
ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও কংগ্রেস দলের লোকসভার সদস্য শশী থারুর বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্টে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের খবরাখবর নিয়ে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে পরিকল্পিতভাবে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা শুধু দুটি গণমাধ্যমের ওপর আঘাত নয়; বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং একটি বহুমাত্রিক সমাজের ভিত্তির ওপর চরম আঘাত। আমি সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম ও অন্যান্য সাহসী সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।’
থারুর উল্লেখ করেন, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এই ধরনের সংঘাত ও অসহিষ্ণুতার পরিবেশ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য উদ্বেগজনক সংকেত বহন করছে।
তিনি আরও বলেন, ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকির কারণে খুলনা ও রাজশাহীতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের ভিসা পরিষেবা স্থগিত হতে বাধ্য হওয়া একটি বড় সমস্যা। এই অচলাবস্থা সরাসরি শিক্ষার্থী, রোগী ও সাধারণ পরিবারগুলোর ওপর প্রভাব ফেলেছে, যারা সীমান্ত পারাপারের স্বাভাবিক পরিস্থিতির প্রত্যাশা করছিল।
শশী থারুর পোস্টে বিশেষভাবে তিনটি বিষয়ে সরকারের মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে:
প্রথমত, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের এমন পরিস্থিতিতে রাখা উচিত নয়, যেখানে তাদের জীবন বাঁচাতে মরিয়া হয়ে বার্তা দিতে হয়, আর সেই সময় তাদের কার্যালয় জ্বলতে থাকে। সংঘবদ্ধ হামলাকারীদের কোনোভাবেই বরদাশত করা যাবে না।’
দ্বিতীয়ত, কূটনৈতিক মিশনগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। জনগণের মধ্যে পারস্পরিক গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোকে নিরাপদ রাখা অপরিহার্য।
তৃতীয়ত, শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। থারুর মতে, ‘ন্যূনতম গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রেখে এ উত্তরণকাল অতিক্রম করতে হলে নিয়ন্ত্রণহীন জনতার শাসনের বদলে গঠনমূলক সংলাপের পথ বেছে নিতে হবে। এটি নিশ্চিত করতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ব্যক্তিগতভাবে নেতৃত্ব দিতে হবে।’
শেষে তিনি লেখেন, ‘বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পুরো অঞ্চলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রত্যাশা করি, শান্তি ফিরে আসুক ও এমন এক নিরাপদ পরিবেশ তৈরি হোক, যেখানে জনগণের কণ্ঠস্বর কোনো সহিংসতা বা হুমকির মধ্য দিয়ে নয়; বরং ব্যালটের মাধ্যমে প্রতিফলিত হবে।’