ডুবতে থাকা পুঁজিবাজারে এসেছে সাড়ে বারোশ নতুন বিনিয়োগকারী
- ফরিদ শ্রাবণ
- প্রকাশঃ ০১:৪১ পিএম, ১০ মে ২০২৫

৫ই আগষ্টের পরে নতুন বাংলাদেশে সব খাতে লেগেছে সংস্কার ও পরিবর্তনের ছোয়া। নতুন এ সংস্কারে দেশের অর্থনীতিতে যেখানে ঘুরে দাড়াচ্ছে সেখানে পুঁজিবাজার আরও ভঙ্গুর হচ্ছে। তবে এ ডুবতে থাকা পুঁজিবাজারে এক মাসের ব্যবধানে এসেছে নতুন করে বারোশ'র বেশি নতুন বিনিয়োগকারী। তবে গত এপ্রিল মাসে নতুন বিনিয়োগকারী এলেও কমেছে বিদেশী বিনিয়োগকারী।
পুঁজিবাজার সংস্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্য মতে, গত এপ্রিলের প্রথম কার্যদিবসের শুরুতে দেশের পুঁজিবাজারে ছিল ১৬ লাখ ৮৮ হাজার ১৪৪ জন বিনিয়েগকারী। চলতি মে মাসে এসে এক হাজার ২৫২ বিনিয়েগকারী বেড়ে ১৬ লাখ ৮৯ হাজার ৭৮৭ জনে। এক মাসে পুরুষ এক হাজার ২৭১ জন বেড়েছে তবে নারী বিনিয়েগকারী কমেছে ৬৫ জন। আলোচ্য সময়ে বিদেশী বিনিয়োগকারী কমেছে ১৩৪ জন।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও তা বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট্য নয়। তবে এ খারাপ সময়েও নতুন করে বিনিয়োগকারী বাজারে আসছে তা আশা জাগাচ্ছে। তবে ধারা অব্যাহত রাখতে হলে নতুন ভালো মানের কোম্পানির তালিকাভুক্তি করাতে হবে। এত বিদেশী বিনিয়োগকারীর সাথে দেশীয় বিনিয়োগকারী বাড়বে।
৫ই আগষ্টের পরে সিডিবিএলের তথ্য মতে নয় মাসে পুঁজিবাজারে এসেছে ২১ হাজার ৭২৯ বিনিয়োগকারী। তবে আলোচ্য সময়ে পুঁজিবাজার হারিয়েছে ৭২৪ বিদেশী বিনিয়োগকারী। সর্বশেষ তথ্য মতে ৬ মে পুঁজিবাজারে রয়েছে ১৬ লাখ ৮৯ হাজার ৭৪৭ জন বিনিয়েগকারী। এদের মধ্যে পুরুষ ১২ লাখ ৬৭ হাজার ৬৭৮ জন, নারী ৪ লাখ ৪ হাজার ৩৮৪ জন এবং বিদেশী ৪৬ হাজার ৩৭১ জন বিনিয়েগকারী রয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এ বাজার সংস্কারে নেওয়া উদ্যোগ:
বিগত দিনে পুঁজিবাজারে হওয়া অনিয়ম আর দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে বিএসইসি বেশকিছু সংস্কার উদ্যোগ নেয়। এর মধ্যে গত বছরের ৭ অক্টোবর পুঁজিবাজারের উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক মানের সুশাসন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার সংস্কারের সুপারিশের জন্য পাঁচ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। পাশাপাশি পুঁজিবাজার ফোকাস গ্রুপও গঠন করে বিএসইসি। এরপর গত ২০ অক্টোবর একটি ‘অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি’ গঠন করা হয়। পুঁজিবাজারে বিগত সময়ের অনিয়ম, কারসাজি ও দুর্নীতির বিষয়ে অনুসন্ধান ও তদন্ত করার জন্যই গঠন করা হয় এ কমিটি। এ ছাড়া বাজারের উন্নয়নে নেওয়া হয় একগুচ্ছ নীতি পদক্ষেপের উদ্যোগ।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, পুঁজিবাজারে দেশীয় বিনিয়োগকারীদের আগমন কিছুটা আশার সঞ্চার করছে, তবে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার না হলে বাজার স্থিতিশীলতা পাবে না। নতুন কোম্পানির তালিকাভুক্তি ও গুণগত মান নিশ্চিত করা খুবই জরুরি, যাতে বিনিয়োগকারীরা আস্থা পান।
এদিকে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষের প্রভাবে আগের দিন বড় পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। এদিন দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ হাজার ৯০২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১ হাজার ৭৪ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১ হাজার ৮২০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক ৮ হাজার ৩৬৬ পয়েন্টে, সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৩ হাজার ৭০৩ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৮৮৩ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ১১ হাজার ৬৭২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।