
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় এক চাঞ্চল্যকর দাবি তুলে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দাদের পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট হলরুমে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
পরওয়ার বলেন, ‘বামপন্থি, কলকাতাকেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবী, ভারতীয় তাবেদার নানাভাবে জামায়াতে ইসলামীকে হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী করে থাকেন। কিন্তু ইতিহাসের এখন বহু তথ্য, বহু সত্য বেরিয়ে এসেছে। এই হত্যাকাণ্ড ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী, ভারতীয় গোয়েন্দাদের একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ। কারণ ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের প্রাক্কালে এই হত্যাকাণ্ড হলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘৮ ডিসেম্বর বিজয়ের আগে ভারতের ৩৬ সেনা ঢাকায় অবতরণ করেছিল। রেকর্ড আছে। তখন রাজধানী ঢাকাসহ পূর্বপাকিস্তান ভারতের সেনাদের নিয়ন্ত্রণে। সেই সময় পাকিস্তানের সৈন্য, রাজাকার আলবদর, স্বাধীনতাবিরোধী যাদেরকে বলা হয়, ওই বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতীয় সেনারা যখন পুরো নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিলো তখন তারা তো নিজেদের আত্মসমর্পণ, নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যেতে ব্যস্ত ছিল। কে কাকে খুঁজে হত্যা করবে, নিজেদের বাঁচাতেই তো তারা ব্যস্ত ছিল।’
জামায়াতের এই নেতা দাবি করেন, ‘রাও ফরমান আলী, ভারতের লেখকরা বলেছেন, ভারতীয় সৈন্যরা যখন ঢাকাসহ পূর্ব পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিলো, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১৪ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করতে চেয়েছিল। ভারতীয় সেনাপ্রধানের ইচ্ছায় আরও দুই দিন পিছিয়ে ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের দিন ঠিক করা হয়।’
তিনি বলেন, সেই প্রেক্ষাপটে ১৪ ডিসেম্বর পরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রথিতযশা সাংবাদিক, শিল্পী ও লেখকদের—যারা স্বাধীন বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারতেন—বেছে বেছে হত্যা করা হয়।
ভারতের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে পরওয়ার বলেন, ভারত এই দেশকে ভালোবেসে বা ‘এ দেশের জনগণের কল্যাণে স্বাধীনতার জন্য সাহায্য করেনি’। তার ভাষ্য অনুযায়ী, ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের কাছে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই তারা মুক্তিযুদ্ধে এগিয়ে আসে এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও যেন চিরদিন অনুগত থাকে—এমন প্রত্যাশাই তাদের ছিল।