
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানিয়েছেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথে রয়েছে। তবে তিনি বলেন, “এই পদক্ষেপটি আমরা গত সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের উত্তরাধিকার হিসেবে গ্রহণ করেছি।”
উপদেষ্টা আরও জানান, “গত সরকারের সময়ে প্রকাশিত জিডিপি, ব্যক্তিগত আয়, মাতৃস্বাস্থ্য ও অন্যান্য সামাজিক সূচকগুলো বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। বাস্তবিক অর্থে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে বাংলাদেশ এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত নয়।”
এ মন্তব্য তিনি করেছেন বুধবার সকালে প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি)-তে নাগরিক উদ্যোগ ও পিপলস হেলথ মুভমেন্টের আয়োজিত ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যত নির্ধারণী উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণ ও দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বিষয়ে সতর্ক পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায়।
ফরিদা আখতার বলেন, “যদিও স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পরিসংখ্যান রয়েছে, বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। আগামী ২০২৬ সালের নভেম্বর মাসে আমাদের দেশের উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা গ্রহণের সময় আসবে এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, এলডিসি উত্তরণের ফলে শুল্ক ও জিএসপি সুবিধার প্রভাব কোথায় বৃদ্ধি পাবে এবং কোথায় হ্রাস পাবে তা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। এছাড়া আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্যও প্রস্তুতি জরুরি।
ফরিদা আখতার বলেন, “বিদেশ থেকে স্বল্পমূল্যে গরুর মাংস আমদানি করলে দেশীয় গবাদিপশুর বাজারে প্রভাব পড়বে। লাখ লাখ খামারি, বিশেষ করে গরিব মহিলারা যারা গরু লালন-পালন করে উদ্যোক্তা হিসেবে অবদান রাখছেন, তাদের ক্ষতি হবে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “আমরা বিদেশ থেকে মাংস আমদানি কমানোর চেষ্টা করছি, কারণ আমদানিকৃত মাংসের মাধ্যমে জুনোটিক রোগের প্রবেশের ঝুঁকি রয়েছে।”
উপদেষ্টা আরও বলেন, সাগরের সি উইড ও কুচিয়া রপ্তানির ক্ষেত্রে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, “স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ হিসেবে আমাদের আমদানি হ্রাস করতে হবে এবং দেশীয় উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।”
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহম্মদ, থার্ড ওয়ার্ল্ড নেটওয়ার্কের জেনেভাভিত্তিক লিগ্যাল অ্যাডভাইজার ও সিনিয়র রিসার্চার সানিয়া রিড স্মিথ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. জাহেদ মাসুদ এবং অ্যাডভোকেট তাসলিমা জাহান।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নাগরিক উদ্যোগের কো-অর্ডিনেটর বারাকাত উল্লাহ মারুফ।