
ইসরাইলের হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় অবরুদ্ধ গাজায় হামলায় নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ১১২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজা শহরের তিনটি আলাদা স্কুলে আশ্রয় নেওয়া নির্যাতিত ও বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো এসব হামলায় ৩৩ শিশু ও নারী নিহত হয়েছেন।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে আরও ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইল।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ১৮ মার্চ ইসরাইল গাজায় যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার ফিলিস্তিনি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খবর আলজাজিরার।
ইসরাইলি বাহিনীর হাতে ১৫ জন চিকিৎসাকর্মী ও জরুরি সেবাকর্মীর সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ড – যা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে - এটিকে ‘গাজায় চলমান যুদ্ধের অন্যতম অন্ধকারতম মুহূর্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সভাপতি।
এদিকে, গাজা সিটির তুফ্ফাতে গণহত্যা চালিয়েছে দখলদার ইসরাইল। বৃহস্পতিবার আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হওয়া একটি স্কুলে চারটি মিসাইল ছুড়েছে দখলদাররা। এতে অন্তত ২৯ জন নিহত ও শতাধিক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
শুধুমাত্র একটি আশ্রয়কেন্দ্রে ২৯ জনসহ এক দিনে ১০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইলি বাহিনী।
গাজার জরুরি উদ্ধারকারী সংস্থার এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘ইসরাইলের এই গণহত্যা বন্ধে এখনই বিশ্বকে এগিয়ে আসতে হবে। যেন তারা আর কোনো নারী, শিশু এবং বৃদ্ধকে হত্যা করতে না পারে। তিনি বলেন, এটি শুধুমাত্রই একটি গণহত্যা নয়। এটি ইসরাইলের উন্মত্ততা। তারা আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা নারী ও শিশুদের হত্যার জন্য পাগল। দার আল-আরকাম স্কুলে ইসরাইলি বাহিনী সরাসরি হামলা চালিয়েছে।’
ভয়াবহ এ হামলায় আহত হওয়া শতাধিক মানুষকে আল আহলি-আরব হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
উদ্ধারকারী সংস্থার মুখপাত্র আরও বলেন, ‘এখানে যা হচ্ছে সেটি বিশ্ববাসীর জন্য জেগে ওঠার একটি ডাক। নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ এবং এই গণহত্যা এখনই বন্ধ হওয়া উচিত। শিশুরা এখানে ঠান্ডা মাথায় হত্যার শিকার হচ্ছে।’
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরাইল। তবুও থেমে নেই তাদের বর্বরতা।