
সকালের বৃষ্টিতে খানিকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে রাজধানীবাসী। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় থাকা ঢাকা বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) কিছুটা পরিষ্কার বাতাসে শ্বাস নিতে পেরেছে।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার-এর তথ্য অনুযায়ী, সকাল ৯টায় প্রকাশিত বায়ুদূষণের সূচকে ১১৯টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান ছিল ৫৮তম।
এই সময়টিতে বায়ুমানের একিউআই স্কোর ছিল ৫৮, যা আগের দিনের তুলনায় অনেকটাই সহনশীল।
শীর্ষে রয়েছে উগান্ডার রাজধানী কাম্পালা, যেখানে একিউআই স্কোর ছিল ১৫৩—এটি ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের কিনশাসা শহর, স্কোর ১৫২। সমান স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপলিস শহর।
আইকিউএয়ার-এর মানদণ্ড অনুযায়ী, ০-৫০ স্কোরকে ভালো, ৫১-১০০ মাঝারি এবং ১০১-১৫০ স্কোরকে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ বিবেচনা করা হয়। ১৫১-২০০ স্কোর হলে তা সাধারণের জন্যই ‘অস্বাস্থ্যকর’, আর ২০১-৩০০ এর মধ্যে স্কোর হলে তা ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। ৩০১-এর বেশি হলে একিউআইকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়, যা স্বাস্থ্যঝুঁকির মাত্রা চরম পর্যায়ে নিয়ে যায়।
বাংলাদেশে একিউআই স্কোর নির্ধারণে ব্যবহৃত হয় পাঁচটি প্রধান দূষক উপাদান: পিএম২.৫, পিএম১০, নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড (NO₂), কার্বন মনোক্সাইড (CO), সালফার ডাইঅক্সাইড (SO₂) ও ওজোন (O₃)।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, বায়ু দূষণ মানবদেহে মারাত্মক প্রভাব ফেলে—স্ট্রোক, হৃদরোগ, ফুসফুসের ক্যানসার, শ্বাসকষ্টজনিত রোগ এবং তীব্র সংক্রমণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।
বিশেষজ্ঞরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলছেন, ঢাকার দূষিত বাতাস নাগরিকদের দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলছে। তারা বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন। শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থদের ক্ষেত্রে বাড়ির বাইরে বের হওয়া কমানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
তারা আরও বলছেন, শহরের সবুজায়ন এবং বৃক্ষরোপণ বাড়ানো ছাড়া বায়ুদূষণ কমানোর কার্যকর বিকল্প নেই।