
সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর মুক্তির পথে আর কোনো বাধা নেই। রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন কার্যকর থাকছে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। আইনজীবীরা জানান, এই আদেশের পর লতিফ সিদ্দিকীকে কারামুক্তিতে আর কোনো আইনি প্রতিবন্ধকতা নেই।
লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।
এর আগে ৬ নভেম্বর হাইকোর্টের অন্য একটি বেঞ্চ, বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি সগীর হোসেনের নেতৃত্বে, শাহবাগ থানার মামলায় তাকে জামিন দেন।
উল্লেখ্য, ২৯ আগস্ট ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হকের আদালত একই মামলায় লতিফ সিদ্দিকী ও ঢাবি অধ্যাপক কার্জনসহ মোট ১৬ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলাটি দায়ের করেন শাহবাগ থানার এসআই মো. আমিরুল ইসলাম।
অন্যান্য আসামির মধ্যে আছেন মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন (৭৩), মঞ্জুরুল আলম (৪৯), কাজী এটিএম আনিসুর রহমান বুলবুল (৭২), গোলাম মোস্তফা (৮১), মো. মহিউল ইসলাম ওরফে বাবু (৬৪), মো. জাকির হোসেন (৭৪), মো. তৌছিফুল বারী খাঁন (৭২), মো. আমির হোসেন সুমন (৩৭), মো. আল আমিন (৪০), মো. নাজমুল আহসান (৩৫), সৈয়দ শাহেদ হাসান (৩৬), মো. শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার (৬৪), দেওয়ান মোহম্মদ আলী (৫০) এবং মো. আব্দুল্লাহীল কাইয়ুম (৬১)।
সেই সময়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক তৌফিক হাসান আসামিদের কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন, কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দোহা সুমন তা প্রত্যাখ্যান করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুলিশ অভিযোগ করে, ২৮ আগস্ট সকাল ১০টায় ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটির অডিটরিয়ামে ‘মঞ্চ ৭১’-এর আয়োজন করা একটি গোলটেবিল বৈঠকে লতিফ সিদ্দিকী দেশকে অস্থিতিশীল করার এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য প্রদান করেন এবং অন্যান্যকে উসকানিও দেন। বৈঠকে অংশ নেওয়া ৭০ থেকে ৮০ জনের মধ্যে ১৬ জনকে পরে আটক করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানায়, আগস্টে আত্মপ্রকাশ করা ‘মঞ্চ ৭১’ সংগঠনের লক্ষ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা প্রতিহত করা এবং জনগণকে আত্মত্যাগের জন্য প্রস্তুত করা। তবে পুলিশের দাবি, এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছিল।