
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অধিকাংশ ছাত্র সংগঠন ছাত্র রাজনীতির পক্ষে মত প্রকাশ করলেও দুই সংগঠন হলে রাজনীতির বিরোধিতা করেছে। অন্যদিকে, ইসলামী ছাত্রশিবিরকে আমন্ত্রণ জানানোয় তিনটি বামপন্থী সংগঠন সভা বর্জন করেছে।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে প্রশাসন ও ২২টি ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। এতে অংশ নেয় ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস), ছাত্র অধিকার পরিষদ, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী ও বাসদ), ছাত্র ফেডারেশন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংসদসহ অন্যান্য সংগঠন।
সভা শুরু হওয়ার মাত্র ১০ মিনিট পরই বামপন্থী তিন সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ), সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (বাসদ) ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল ইসলামী ছাত্রশিবিরের উপস্থিতি নিয়ে প্রতিবাদ করে সভা বর্জন করে।
অপরদিকে, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ও ছাত্র অধিকার পরিষদ হলে ছাত্র রাজনীতির বিরোধিতা করেছে। বাগছাসের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের ফেসবুকে জানান, তারা হলে ও একাডেমিক এলাকায় ছাত্র সংগঠনের কার্যক্রম চায় না কারণ এটি প্রকাশ্য ও গোপন রাজনীতির উদাহরণ। ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাও সমকালের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বলেন, “গত এক বছরে হলে ছাত্র রাজনীতির কারণে ছাত্রদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। ছাত্রদলসহ কিছু সংগঠন শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করতে পারেনি, তাই আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়াকে সম্মান করি।
আন্দোলনকারী তিন সংগঠনের সভাপতিরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে আমন্ত্রণ জানানো প্রসঙ্গে বিক্ষোভ জানান। ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, “ক্যাম্পাসে পরিবেশ পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক শিবির এবং জাতীয় ছাত্র সমাজের রাজনীতি নিষিদ্ধ। তারপরও কেন শিবিরকে আমন্ত্রণ জানানো হলো? উপাচার্যের দেয়া পরিবর্তিত পরিস্থিতির” জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাঁরা সভা বর্জন করেন।
রাতেই এই তিন সংগঠন উপাচার্যের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে। একই সময়ে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসুও বক্তব্যের পর সভাস্থল ত্যাগ করেন।
উপাচার্য বলেন, ডাকসু নির্বাচনে ছাত্র সংগঠনগুলোর সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন। তবে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা আছে, তাই যেন কোনো পক্ষ অন্য পক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষে না জড়িয়ে পড়ে।
এই বিতর্কিত সভা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্র রাজনীতি এবং ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।