
জাতির সংকটময় সময়ে হঠাৎ রাজনীতিতে আবির্ভূত হলেও দেশের প্রয়োজনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন অপরিহার্য এক নেতৃত্ব। এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজাস্থলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি প্রয়াত এই নেত্রীর রাজনৈতিক জীবনের সংক্ষিপ্ত মূল্যায়ন তুলে ধরেন। এ সময় নজরুল ইসলাম খান বলেন, “দেশের ক্রান্তিলগ্নে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য খালেদা জিয়ার আবির্ভাব ছিল সময়ের দাবি, আর সে দায়িত্ব তিনি সাহসিকতার সঙ্গে পালন করেছেন।”
এর আগে জাতীয় পতাকায় মোড়ানো অ্যাম্বুলেন্সে করে সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহ রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আনা হয়। বেলা ১১টার দিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের গুলশানের বাসভবন থেকে মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি যাত্রা শুরু করে এবং পৌনে ১২টার দিকে জানাজাস্থলে পৌঁছে।
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় দুপুর ২টায় এই আপসহীন নেত্রীর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে দাফন করা হবে।
এরও আগে বুধবার সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে লাল-সবুজের পতাকায় মোড়ানো অ্যাম্বুলেন্সে করে বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহ বের করা হয়। সোয়া ৯টার দিকে তা পৌঁছায় গুলশানে তার ছেলে তারেক রহমানের বাসভবনে। সেখানে পরিবারের সদস্য, বিএনপির নেতাকর্মী এবং শুভানুধ্যায়ীরা শেষবারের মতো তাকে শ্রদ্ধা জানান।
পৌষের হাড় কাঁপানো শীত উপেক্ষা করেই ভোর থেকে রাজধানীতে মানুষের ঢল নামে জানাজায় অংশ নিতে। আগের রাত থেকেই জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা, এভারকেয়ার হাসপাতাল, গুলশান কার্যালয় ও ‘ফিরোজা’য় নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। জানাজায় অংশগ্রহণের জন্য ভারত, পাকিস্তানসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরাও ঢাকায় আসছেন। পুরো রাজধানীজুড়ে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ৩০ ডিসেম্বর সকাল ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
১৯৪৫ সালে জন্মগ্রহণকারী বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর পর মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতিহাসে নিজের স্থান করে নেন।