
থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ থাকসিন সিনাওয়াত্রা হঠাৎ করেই দেশ ছেড়েছেন। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ব্যাংককের ডন মুয়েয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি প্রাইভেট বিমানে তিনি যাত্রা করেন বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির পুলিশ।
পুলিশের বিবৃতিতে জানানো হয়, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ১৭ মিনিটে প্রাইভেট বিমানে চড়ে দেশ ছাড়েন থাকসিন। তবে তার গন্তব্য কোথায়, সে বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। আশ্চর্যের বিষয় হলো, আদালতের অনুমতি ছাড়াই তিনি বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
থাকসিনের আইনজীবী উইনইয়াত চাতমন্ত্রি রয়টার্সকে জানান, তার মক্কেলের দেশত্যাগ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। রয়টার্স পিউ থাই পার্টির (থাকসিনের দল) মুখপাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
থাইল্যান্ডের জাতীয় রাজনীতিতে সিনাওয়াত্রা পরিবার দীর্ঘদিন ধরেই প্রভাব বিস্তার করে আসছে। ২০০১ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন থাকসিন এবং ২০০৫ সালে আবারও ক্ষমতায় আসেন। তবে দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই, ২০০৬ সালে সেনা অভ্যুত্থানে তার সরকার পতিত হয়। এরপর তিনি লন্ডনে পালিয়ে যান।
বিদেশে অবস্থান করলেও থাই রাজনীতিতে তার প্রভাব অটুট থাকে। তার পরিবারের অন্তত ছয়জন সদস্য প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। সর্বশেষ ২০২৩ সালে কন্যা পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেও চলতি বছরের আগস্টে আদালতের নির্দেশে তাকে পদত্যাগ করতে হয়।
২০০৬ সালের পর দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে থাকসিনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। তবে কন্যার শাসনামলে এসব মামলার বিচার স্থগিত থাকায় তিনি দেশে ফিরে আসেন। কিন্তু পায়েতংতার্নের পদত্যাগের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয় এবং বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।
আগামী শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) পার্লামেন্টে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ভোটের পাশাপাশি থাকসিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণারও কথা ছিল। কিন্তু ঠিক তার আগের দিনই গোপনে দেশ ছাড়েন তিনি।
থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক অঙ্গনে এই হঠাৎ দেশত্যাগ নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে রায় ঘোষণার প্রাক্কালে তার এমন পদক্ষেপকে অনেকেই নতুন রাজনৈতিক নাটকীয়তা হিসেবে দেখছেন। যদিও এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি, তিনি কোন দেশে গেছেন কিংবা তার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স