প্রধান শিক্ষককে বিএনপি নেতার হুমকি
‘আমি তোরে পিটাইমু, তোর কোনো বাপে ফিরাইতো পারতো নায়’
- সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৯:১৪ পিএম, ১৭ জুলাই ২০২৫

‘তোরে আমি পিটাইমু (পিটাবো), তোর কোনো বাপে ফিরাইতো (আটকাতে) পারত নায়। জিডি ধরাইতেনি (করতে চাওয়া) গিয়া ধরা। তুই আমার লগে বহুত বেয়াদবি করছোস, পিটা তো খাইছত না বেয়াদবের বাচ্চা, কিছুদিনের মধ্যে পিটা খাইবে। পিটা খাইবার লাগি বার-চা (অপেক্ষা কর)।’ এভাবে অকথ্য ভাষায় এক বিএনপি নেতা একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে মুঠোফোনে হুমকি দেন।
এরকম হুমকির ভয়েজ রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায়।
উপজেলার চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ডা. রাজা মিয়া চিলাউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে মুঠোফোনে হুমকি ও গালিগালাজ করেন। বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভয়েজ রেকর্ডটি ভাইরাল হলে এলাকার অনেকে ক্ষুব্ধ হন। বিষয়টি প্রধান শিক্ষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন।
প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক জানান, স্কুলের মাঠে মাটি ভরাটের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বরাদ্দ হয়। কাজ করতে গেলে ওই বিএনপি নেতা বাধা দেন। বিষয়টি আমি ইউএনও স্যারকে অবহিত করে প্রশাসনের সহযোগিতায় কাজ করি। এ নিয়ে তিনি আমার ওপর ক্ষুব্ধ। এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট বের হলে তাকে কেন আমি রেজাল্ট জানাইনি, এ নিয়ে ফোন করে গালিগালাজ ও হুমকি দেন।
তিনি আরও বলেন, আমি আমার এক শিক্ষককে নিয়ে তাঁর (রাজা মিয়ার) দোকানে গিয়ে দেখা করে বিষয়টি বুঝিয়ে বলতে চাইলে তিনি আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তাঁর নাতিকে পাঠিয়ে স্কুলে হুমকি দেন। আমি ভয়ে আছি। আমার শিশু সন্তান এই বিষয়ে আতঙ্কে আছে। কী করবো ভেবে পাচ্ছি না।
চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ডা. রাজা মিয়াকে কয়েকবার কল দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে তাকে আবারও কল দেওয়া হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের একাডেমিক সুপারভাইজার অরূপ কুমার রায় জানান, ওই শিক্ষক ভয়েজ রেকর্ড পাঠিয়ে বিষয়টি অবগত করেছেন। আমি তাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে পরামর্শ দিয়েছি।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরকত উল্যাহ জানান, প্রধান শিক্ষককে গালিগালাজের ভয়েস রেকর্ডের বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। প্রধান শিক্ষক চাইলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবেন, আমরা তাকে সহায়তা করবো। এবিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলবো।