
গুলশান থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিনকে নতুন করে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জোনাইদের আদালত এই আদেশ দেন।
আদালতের কার্যক্রম শেষে বিষয়টি নিশ্চিত করেন গুলশান থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক মোক্তার হোসেন।
এর আগে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গেরিলা প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত অভিযোগে ভাটারা থানার একটি মামলায় গত ৬ আগস্ট সুমাইয়া জাফরিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ৭ আগস্ট তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে ১২ আগস্ট তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
ডিবি পুলিশের গুলশান জোনাল টিমের পরিদর্শক মোজাম্মেল হক মামুন গত ১১ ডিসেম্বর গুলশান থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের জবানবন্দি এবং স্থানীয় তদন্তে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, কারাগারে থাকা সুমাইয়া তাহমিদ জাফরিন এ ঘটনায় মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের দেশের সার্বভৌমত্ব ও জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টায় একটি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের অর্থদাতা, পরামর্শদাতা ও নির্দেশদাতা হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে তাকে নিষিদ্ধ সংগঠনের সক্রিয় সদস্য হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছে। তদন্তে আরও বলা হয়, তিনি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত সদস্যদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকেন এবং নিষিদ্ধ সংগঠনের প্রভাবশালী নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। প্রাথমিক তথ্যে আরও উঠে এসেছে, সারা দেশে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীদের সংগঠিত করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর লক্ষ্যেও তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো প্রয়োজন বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন আদালতে গ্রেপ্তার দেখানোর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন। শুনানি শেষে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত ২২ এপ্রিল সকালে গুলশান-১ এলাকার জব্বার টাওয়ারের পাশে সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ এবং কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ব্যানারে ৩০ থেকে ৩৫ জন বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় তারা দেশের সার্বভৌমত্ব ও জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন স্লোগান দেন, যার মধ্যে দেশবিরোধী স্লোগানও ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে, তবে কয়েকজন পালিয়ে যায়। ওই ঘটনার পরদিনই গুলশান থানায় সংশ্লিষ্ট মামলা দায়ের করা হয়।