
গত বছরের জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় থেকে দেশের শোবিজ অঙ্গনে তৈরি হওয়া বিভক্তি এখনও বিদ্যমান। সেই প্রেক্ষাপটেই সম্প্রতি নতুন করে মুখোমুখি হয়েছেন দুই অভিনয়শিল্পী—বাঁধন ও সোহানা সাবা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের মধ্যে সংঘাতের ইঙ্গিত মিলতেই শুরু হয় ব্যাপক অনলাইন বিতর্ক। নেটিজেনদের একাংশের মতে, এই বিবাদের শিকড় সেই জুলাই আন্দোলনের সময়কার মতবিরোধে গাঁথা।
আন্দোলনের সময় রাজপথে সরব উপস্থিতি ও শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রকাশ্য সমর্থনের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন বাঁধন। সোশ্যাল মিডিয়ায় সমর্থনের পাশাপাশি তাকে নানা ট্রল ও কটাক্ষের মুখেও পড়তে হয়। অন্যদিকে, সাবা যুক্ত ছিলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন এক আলোচনায়—সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে আলোচিত 'আলো আসবেই' গ্রুপের ঘটনায় তার নাম উঠে আসে।
তাদের চলমান অনলাইন বিতর্ক শুরু হয় গত বৃহস্পতিবার। একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে ঘটনাটি সামনে আসে। বাঁধনের একটি পোস্টে এক নারীর মন্তব্যের স্ক্রিনশট নিজের টাইমলাইনে শেয়ার করেন সোহানা সাবা। তিনি লেখেন, “এই কমেন্টটা আপু ডিলিট করে দিয়েছেন... হয়তো দিদিটিকে ব্লকও করেছেন... ভাগ্যক্রমে আমার টাইমলাইনে ভেসে উঠেছিল, তাই সঙ্গে সঙ্গে স্ক্রিনশট নিয়ে রেখেছিলাম।”
শেয়ার করা সেই মন্তব্যে বাঁধনকে উদ্দেশ করে লেখা হয়, “সারা জীবন ড্রামাবাজি করে সতী সাজতে চেয়েছেন... আপনি আপাদমস্তক একজন ভণ্ড। আপনার পুরো জগৎটা ঘোরে আপনাকে ঘিরেই। কী জীবন আপনার! করুণা লাগে আপনাকে দেখে। কেউ যদি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ হতেন, তাহলে কলকাতায় গিয়ে ব্যক্তিজীবনের কেচ্ছা গাইতেন না।”
পোস্টটির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সাবা মন্তব্য ঘরে লেখেন, “প্রথমে ভেবেছিলাম স্ক্রিনশট নিয়ে কিছু পোস্ট করব না। কিন্তু পরে মনে হল এটা তো পাবলিক পোস্ট, যে কেউ নিতে পারে, শেয়ারও করতে পারে। তাই আমিও করলাম।”
এরপর বাঁধনও ফেসবুকে একটি দীর্ঘ প্রতিক্রিয়া জানান। যদিও তিনি সরাসরি কারো নাম উল্লেখ করেননি, তার লেখায় ইঙ্গিত স্পষ্ট—এই আক্রমণ এসেছে পরিচিত সহকর্মীদের দিক থেকেই।
তিনি লিখেন, “আমার কিছু সহকর্মী, যাদের সঙ্গে আমি কাজ করেছি, মঞ্চে দাঁড়িয়েছি, যাদের বিশ্বাস করতাম, তারা ইন্টারনেটে আমার ওপর নির্মম ও অপমানজনক আক্রমণ চালাচ্ছেন। তাদের কথাগুলো ছিল অমানবিক, উদ্দেশ্য ছিল আমাকে ছোট করা। তারা শুধু আমাকে নয়, আমি যা কিছুতে বিশ্বাস করি, সেগুলোকেও অসম্মান করছে। এই তালিকায় জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্তরাও আছেন।”
বাঁধনের এই প্রতিক্রিয়ার পর অনেকেই মনে করছেন, এটি মূলত সোহানা সাবাকে লক্ষ্য করেই লেখা। ফলে দুই অভিনয়শিল্পীর এই সামাজিক মাধ্যমভিত্তিক সংঘাত এখন টক অব দ্য টাউন হয়ে উঠেছে। শোবিজ অঙ্গনের আলোচনায় এখন সবচেয়ে উত্তপ্ত বিষয় এটি।