
ওসমান হাদির হত্যা দেশজুড়ে নতুন মাত্রার গর্জন তোলেছে। গতকাল রাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদজনিত বিক্ষোভের ঢেউ তোলার পর আজ (শুক্রবার) সকাল থেকেই শাহবাগে শুরু হয়েছে পথ অবরোধ ও প্রতিবাদ মিছিল।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ছাত্র-জনতা শাহবাগে একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। কেউ মিছিল নিয়ে আসছেন, কেউ নিজ উদ্যোগে যোগ দিচ্ছেন। হাতে পতাকা, মুখে জোরালো স্লোগান ‘ফ্যাসিবাদের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা এই বাংলায় হবে না’, ‘হাদি ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘আমরা সবাই হাদি হবো, যুগে যুগে লড়ে যাবো’ এই স্লোগানগুলো পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তুলেছে।
শনির আখড়া থেকে এসে মিছিলে যোগ দেন মাদ্রাসার ছাত্র আশফাকুর রহমান। তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন, “আমরা একজন সাচ্চা দেশপ্রেমিককে হারিয়েছি। রাতে ঘুমাতে পারিনি। প্রতিবাদ জানাতে সকালেই এখানে চলে এসেছি। ওসমান হাদির মতো দেশপ্রেমিক সাহসী মানুষকে হারিয়ে আমরা শোকাহত।”
রামপুরা থেকে শাহবাগে আসা ইমরুল কায়েস বলেন, “ওসমান হাদির মৃত্যু পুরো বাংলাদেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা শোককে শক্তিতে পরিণত করে এই হত্যার প্রতিশোধ নেব। হাদি ভাইয়ের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাব না।”
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়ানোর পর রাজধানী উত্তাল হয়ে ওঠে। দেশের বিভিন্ন জেলাতেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এই বিক্ষোভের সময়ে দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার ভবনে আগুন দেওয়া হয়। হামলার কারণে উভয় পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ থাকে।
ওসমান হাদির মৃত্যুতে অন্তর্বর্তী সরকার শনিবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।
হাদির ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছিল গত ১২ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচারণা শেষে ফেরার সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হন ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি। গুরুতর অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় এবং আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতালে (এসজিএইচ) নেওয়া হয়। সেখানেই গতকাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি জীবনাবসান করেন।