
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ভূত জরুরি পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আজ রবিবার( ২৩ নভেম্বর) উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ রেজাউল করিম (পিএইচডি)-এর সভাপতিত্বে আয়োজিত জরুরি সভায় সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ধারাবাহিক ভূমিকম্পে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে আগামীকাল ২৪ নভেম্বর (সোমবার) থেকে ২৭ নভেম্বর ২০২৫ (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের নিরাপদে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার সুবিধার্থে বিভাগীয় শহরসমূহে বিশেষ পরিবহন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল সকালেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নির্ধারিত সকল বাস বিভিন্ন বিভাগীয় শহরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন প্রশাসক, অধ্যাপক তারিক বিন আতিক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, "শিক্ষার্থীদের আতঙ্কমুক্ত পরিবেশে পরিবারের কাছে ফেরার জন্যই এই বিশেষ বাস সার্ভিস ব্যবস্থা করা হয়েছে।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরী সভায় জানানো হয়, আগামী ২৪ নভেম্বর (সোমবার) সকাল ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র আবাসিক হল ‘ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হল’ ত্যাগ করতে হবে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত হিসেবে, ৩০ নভেম্বর (রবিবার) থেকে ৪ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পরিচালিত হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন, সকল অনুষদের ডীন, ইনস্টিটিউট পরিচালকবৃন্দ, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং প্রক্টর। ভূমিকম্প-পরবর্তী ঝুঁকি নিরূপণ ও ভবিষ্যৎ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডীনকে আহ্বায়ক করে বুয়েটের বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা আগামী ৩ ডিসেম্বর (বুধবার) প্রতিবেদন জমা দেবে। প্রতিবেদন ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ৪ ডিসেম্বর আবার সভা অনুষ্ঠিত হয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখিত সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ও উন্মুক্ত লাইব্রেরি বন্ধ থাকবে, শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পরিবহন সেবা বন্ধ থাকবে (তবে বাস ব্যবস্থা শুধুমাত্র বাড়ি ফেরার জন্য), এবং প্রশাসনিক অফিসসমূহ যথারীতি খোলা থাকবে। জকসু নির্বাচন কার্যক্রম বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন।
ভূমিকম্পের পর থেকে পুরান ঢাকায় অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নেওয়া এসব পদক্ষেপকে গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রশাসনের প্রত্যাশা, শিক্ষার্থীরা যেন নিরাপদে পরিবারে ফিরে গিয়ে মানসিক স্বস্তি অর্জন করতে পারে।