
ইসরায়েলের গাজা দখলের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে মুসলিম দেশগুলোর প্রতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান। মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে সাক্ষাতের পর শনিবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাদর আবদেলাত্তির সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।
এর আগে শুক্রবার, আঞ্চলিক দুই গুরুত্বপূর্ণ দেশ—মিসর ও তুরস্ক—গাজা দখল সম্পর্কিত ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানায়। তুরস্কের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এটি ইসরায়েলের ‘গণহত্যামূলক ও সম্প্রসারণবাদী নীতির’ আরও একটি ধাপ। আঙ্কারা বৈশ্বিক পর্যায়ে এই পরিকল্পনা প্রতিহত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়।
ইসরায়েল অবশ্য গাজা সংক্রান্ত অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে শনিবার এল আলামেইনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হাকান ফিদান জানান, ইসরায়েলের এই পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) একটি জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে।
ফিদান বলেন, “ফিলিস্তিনিদের অভুক্ত রেখে জমি থেকে উচ্ছেদ ও স্থায়ীভাবে গাজা দখল করাই ইসরায়েলের নীতি। ইসরায়েলকে সমর্থন করার মতো কোনও গ্রহণযোগ্য অজুহাত নেই।”
অন্যদিকে, গাজায় অনাহার নীতি অনুসরণের অভিযোগও অস্বীকার করেছে ইসরায়েল। তারা জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যে হামলায় ১,২০০ মানুষ নিহত হয়েছিল, সেই হামলার জন্য দায়ী গোষ্ঠী হামাস আত্মসমর্পণ করলে যুদ্ধ বন্ধ হতে পারে।
মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাদর আবদেলাত্তি বলেন, ‘‘গাজায় আজ যা ঘটছে, তা কেবল ফিলিস্তিনিদের কিংবা প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য নয়। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক এক পরিস্থিতি। ইসরায়েলের এই পরিকল্পনা অগ্রহণযোগ্য।’’
তিনি আরও জানান, গাজা পরিস্থিতি নিয়ে মিসর ও তুরস্কের মধ্যে পূর্ণ সমন্বয় রয়েছে এবং ওআইসির মন্ত্রিপরিষদ কমিটির পক্ষ থেকেও শনিবার এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের পরিকল্পনার নিন্দা জানানো হয়েছে।
ওই বিবৃতিতে ওআইসি বলেছে, ইসরায়েলের উদ্যোগ আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং এটি অবৈধ দখলকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার প্রচেষ্টা। সেই সঙ্গে এটিকে একটি বিপজ্জনক উসকানি হিসেবে আখ্যায়িত করে সংস্থাটি সতর্ক করে যে, এর ফলে শান্তির সব সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
গাজা যুদ্ধের অবসানে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর লক্ষ্যে মিসর, কাতার এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীরা কয়েক মাস ধরে আলোচনায় জড়িত রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে, ওআইসি বিশ্ব শক্তিগুলো এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন গাজা সংকটে তাদের আইনি ও মানবিক দায়িত্ব পালন করে।
মুসলিম দেশগুলোর এই সংগঠনটি আরও বলেছে, গাজা দখল পরিকল্পনা বন্ধে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য ইসরায়েলকে অবিলম্বে জবাবদিহির আওতায় আনা জরুরি।
সূত্র: রয়টার্স