
দীর্ঘদিনের কড়াকড়ি অবস্থান থেকে ধাপে ধাপে সরে আসার অংশ হিসেবে সৌদি আরব নীরবে তাদের একমাত্র অ্যালকোহল বিক্রয়কেন্দ্রে প্রবেশাধিকার বাড়িয়েছে। নতুন ব্যবস্থায় দেশটিতে বসবাসরত ধনী অমুসলিম বিদেশি নাগরিকদের অ্যালকোহল কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না থাকলেও বিষয়টি ইতোমধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে। এর প্রভাব হিসেবে রাজধানী রিয়াদের ডিপ্লোম্যাটিক কোয়ার্টারে অবস্থিত অচিহ্নিত ও গোপন ওই দোকানের সামনে গাড়ি ও মানুষের দীর্ঘ সারি দেখা যাচ্ছে।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে চালু হওয়া দোকানটি শুরুতে কেবল অমুসলিম কূটনীতিকদের জন্য সীমাবদ্ধ ছিল। তবে নতুন নিয়ম অনুযায়ী এখন প্রিমিয়াম রেসিডেন্সধারী অমুসলিম বিদেশিরাও এখান থেকে অ্যালকোহল কিনতে পারবেন। এই বিশেষ আবাসন অনুমতিপত্র সাধারণত দক্ষ পেশাজীবী, বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাদের দেওয়া হয়।
ইসলামের পবিত্রতম স্থানগুলোর আবাসভূমি সৌদি আরবে ১৯৫০-এর দশকের শুরু থেকেই অ্যালকোহল নিষিদ্ধ। বিশ্লেষকদের মতে, দোকানটি কঠোর নিয়ন্ত্রণের আওতায় সীমিত পরিসরে অ্যালকোহল বিক্রির একটি পরীক্ষামূলক উদ্যোগ।
সৌদি আরবের কার্যত শাসক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং তার পিতা বাদশাহ সালমান দেশটিতে ব্যাপক সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার বাস্তবায়ন করে চলেছেন। এসব উদ্যোগের লক্ষ্য পর্যটন খাত সম্প্রসারণ, আন্তর্জাতিক ব্যবসা আকর্ষণ এবং তেলের ওপর নির্ভরতা কমানো।
ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক এই রাষ্ট্র ইতোমধ্যে সিনেমা হল চালু, নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি এবং বড় পরিসরের সংগীত উৎসব আয়োজনের মতো পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে রাজনৈতিক মতপ্রকাশ ও ভিন্নমত প্রকাশের ক্ষেত্রে এখনো কঠোর দমননীতি কার্যকর রয়েছে, যেখানে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধানও আছে।
টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সাধারণ সৌদি নাগরিকদের জন্য অ্যালকোহল নিষেধাজ্ঞা এখনো পুরোপুরি বহাল রয়েছে।