’ ইআরএফের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।

দুর্বল ব্যাংককে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকার তারল্য সহায়তা দেয়া হয়েছে: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর গভর্নর বলেছেন, টাকা ছাপিয়ে দুর্বল ব্যাংকে তারল্য সহয়তা দেব না সেখান থেকে সাময়িক ভাবে সরে এসেছি। নতুন টাকা ছাপিয়ে দুর্বল ৬ ব্যাংকে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার তারল্য সহয়তা দিয়েছি। আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।গভর্নর বলেন, আমরা টাকা ছাপিয়ে তারল্য সহয়তা করলেও সে টাকা আমরা বন্ড ছেড়ে তুলে ফেলবো। বাজারে এ নতুন টাকা আমরা রাখবো না। এর জন্য আমার নতুন করে বন্ড ছাড়ছি।তিনি বলেন, সব গ্রাহক যদি ব্যাংকে গিয়ে হাজির হয় তাহলে কোন ব্যাংকের পক্ষেই ফেরত দেওয়া সম্ভব না। আগামী রবিবার থেকে গ্রাহক তার চাহিবার মত টাকা পাবে।আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমরা বাজার থেকে এক হাতে টাকা দেব অন্য হাতে তুলে নেব। আমারা আগের লক্ষ্যেই থাকছি। মূল্যস্ফীতি কমানোর সাথে আমানত কারীর স্বার্থও দেখবো।সব ঋণ খেলাপির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে বাংলাদেশ বলে গভর্নর বলেন, এস আলম বা সব ঋণ খেলাপিদের সম্পদ বিক্রি করা হবে আইন অনুযায়ী।তিনি বলেন, আমি কারোর চাপে কোন কিছু করবো না, দরকার পরলে চাকরি ছেড়ে দেব। আমি নিজের স্বার্থে এখানে বসে নেই।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান, গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুল আমিন, ইউনিয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুঃ ফরীদ উদ্দীন আহমদ, এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম স্বপন এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম সাদিকুল ইসলাম।

ইসলামী ব্যাংকের লক্ষ্মীপুর শাখা উদ্বোধন

রাজশাহীতে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ৩৯৮তম শাখা হিসেবে লক্ষ্মীপুর শাখা উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) এ শাখার উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুল জলিল, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান এম মাসুদ রহমান ও স্বতন্ত্র পরিচালক মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খান। অনুষ্ঠানে কল্যাণমুখী ব্যাংকিংয়ের উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শরী’আহ সেক্রেটারিয়েটের প্রধান মো. শামসুদ্দোহা এবং স্বাগত বক্তব্য দেন রাজশাহী জোনপ্রধান মো. শফিউল আজম। উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. রফিকুল ইসলাম ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট একেএম মাহবুব মোরশেদ। গ্রাহক ও অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবক কেরামত আলী, বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান রিলিজ, ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের গাইনী বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার ফাতেমা সিদ্দীকা, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সুপার ডাক্তার মো. হাসানুজ্জামান ও আল আকসা ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. সালেহ উর রহমান। দু’আ ও মুনাজাত পরিচালনা করেন আল- যাযিরা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মুহাম্মদ আবদুল লতিফ। অনুষ্ঠানে ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক দেশের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে সর্বজনীন ও কল্যাণমুখী সেবাগুলো পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। নতুন বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংক আমানত, বিনিয়োগ, আমদানি-রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধিতে অভাবনীয় সক্ষমতা অর্জন করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকের জন্য আগামীর প্রতিটি দিন হবে সম্ভাবনার ও এগিয়ে যাওয়ার।’ উল্লাহ আল মাসুদ ইসলামী ব্যাংকের আধুনিক, সমৃদ্ধ ও প্রযুক্তিনির্ভর সেবাগ্রহণের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক শরী‘আহ নীতিমালার আলোকে সব ধরনের সেবা প্রদানে শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে যাচ্ছে।’ দেশের অন্যান্য শাখার মত লক্ষ্মীপুর শাখাতেও সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদানে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন উল্লাহ আল মাসুদ।

ভারত থেকে আসছে আলু-পেঁয়াজ

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও গত সোমবার কোনো লিখিত নির্দেশনা ছাড়াই পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশগামী আলু ও পেঁয়াজবোঝাই সব ট্রাকের স্লট বুকিং বন্ধ করে করে দেয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। অবশেষে তিনদিন পর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে স্বাভাবিক হলো আলু ও পেঁয়াজের স্লট বুকিং। বৃহস্পতিবার আবারও ভারত থেকে বাংলাদেশের পথে যাওয়া শুরু করেছে ট্রাকবোঝাই পেঁয়াজ ও আলু। ভারতের রাজ্য সরকারের স্লট বুকিং পোর্টাল ফের চালু হওয়ার স্বস্তি ফিরেছে সীমান্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে। সীমান্ত বাণিজ্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন বিষয় হলেও সীমান্তে পণ্যবাহী ট্রাকের স্লট বুকিং সংক্রান্ত পোর্টাল নিয়ন্ত্রণ করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের দাবি, রাজ্যের অভ্যন্তরীণ বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে টাস্ক ফোর্সের সুপারিশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশে আলু-পেঁয়াজের রপ্তানি। রাজ্য সরকারের এমন পদক্ষেপে রাতারাতি বিপাকে পড়ে হাজার হাজার সীমান্ত ব্যবসায়ী। রাজ্যের এমন পদক্ষেপকে সরাসরি এখতিয়ার বহির্ভূত বলে মন্তব্য করেছেন তারা। তারা বলছেন, যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকারের কোন নির্দেশিকা নেই তাই রাজ্য সরকারের তরফে এমন পদক্ষেপ সম্পূর্ণ বেআইনি ও অনৈতিক। গোটা বিষয় নিয়ে সোমবার থেকেই ব্যবসায়ীদের তরফে দফায় দফায় বৈঠক করা হয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে। অবশেষে বৃহস্পতিবার থেকে ফের চালু করে দেওয়া হয় স্লট বুকিং। স্বাভাবিক হয় সীমান্ত বাণিজ্য।

কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করলো সাউথইস্ট ব্যাংক

কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র “কৃষি খাতের উৎপাদন বৃদ্ধি” “কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়” এবং “কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ” এর জন্য কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে। সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুদ্দিন মো: ছাদেক হোসাইন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে, “নারী উন্নয়ন ফোরাম” এনজিওর মাধ্যমে প্রান্তিক কৃষকদের হাতে এই আর্থিক সহায়তা তুলে দেন। বিশেষ তহবিলের মাধ্যমে প্রদত্ত এই সহায়তা প্রান্তিক কৃষকদের উন্নয়নে ব্যাংকের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। সাউথইস্ট ব্যাংক “নারী উন্নয়ন ফোরাম” এনজিওর সাথে সমন্বয় করে এই সহায়তা প্রেরণ করেছে। সহায়তা প্রাপ্ত কৃষকদের পাশাপাশি “নারী উন্নয়ন ফোরাম” এনজিওর প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক আফরোজা সুলতানা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সাউথইস্ট ব্যাংকের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাছুম উদ্দিন খান ও আবিদুর রহমান চৌধুরী এবং উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া এপিএ নেগোসিয়েশন চুক্তি সই

অর্থনৈতিক অংশীদারীত্ব চুক্তি (এপিএ) সম্পাদনের নেগোসিয়েশন শুরুর লক্ষ্যে বাংলাদেশ-কোরিয়া ইপিএ নেগোসিয়েশন লঞ্চিং সেরোমনি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে এ অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন ও দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্য মন্ত্রী ইনকিয়ো চিওনং আনুষ্ঠানিক এ নেগোসিয়েশন শুরুর ঘোষণা দেন। এছাড়া, ইপিএ সম্পাদনের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উন্নয়ন কাঠামো সংক্রান্ত সমঝোতা চুক্তি সই করা হয়েছে। বাণিজ্য সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন ও দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্য উপমন্ত্রী জংওন পার্ক সমঝোতা চুক্তি সই করেন।

ন্যাশনাল ব্যাংকের টাকা লোপাটকারীরা চিহ্নিত, আগামী সপ্তাহ থেকে একশন

ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেছেন, ‘যারা ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে, তাদেরকে আমরা চিহ্নিত করেছি। সেই টাকাগুলো উদ্ধারের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক সহায়তায় কার্যক্রম চলছে। আগামী সপ্তাহ থেকে আমরা এটাচমেন্ট (আদায়ের মাধ্যমে সমন্বয়) শুরু করে দিব। আশা করি, আগামী তিন মাসের মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াবে।’ বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকায় ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মোয়াজ্জেম হোসেন আরো বলেন, ‘যারা ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে, তাদের নামে, বেনামে, স্থাবর, অস্থাবর যেসব সম্পত্তি আছে, সেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। এমনও গ্রাহক‌ও আছে, গুলশানে তাদের এক হাজার কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। এগুলো সব নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি ব্যাংকের পক্ষ থেকে। যারা এই ব্যাংক থেকে সবচেয়ে বেশি টাকা নিয়েছে, তাদেরকে আমরা ধরার কার্যকরী উদ্যোগ নিয়েছি।’ব্যাংকটির চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘আতঙ্ক ও গুজবে ব্যাংক খাত থেকে আস্থা হারিয়েছেন আমানতকারীরা। এ খাতে অনিয়ম ছিল না তা বলব না। ব্যাংকিং খাতে বহুমাত্রিক ও বহু পাক্ষিক অনিয়ম হয়েছে। তবে, ন্যাশনাল ব্যাংকে এখন আন্তর্জাতিক ও দেশীয়সহ পাঁচটি অডিট ফার্ম কাজ করছে। তাদের প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী করণীয় আমরা নির্ধারণ করব। আমি এতটুকু নিশ্চিত করতে পারি, এত দিন যত অনিয়ম হয়েছে, এখন তা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ। এখন আমরা অবলোপন থেকে ও মন্দ মানে খেলাপি হয়ে যাওয়া ঋণ গুলো আদায়ের চেষ্টা করছি। পাশাপাশি, বৈদেশিক বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং রেমিটেন্সের উপর জোর দিয়েছি।’ বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় খুব ওই ঘুরে দাঁড়ানোর আশা ব্যক্ত করেন চেয়ারম্যান।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আব্দুল আউয়াল মিন্টু জানান, দেশের কঠিন সময়েও ন্যাশনাল ব্যাংক দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত গার্মেন্টস শিল্প ও কারখানাগুলোর পাশে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। বিশেষত এলসি সুবিধা প্রদানসহ গার্মেন্টস কর্মীদের বেতন-ভাতা সময়মত পরিশোধ নিশ্চিত করায় ন্যাশনাল ব্যাংক সদা সচেষ্ট। এর পাশাপাশি, দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রেও ন্যাশনাল ব্যাংক সচেষ্ট। নেশনাল ব্যাংক গেল অক্টোবর পর্যন্ত ৯০০ কোটি টাকার খেলাপি আদায় করেছে এবং চলতি বছরের মধ্যে আরও ৪০০ কোটি টাকা আদায়ের প্রক্রিয়া চলছে। বলে রাখা ভাল, গেল ২০ আগস্ট বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বিলুপ্ত করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ন্যাশনাল ব্যাংকের আগের পরিচালকদের অনেকেই চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের নামে-বেনামে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ছিলেন। ফলে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ব্যাংকটিকে এস আলম গ্রুপের হাত থেকে মুক্ত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গেল ডিসেম্বর পর্যন্ত ন্যাশনাল ব্যাংকের বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার ২৭০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খাতা-কলমে খেলাপি হয়ে পড়েছিল ১২ হাজার ৩৬৫ কোটি। বিতরণকৃত মোট ঋণের ২৯ শতাংশ। প্রকৃতপক্ষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ আরও বেশি বলে অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ বর্তমানে ১১ হাজার ৬৯৮ কোটি।

ন্যাশনাল ব্যাংকের গ্রাহকরা চাহিদামত টাকা কবে তুলতে পারবেন, জানালেন চেয়ারম্যান

ঋণের নামে টাকা লুটপাটকারী কেউ পার পাবে না বলে কঠোর বার্তা দিয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংকের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ। তবে, চাহিদামত টাকা তুলতে আমানতকারীকে অপেক্ষা করতে হবে আরও অন্তত তিন মাস। শিকদার গ্রুপসহ বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠীর ঋণভারে ডুবে যাওয়া ন্যাশনাল ব্যাংকে রাখা টাকা তুলতে এসে বহু গ্রাহকই ফিরছেন খালি হাতে, ভুগছেন আস্থাহীনতায়। এমন বাস্তবতা স্বীকার করেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুও।বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে ন্যাশনাল ব্যাংকের বর্তমান অবস্থা ও কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘স্বল্প মেয়াদি আমানতের বিপরীতে দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ ব্যবস্থাপনা ব্যাংক খাতের বড় সমস্যা। এই সমস্যাকে আরও উসকে দিয়েছে দেশের দুর্বল পুঁজিবাজার।’তবে, গ্রাহকের আস্থা বাড়াতে ন্যাশনাল ব্যাংক আর কোন অনিয়মে জড়াবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চাহিদামত আমানতকারীর টাকা ফেরত দিতে সময় লাগবে আরও অন্তত তিন মাস।’এ সময় ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ঋণ খেলাপিদের ধরার পাশাপাশি বিদেশে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গেল জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৯০০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায় করেছে ন্যাশনাল ব্যাংক। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে আরো ৪০০ কোটি টাকা।