
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে বড় অঙ্কের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় সাবেক উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ রবিবার আদালতে হাজিরা দিয়েছেন।
মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় আদালত পরবর্তী তারিখ ২৬ নভেম্বর নির্ধারণ করেছেন। ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন।
কারাগার থেকে এনে আজ তাকে আদালতে হাজির করা হয়। হাজিরা শেষে কলিমউল্লাহকে ফের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
এর আগে, চলতি বছরের ৭ আগস্ট রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসা থেকে কলিমউল্লাহকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এরপর ২৭ আগস্ট মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া। রিমান্ড শেষে তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন ইসলাম গত ১৮ জুলাই এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় কলিমউল্লাহ ছাড়াও আরও চারজনকে আসামি করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা একে অপরের সঙ্গে যোগসাজশ করে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে অনুমোদিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) উপেক্ষা করে নকশা পরিবর্তন করেন। এতে তারা ৩০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের চুক্তি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অনুমোদন ছাড়াই সম্পাদন করেন।
এছাড়া, ঠিকাদারের রানিং বিল থেকে কেটে রাখা নিরাপত্তা জামানতকে এফডিআর আকারে ব্যাংকে জমা রেখে সেই অর্থ ঠিকাদারকে ঋণ দেওয়ার জন্য 'নো অবজেকশন সার্টিফিকেট' অনুমোদন দেন তারা। এতে বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের মোট ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তিতে অগ্রিম অর্থ প্রদানের বিধান না থাকলেও সে ধরনের বিল প্রদান করা হয়। এমনকি, অগ্রিম অর্থ পরিশোধের আগেই বিলের বিপরীতে দেওয়া ব্যাংক গ্যারান্টি অবমুক্ত করা হয়।
সরকারি ক্রয় নীতিমালার তোয়াক্কা না করে প্রথম পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের দেওয়া নকশা উপেক্ষা করে দ্বিতীয় একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রস্তাবিত দরের তুলনায় অতিরিক্ত মূল্য দেখানো হলেও সরকারি ক্রয়বিধি পিপিআর-২০০৮ অনুযায়ী দরপত্র মূল্যায়ন করা হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে।
কলিমউল্লাহ ছাড়া মামলার অন্য চার আসামি হলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও প্রকল্প পরিচালক এ কে এম নূর-উন-নবী, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদার মো. আ. সালাম বাচ্চু এবং এম. এম. হাবিবুর রহমান।