
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেছেন দুই ছাত্র প্রতিনিধি-আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম। পদত্যাগের পর এ দুই ছাত্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এর তদন্ত ও বিচারের দাবিতে ঢাকার সড়কে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। এ বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে বহিষ্কৃত মুনতাসির মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাতের দিকে রাজধানীর বাংলামটরে বিক্ষোভটি অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলের ব্যানারে আয়োজক হিসেবে লেখা ছিল ‘তৃণমূল এনসিপি’। এর আগে বিকেলে মুনতাসির মাহমুদ এক ফেসবুক পোস্টে ‘তৃণমূল এনসিপি’ গঠনের ঘোষণা দেন।
বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মুনতাসির মাহমুদ বলেন, সাবেক দুই উপদেষ্টা জুলাই মাসের প্রতিশ্রুতি পূরণ করেননি এবং সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তিনি দাবি করেন, “উপদেষ্টার দায়িত্বকালে যেসব নিয়োগ, প্রকল্প ও টেন্ডার দেওয়া হয়েছে, তা জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।”
মুনতাসির আরও বলেন, সাবেক দুই উপদেষ্টা দাবি করেছেন যে তাদের অ্যাকাউন্টে কোনো অর্থ নেই, কিন্তু প্রকৃত অর্থ লেনদেন অন্যভাবে হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)কে তদন্ত করার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর মুনতাসির মাহমুদ রেড ক্রিসেন্টে উপপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভাই মাহবুব আলম রেড ক্রিসেন্টের ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মুনতাসিরের চাকরিটি ছিল অস্থায়ী। অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে কয়েক দিন ধরে তিনি রেড ক্রিসেন্টের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে মগবাজারে প্রতিষ্ঠানটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষোভ করেছিলেন।
এনসিপি থেকে নিষেধ করার পরও ১২ অক্টোবর মুনতাসির অনুগামীদের সঙ্গে পুনরায় বিক্ষোভ করেন। ওই দিন রেড ক্রিসেন্টের বোর্ড সভায় তার চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বোর্ড সভায় উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভাই মাহবুব আলমও উপস্থিত ছিলেন। সভার পর রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি থেকে বের হওয়ার সময় মুনতাসিরের অনুসারীরা তাকে অবরুদ্ধ করেন।
সেই দিনই এনসিপি মুনতাসিরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং পদ থেকে অব্যাহতির চিঠি ফেসবুকে প্রকাশ করে। এর পর থেকে মুনতাসির ফেসবুকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে আসছেন। সম্প্রতি তিনি এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও জানিয়েছিলেন।