
কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন হ্নীলা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা রেজাউল করিম (৩৬)। রোববার (৭ ডিসেম্বর) কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণের সময় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
দরগাহপাড়ার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে রেজাউল করিম হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন।
গত ৪ ডিসেম্বর দুপুরে কক্সবাজার শহরের ইউনিয়ন হাসপাতাল থেকে তাকে আটক করে র্যাব, পরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গ্রেপ্তারের পর র্যাব জানায়, রেজাউল করিম আলোচিত ইউনুস মেম্বার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ও দীর্ঘদিন পলাতক থাকা আসামি।
এর আগে গত বছরের ২৬ নভেম্বর মধ্যরাতে রেজাউল করিমকে না পেয়ে টেকনাফ থানা পুলিশ তার ১৪ বছরের ছেলে রাফিকে আটক করে এবং অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়। এ ঘটনায় পরদিন ‘বাবাকে না পেয়ে ১৪ বছরের ছেলেকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে বিষয়টি দেশজুড়ে আলোচিত হয়। পরে আদালতের নির্দেশে ৯ দিন পর জামিনে মুক্তি পায় হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাফি।
সেসময় টেকনাফ মডেল থানার ওসি গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে রাফিকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ ওঠে। পরিবার দাবি করে, ‘বাবাকে ক্রসফায়ার দেওয়া হবে’—এমন ভয় দেখিয়ে কিশোর রাফির কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়। তখন রেজাউল করিম বলেছিলেন, ‘আমরা এখনো আতঙ্কে আছি। জানি না আমার ছোট্ট ছেলেটা এই ট্রমা থেকে কখন বের হতে পারবে।’
এক বছর পর ঘটনার নতুন অধ্যায়ে পুলিশ হেফাজতে তার মৃত্যু নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে। পরিবারের ভাষ্য, রেজাউল করিম আগে থেকেই হৃদরোগে ভুগছিলেন। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গেলে র্যাব তাকে অসুস্থ অবস্থায় আটক করে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পুলিশ পাহারায় তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।
টেকনাফ থানা সূত্র জানায়, আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর রেজাউল করিমের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।