একীভূতকরণে অনীহা এক্সিম ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের
- ফরিদ শ্রাবণ
- প্রকাশঃ ০৩:৩৯ পিএম, ২৪ জুন ২০২৫

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে দেশের পাঁচ শরিয়াভিত্তিক ব্যাংককে একীভূত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গ্লোবাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি, ইউনিয়ন, এক্সিম ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে একীভূত করে একটি শক্তিশালী শরিয়াভিত্তিক ব্যাংক গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে এই উদ্যোগের বিরোধিতা করছে এক্সিম ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক।
এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন বলেন, “আমরা বুঝতে পারছি না এক্সিম ব্যাংককে কেন একীভূত করার তালিকায় রাখা হয়েছে। বাকি চারটি ব্যাংকের মোট ব্যবসাও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ে কম। আমাদের খেলাপি ঋণও তুলনামূলকভাবে অনেক কম। তাই এই সিদ্ধান্ত যৌক্তিক নয়।”
একইভাবে, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শফিউজ্জামান বলেন, “আমরা একীভূত হতে আগ্রহী নই। আমাদের ব্যাংকের নিজস্ব সক্ষমতা রয়েছে। আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। গ্রাহকদের আস্থাও রয়েছে আমাদের প্রতি।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, এই পাঁচ ব্যাংকের মধ্যে তিনটির খেলাপি ঋণের হার ৯০ শতাংশের বেশি। গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকে ৯৪ শতাংশ, ইউনিয়নে ৯৬ এবং ফার্স্ট সিকিউরিটিতে ৯৩ শতাংশ। তুলনায় এক্সিম ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ২৮ শতাংশ এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৫৮ শতাংশ।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “দুর্বল ব্যাংকগুলো একীভূত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে আরও হস্তক্ষেপ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।”
বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, “একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত কি ভিত্তিতে নেয়া হচ্ছে, তা ব্যাংকগুলোকে স্পষ্টভাবে জানাতে হবে। এছাড়া ব্যাংকিং রেজ্যুলেশন অর্ডিন্যান্স অনুযায়ীই পদক্ষেপ নিতে হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, একীভূত ব্যাংকের গ্রাহক সেবায় কোনো বিঘ্ন ঘটবে না এবং কর্মীদের চাকরিও রক্ষা করা হবে।
সম্প্রতি সরকার পরিবর্তনের পর বিভিন্ন দুর্নীতির তথ্য বের হয়ে আসছে। বিশেষ করে ব্যাংক খাতে লুটপাটের কারণে তারল্য সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংকট মোকাবেলায় একীভূতকরণের পথ বেছে নিয়েছে। তবে সক্ষম ব্যাংকগুলো তাদের স্বাধীনতা বজায় রেখে কাজ করতে চায়।