
পরপর কয়েক দফা ভূমিকম্পের ঝাঁকুনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক তৈরি করেছে। প্রথমে মাত্র এক দিনের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত থাকলেও পরিস্থিতি দ্রুত বদলে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত ১৫ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে। রোববার সকাল থেকেই এই সিদ্ধান্তের পর আবাসিক শিক্ষার্থীরা লাগেজ হাতে হল ছাড়তে শুরু করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, দুই সপ্তাহের জন্য সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত থাকবে এবং হলে থাকা শিক্ষার্থীদের দ্রুত হল খালি করতে হবে। হঠাৎ এ নির্দেশে বহু শিক্ষার্থী অসন্তোষ প্রকাশ করে বলছেন, জরুরি আবাসনের বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া তাদের বের করে দেয়া সমাধান হতে পারে না।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু আখের সৈকত বলেন, “হলগুলো বছরের পর বছর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ভূমিকম্পের পর আতঙ্ক বেড়ে গেছে ঠিকই, কিন্তু সবাইকে দুই সপ্তাহের নোটিশে বের করে দেওয়াটা সমাধান নয়। কোথায় থাকব, তা নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি।”
হল বন্ধের প্রতিবাদে শনিবার রাত থেকেই কয়েক শ শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছেন। তাদের দাবি, হলে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার আগে নিরাপদ আবাসনের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে হবে।
এক ছাত্রী বলেন, “ঝুঁকির জায়গায় আমরা থাকতে চাই না। কিন্তু কোথায় যাব, সেটার উত্তর প্রশাসন দিতে পারছে না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইফুদ্দীন আহমেদ জানান, সিন্ডিকেটের জরুরি বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় আগামী ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে এবং শিক্ষার্থীদের রোববার বিকেল ৫টার মধ্যে হল ছাড়তে বলা হয়েছে। ভবনগুলোর কাঠামোগত ঝুঁকি দ্রুত মূল্যায়ন করে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে পুনরায় শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হবে।
ভূমিকম্পে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ইতোমধ্যে কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সন্ধ্যায় ৪ দশমিক ৩ মাত্রার কম্পন অনুভূত হলে সিঁড়ি বেয়ে দ্রুত নামার সময় ছয় শিক্ষার্থী আহত হন, যাদের বেশিরভাগই নারী। এর আগের দিন শুক্রবারের তীব্র ভূমিকম্পে আতঙ্কে নিচে লাফ দিয়ে আরও তিন শিক্ষার্থী আহত হন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সিন্ডিকেট ছুটি ঘোষণা ও হল খালি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু থাকবে।