
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত ভিডব্লিউবি কর্মসূচিতে প্রতি দুই বছর মেয়াদে সুবিধাভোগীদের তালিকা করা হয়। তালিকাভুক্ত কার্ডধারীরা প্রতি মাসে বিনামূল্যে ৩০ কেজি চাল পান। এ কর্মসূচিতে স্বামী পরিত্যক্ত, স্বামী নিখোঁজ, প্রতিবন্ধী নারী, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ও অতিদরিদ্র পরিবারের নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতিমালা রয়েছে। তবে বাস্তবে এর ব্যতিক্রম চিত্র দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সচ্ছল পরিবারের নারীদের নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুড়িকাহনিয়া গ্রামের বাসিন্দা সাকি বেগম আর্থিকভাবে সচ্ছল হলেও তাকে অসচ্ছল নারী হিসেবে ভিডব্লিউবি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি শামসুদ্দিনের স্ত্রী। তার স্বামী ও সন্তান প্রবাসে কর্মরত এবং তিনি নিজেও পাকা বাড়িতে বসবাস করছেন। একই গ্রামের আরেক সচ্ছল নারী রীনা রানী বিশ্বাসের নামও একই তালিকায় রয়েছে। তিনি গরু ব্যবসায়ী প্রদীপ চন্দ্র বিশ্বাসের স্ত্রী। এ দুজনের নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় কর্মসূচির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য পাইকুরাটি ইউনিয়নের তালিকায় সাকি বেগম ও রীনা রানী বিশ্বাসের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। কীভাবে তারা এ কর্মসূচির আওতায় এলেন, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। তালিকা প্রকাশের পরপরই তারা জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে প্রত্যেকে ১২০ কেজি করে মোট ২৪০ কেজি চাল উত্তোলন করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শুধু এই দুজন নন, অনুসন্ধান করলে আরও সচ্ছল পরিবারের নারীদের নাম ভিডব্লিউবি তালিকায় পাওয়া যাবে। তাদের মতে, প্রকৃত অসচ্ছল ও দরিদ্র নারীদের সুযোগ দিতে হলে অযোগ্যদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া জরুরি।
কুড়িকাহনিয়া গ্রামের দরিদ্র নারী সাদিয়া খাতুন বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। কার্ডের আশায় বহুবার আবেদন করেছি, কিন্তু নাম আসে না। ধনীরা কার্ড পায়, তাই এখন আর আবেদনই করি না।”
এ বিষয়ে পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বলেন, “এ রকম হওয়ার তো কথা নয়। সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যরা তালিকায় নাম দেন। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।”