ভারতের রাজনীতি ভোট চুরি ও ভোটার তালিকায় কারচুপি নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী দাবি করেছেন, তার কাছে এমন প্রমাণ রয়েছে যা প্রকাশিত হলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের সামনে মুখ দেখাতে পারবেন না।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম স্ক্রল.ইন জানায়, রাহুল গান্ধী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, শিগগিরই তার দল ভোট চুরির প্রমাণ হিসেবে একটি “হাইড্রোজেন বোমা” উন্মোচন করবে। তিনি বলেন, এই তথ্য সামনে এলে মোদি সরকারের জন্য পরিস্থিতি ভীষণ হবে।
বিহারের পাটনায় ভোটাধিকার যাত্রার সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাহুল অভিযোগ করেন, মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল আসনে ভোট চুরি হয়েছে। তিনি বলেন, তার দল ইতোমধ্যে প্রমাণ দিয়েছে কীভাবে মহাদেবপুরা বিধানসভা এলাকায় এই কারচুপি সংঘটিত হয়েছে।
বিজেপি নেতা রবি শঙ্কর প্রসাদ এই অভিযোগকে দায়িত্বজ্ঞানহীন আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ভেতরে বা বাইরে যেখানেই রাহুল গান্ধীর কথা শুনি না কেন, বোঝার জন্য সময় লাগে উনি আসলে কী বলতে চাইছেন। পরমাণু বোমা আর হাইড্রোজেন বোমার সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক কোথায়? বিরোধী দলনেতা হিসেবে নিজেকে কেন ছোট করছেন?
এর আগে ৭ আগস্ট রাহুল জানিয়েছিলেন, তার দল ছয় মাস ধরে মহাদেবপুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা পরীক্ষা করেছে। সেখানে এক লাখের বেশি অনিয়ম ধরা পড়েছে। তার দাবি, এসব অনিয়মে নির্বাচন কমিশন বিজেপির সঙ্গে যোগসাজশ করেছে।
রাহুলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী:
১১,৯৬৫ জনের নাম ডুপ্লিকেট, ৪০,০০৯ জন ভোটারের ঠিকানা ভুয়া বা অকার্যকর, ১০,৪৫৪ জন একই ঠিকানায় নিবন্ধিত, ৪,১৩২ জনের ছবি অকার্যকর, ৩৩,৬৯২ জন ভোটারের ক্ষেত্রে ফরম-৬-এর অপব্যবহার। ফরম-৬ হলো নতুন ভোটার নিবন্ধনের আবেদনপত্র।
রাহুল আরও অভিযোগ করেছেন, ২০২৪ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত মহারাষ্ট্র নির্বাচনে শৈল্পিক কারচুপি হয়েছে এবং জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দখল করা হয়েছে। সেই নির্বাচনে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন মহা বিকাশ আগাড়ি জোটকে পরাজিত করেছিল বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট।
তবে নির্বাচন কমিশন এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। গত ১৪ আগস্ট কমিশন রাহুলের মহাদেবপুরা-সংক্রান্ত দাবি ভুল ও বিভ্রান্তিকর বলে উল্লেখ করে। এর আগে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কমিশন জানিয়েছিল, ভোটের ফলাফল নিয়ে হতাশ রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ সম্পূর্ণ হাস্যকর।