যুবদল নেতাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীর মামলা
- যশোর প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৯:২০ পিএম, ১১ আগস্ট ২০২৫

যশোরে চাঁদাবাজির অভিযোগে স্থানীয় যুবদল নেতাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনের পর এবার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
সোমবার যশোর শহরের বারান্দীপাড়া ঢাকা রোড এলাকার বাসিন্দা ও পুলিশ কর্মকর্তা আজিজুল হক সবুজের স্ত্রী জেসমিন বেগম মামলাটি দায়ের করেন। এতে ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি তারেক হাসান চুন্নাসহ ১২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মামলার শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রহমত আলী, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন—বারান্দীপাড়া বৌবাজার এলাকার আনসার আলীর ছেলে বিশাল হোসেন, লাল্টুর ছেলে আকাশ হোসেন, লাল্টু, আশরাফ আলীর ছেলে সোহেল ওরফে চাকু সোহেল, শরিফ, আশরাফের ছেলে হাসান, সানু, মন্ডল, সিরাজের ছেলে হাবিবুর রহমান হাবিব, জামালের ছেলে তুষার, এবং রবির ছেলে আল আমিন ওরফে ভাগিনা আলামিন।
জেসমিন বেগম মামলায় উল্লেখ করেন, তার চারটি ইজিবাইক রয়েছে, যেগুলো ভাড়া দিয়ে পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করেন। অভিযোগ অনুযায়ী, গত ৫ আগস্টের পর থেকে যুবদল নেতা তারেক হাসান চুন্না তার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। চাঁদা না দেওয়ায় বিভিন্ন সময়ে প্রাণনাশসহ নানা হুমকি দেয়া হচ্ছিল।
জেসমিনের দাবি, ৪ আগস্ট বিকেলে চুন্না ও তার সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায়। তারা ঘরে ঢুকে দুই লাখ টাকা দাবি করলে, জেসমিন তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর তাকে মারধর করা হয় এবং সানু ও লাল্টু তার শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ করেন তিনি। চুন্না ঘরের তল্লাশি চালিয়ে ৫০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় বলেও মামলায় উল্লেখ আছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, জেসমিনের ২০ বছরের ছেলে রাকিব হাসানকে মারধর করে আহত করা হয় এবং তার ১১ মাস বয়সী শিশুর গলায় ছুরি ধরে আরও টাকা দিতে চাপ দেয় দুর্বৃত্তরা। পরিবারের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে কিছুজন পালিয়ে গেলেও চুন্নাসহ কয়েকজনকে আটক করে। তবে পরে আরও কিছু সশস্ত্র ব্যক্তি এসে ভয় দেখিয়ে চুন্নাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
জেসমিন আরও বলেন, ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছিল। তিনি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং সেনাবাহিনীর সহায়তায় ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়। তবে অভিযোগ অনুযায়ী, বাকি দেড় লাখ টাকা না দেওয়ায় এখনো হুমকি পেয়ে যাচ্ছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ঘটনার একদিন আগে, রবিবার দুপুরে যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে একই অভিযোগ তুলেছিলেন জেসমিন। এরপর তিন ঘণ্টার মধ্যে যুবদল নেতা চুন্নার পক্ষে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন নগর যুবদলের সদস্য সচিব শেখ রবিউল ইসলাম রবি। তিনি দাবি করেন, “ইজিবাইক নিয়ে সালিশ করতে চুন্নাকে ডেকেছিলেন জেসমিন, কিন্তু সালিশ পছন্দ না হওয়ায় জেসমিনের লোকজনই চুন্নাকে মারধর করে।” এছাড়া চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।