
অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম নিয়ে নানা জল্পনার মধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন পরিষ্কার জানালেন, দায়িত্ব গ্রহণের সময় তাদের ওপর নির্বাচন আয়োজনের কোনো শর্ত আরোপ করা হয়নি।
সোমবার ৮ ডিসেম্বর সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক বছরের সাফল্য উপস্থাপন করতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তার অবস্থান জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, এখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে দলগুলো নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, এই অস্থিরতা কি বাংলাদেশের জন্য নতুন কোনো অভিজ্ঞতা? তার ভাষায়, তথাকথিত ওয়ান/ইলেভেনের পরেও এমন পরিস্থিতি দেখা গিয়েছিল এবং রাজনৈতিক দলে দলে কথার লড়াই তখনও ছিল। তিনি বলেন, “আমরা কথা বলার জাতি, কথা না বলে থাকতে পারি না।”
সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি জানান, রাজনৈতিক ক্যাওয়াজ বলার মতো পরিস্থিতি তখনই হবে যখন সরকার এক দিকে এবং সব রাজনৈতিক দল অন্য দিকে অবস্থান নেবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমাদের কেউ গলা ধাক্কা দিয়ে বলেছে নাকি যে, নির্বাচন দিতে হবে তোমাকে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে। যখন এই সরকার আসে তখন কি এরকম কোনো শর্ত ছিল? শর্ত ছিল না।” তার দাবি, নির্বাচনের সিদ্ধান্ত তারা নিজেরাই নিয়েছেন এবং এর পর রাজনৈতিক দলগুলোর নড়াচড়া সরকার নিয়ন্ত্রণের বিষয় নয়। তাই পরিস্থিতি কোথায় খারাপ হয়েছে, তা তিনি নিজেও খুঁজে দেখছেন।
নির্বাচনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে মন্তব্য করার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের।
প্রশ্ন করা হয়েছিল, দীর্ঘদিন নির্বাচন কমিশনে কাজ করলেও তিনি কি কোনো মূল্যায়ন দিতে পারেন? জবাবে তিনি বলেন, “আমি ভুলে গেছি। নির্বাচন নিয়ে আমার কাছে বলার মতো কিছু নেই। আমি নির্বাচন নিয়ে অজ্ঞ, কোনো আইডিয়া নেই। এটা নির্বাচন কমিশন বলতে পারবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, যেখানেই গেছেন সেখানেই বলেছেন নির্বাচন সময়মতো হবে। “আমি বললাম না আমাদের কেউ ঘাড় ধরে বলেছে? নির্বাচন করতে হবে তোমাকে, এত তারিখের মধ্যে? আমরা যখন ৮ আগস্ট আসি তখন তো আমাদের কেউ ম্যান্ডেট দেয়নি যে ভাই আপনাকে এক/দেড়/দুই বছরের মাথায় নির্বাচন দিতে হবে। তখন তো কিছুই ছিল না, ব্ল্যাংক।”
সংলাপের শেষ দিকে উপদেষ্টা বলেন, দেশে একটি নির্বাচন হওয়া দরকার এবং একটি নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসা উচিত। তার মতে, “ইউনিভার্সেল ডেমোক্রেটিক প্রসেসটা স্ট্যাবলিস্ট হওয়া উচিত।” গত ১৭ থেকে ১৮ বছরে এ প্রক্রিয়া দৃঢ় হতে দেখেননি তিনি। অন্তর্বর্তী সরকার যদি তা নিশ্চিত করতে পারে, সেটিই হবে তাদের বড় সাফল্য।