
তুরস্ক ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধের প্রতিবাদে দেশটির সঙ্গে সব ধরনের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত করেছে। পাশাপাশি, ইসরায়েলি বিমান ও জাহাজের জন্য তুরস্কের আকাশসীমা ও বন্দর সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা হয়েছে। খবরটি জানিয়েছে আল জাজিরা।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) গাজা ইস্যুতে তুর্কি সংসদের বিশেষ অধিবেশনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, “গত দুই বছর ধরে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল। বিশ্ববাসীর চোখের সামনে মৌলিক মানবিক মূল্যবোধকে উপেক্ষা করছে তারা।”
ফিদান আরও জানান, “আমরা ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করেছি। তুর্কি জাহাজ আর তাদের বন্দরে যাবে না, ইসরায়েলি জাহাজ আমাদের বন্দরে ঢুকতে পারবে না। তাদের বিমানও আমাদের আকাশসীমায় ঢুকতে পারবে না।”
তুরস্কের এই পদক্ষেপের মধ্যে শুধু মানবিক সংকট নয়, ইসরায়েলকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখার প্রভাবও স্পষ্ট। বিশেষ করে সিরিয়ায় ইসরায়েলের হামলাকে আঙ্কারা দেশটির পুনর্গঠন প্রচেষ্টার পথে ইচ্ছাকৃত বাধা হিসেবে মনে করছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তুরস্ক এখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইসরায়েলপ্রীতিপূর্ণ অবস্থানের বাইরে গ্লোবাল সাউথের দেশগুলো এবং বিকল্প শক্তিগুলোর দিকে দৃষ্টি দিচ্ছে।
ইসরায়েলি রাজনৈতিক বিশ্লেষক আকিভা এলদার বলেন, “তুরস্ক কেবল আরেকটি দেশ নয়; দীর্ঘদিন ধরে এটি ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ছিল। বাণিজ্য ও পর্যটনের বড় অংশীদার ছিল তুরস্ক। ফলে এই সিদ্ধান্ত ইসরায়েলিদের আরও বিচ্ছিন্ন করে তুলছে।”
তুরস্ক ও ইসরায়েলের সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয় ২০১০ সালে গাজাগামী ত্রাণবাহী বহরে ইসরায়েলের হামলায় ১০ জন তুর্কি নাগরিক নিহত হওয়ার পর। গত নভেম্বর মাসে তুরস্ক ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের বিমানকে আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেয়নি। এছাড়া ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পশ্চিম তীরে একটি বিক্ষোভে অংশ নেওয়া তুর্কি-আমেরিকান কর্মী আইসেনুর এজগি আইগিকে ইসরায়েলি বাহিনী হত্যা করে।
ফলে দুই দেশের সম্পর্ক এখন মারাত্মকভাবে শীতল এবং বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।