
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ বিরতির পর অনুষ্ঠিত ছাত্রশিবিরের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে তীব্র রাজনৈতিক সমালোচনায় মুখর হন ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো এখন “ফ্যাসিবাদের ভাষায়” কথা বলছে এবং তাদের সহযোগীরা এখনও গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে রাবির কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে আয়োজিত নবীনবরণ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আপনারা খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের মতো ভুল করবেন না। ইসলামী ছাত্রশিবির আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করে না… মানুষের আজাদীর লড়াই ইসলামী ছাত্রশিবির কিয়ামত পর্যন্ত চালিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।”
তিনি আরও দাবি করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত পূর্বের সরকারের নেতাদের বিচার করে দেশে এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা। তার ভাষ্য, যারা ফ্যাসিবাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে, তাদের আইনের হাতে তুলে দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাদিক কায়েম বলেন, “জুলাই বিপ্লবে রাজশাহী মহানগরের ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আলী রায়হান ভাইও শহীদ হয়েছিল… বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে খুনি হাসিনা, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও তার দোসররা ক্যাম্পাসগুলোকে কনসেনট্রেট ক্যাম্পে পরিণত করেছিল।”
তিনি অভিযোগ করেন, সেই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইসলাম চর্চা থেকে শুরু করে মৌলিক অধিকার পর্যন্ত সবই বিঘ্নিত হয়েছিল। তিনি বলেন, বহু শিক্ষার্থীর আত্মত্যাগে “নতুন বাংলাদেশ” পাওয়া গেলেও স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও প্রকৃত মুক্তি অর্জিত হয়নি।
সাদিক কায়েম ছাত্রসংগঠনগুলোর অহংকার ও বিচ্যুতির সমালোচনা করে বলেন, “দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জুলাইয়ের স্পিরিট ধারণ করে নতুন বাংলাদেশ গঠনে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ জারি রাখতে হবে।”
প্রায় সাড়ে তিন হাজার নবীন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে আয়োজনটি ক্যাম্পাসের ভেতরে অনুষ্ঠিত হলো প্রায় চার দশকেরও বেশি সময় পর। সর্বশেষ রাবিতে শিবিরের নবীনবরণ হয় ১৯৮২ সালের ১১ মার্চ।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাকসু ও চাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম এবং ইব্রাহিম হোসেন রনি। প্রধান আলোচক ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।