হঠাৎ রাস্তার উপর ঘর, চলাচলে দুর্ভোগ ১০০ পরিবারের


Feb 2025/House on the road.jpg

২০ বছর ধরে ব্যবহৃত একটি রাস্তার মাঝখানে ছাপড়া ঘর তুলে চলাচলে বাধা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে। এতে করে যাতায়াতে স্থানীয় অন্তত ১০০ পরিবারে মানুষ প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাচ্ছন। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের খড়বাড়িয়া কিন্ডারগার্টের উত্তর পাশের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন উপজেলার হরিপুর ইউনয়িনের কাতুলী গ্রামের জন রোজারিওর ছেলে কমল রোজারিও।

অভিযোগে জানা গেছে, চাটমোহর-পাবনা সড়কের খড়বাড়িয়া কিন্ডার গার্টেন স্কুলের উত্তরপাশে একটি সরকারি রাস্তা রয়েছে। রাস্তাটির দৈর্ঘ্য প্রায় দেড় কিলোমিটার। এলাকাবাসী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচলের স্বার্থে অন্তত ২০ বছর আগে রাস্তাটি করা হয়। নিজেরাই জমি দিয়ে রাস্তাটি করেন স্থানীয়রা। পরবর্তী বিভিন্ন সময় ওই রাস্তাটিতে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। সর্বশেষ দুই বছর আগে সরকারি প্রকল্প থেকে ৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকার মাটির কাজের একটি প্রকল্প ওই রাস্তায় বাস্তবায়ন করা হয়।

কিন্তু এত বছর পর এসে ১০-১২ দিন আগে রাস্তার দক্ষিণ পাশে কিন্ডারগার্টেন স্কুল সংলগ্ন জমির মালিক কমল রোজারিও রাস্তাটির উপর একটি টিনের ছাপড়া ঘর তুলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। এতে করে ভাদড়া বেড়পাড়া গ্রামের অন্তত ১০০ পরিবারের মানুষের চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। জমির মালিক বলেছেন ‘আগে তিনি জমি দিয়েছিলেন রাস্তার জন্য। এখন তিনি দেবেন না। তাই ঘর তুলেছেন।’

ভাদড়া বেড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা গোলজার হোসেন ও আব্দুর রহমান বলেন, ‘এত বছর ধরে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। কখনও কেউ বাধা দেয়নি। এই রাস্তা দিয়ে আমরা স্কুল, কলেজ, হাট-বাজারে যাতায়াত করি। ভ্যান সাইকেল চলাচল করে। কিন্তু রাস্তার মাঝখানে ঘর তুলে তিনি খুব খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এতগুলো মানুষকে কষ্ট দিয়ে তিনি কি সুখ পাচ্ছেন।’

সুশীল গমেজ ও শেলী কস্তা বলেন, ‘আমরা এখানে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে একসাথে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে যুগের পর যুগ বসবাস করে আসছি। কিন্তু হঠাৎ করে রাস্তার মাঝখানে ঘর তুলে আমাদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা মেনে নেয়া যায় না। আমরা বিষয়টির সমাধান চাই।’

একই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল্লাহ মিয়া বলেন, ‘যিনি এই কাজটি করেছেন জমির মালিক বলে সেই কমল রোজারিও এখানে বসবাসও করেন না। থাকেন আরেকটি ইউনিয়নের অন্য একটি গ্রামে। অথচ তিনি এখানে এসে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। ঘটনার পর আমরা কোনো উপায় না পেয়ে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে যাই। তিনি ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাসে এসি ল্যান্ডের কাছে অভিযোগ দিতে বলেন। পরে আমরা লিখিত অভিযোগ দিয়ে আসছি। কিন্ত এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কমল রোজারিও বলেন, ‘দেড় বছর আগে স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারদের নিয়ে বসেছিলাম। রাস্তাটির বেশিরভাগ জায়গা আমার জমির উপর দিয়ে। আমিতো সব জায়গা দিতে পারি না। মানবিক বিবেচনায় এক দেড় ফিট দিতে পারি। পাশের জমির মালিক যদি দেয় আমিও দেবো।’

তাহলে এত দিন পর এসে রাস্তার উপর ঘর তুললেন কেন- এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। 

চাটমোহর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান শাকিল বলেন, ‘যদি লিখিত অভিযোগ দিয়ে থাকে তাহলে তহশিলদারকে বলে দেওয়া হয়েছে। ওখানে গিয়ে দেখতে হবে বিষয়টা কি। বিষয়গুলো জানার পরে ব্যবস্থা নেয়া হবে। '

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাছের চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি সরেজমিনে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এসি ল্যান্ডকে বলা হয়েছে। আমি আবার বলে দিচ্ছি যাতে তিনি বিষয়টি দেখেন।’

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×