
রাজশাহীর তানোর উপজেলায় নলকূপের গভীরে পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদ আর বেঁচে নেই।
বৃহস্পতিবার (১১ডিসেম্বর) রাত ৯টা ৪০ মিনিটে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকরা জানান, রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে শিশুটিকে হাসপাতালে আনা হলেও তখন তার মৃত্যু হয়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, দীর্ঘ সময়ের উদ্ধার অভিযান শেষে রাত ৯টার দিকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
ঘটনা ঘটে বুধবার দুপুরে উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট গ্রামে। বাড়ির পাশের জমি দিয়ে হাঁটতে গিয়ে সাজিদ খড়ের মধ্যে ঢাকা একটি অরক্ষিত নলকূপের গর্তে পড়ে যায়। শিশুর মা পেছন থেকে ‘মা মা’ চিৎকার শুনে খড় সরিয়ে দেখি, মুখ খোলা গভীর গর্তে সে রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত বছর এক ব্যক্তি গভীর নলকূপ খনন করে ১২০ ফুট পর্যন্ত নলকূপ তৈরি করেছিলেন, কিন্তু পানি না পেয়ে পাইপ মুখ খোলা অবস্থায় ফেলে যান। বৃষ্টির কারণে গর্ত আরও বড় হয়ে যায়, কিন্তু কোনো সতর্কতা বা ঢাকনা না থাকায় অবশেষে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর এলাকায় জনসমাগম হয়। গর্তের পাশে রাতভর দাঁড়িয়ে থাকেন সাজিদের মা, সন্তানকে বাঁচানোর জন্য কান্না ও দোয়া চালিয়ে যান। উদ্ধারকালে গর্তের ভেতর থেকে কিছু শব্দ পাওয়া গেলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়, যা উদ্ধারকর্মীদের উদ্বিগ্ন করে তোলে।
ফায়ার সার্ভিস দল গর্তে অক্সিজেন সরবরাহ অব্যাহত রাখে। মেডিকেল টিম ও স্থানীয় প্রশাসন পুরো সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, শিশুটির জীবিত থাকার সম্ভাবনা খুবই কম, তবুও তাকে উদ্ধার না করা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।