
প্রায় দুই দশক পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে আলোচনার কেন্দ্রে এলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি তুলে ধরেছেন লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তাঁর আলোচনার নানা দিক।
বিবিসি বাংলার সম্পাদক মীর সাব্বির ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কাদির কল্লোলের নেওয়া ৪৪ মিনিটেরও বেশি সময়ের এই সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশিত হয়েছে মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর সকালে।
সাক্ষাৎকারে তারেক রহমানের সঙ্গে ইউনূসের বৈঠকের প্রসঙ্গ তোলা হলে তিনি জানান, শুধু নির্বাচন নিয়েই নয়, আরও নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তাঁদের মধ্যে। তিনি বলেন, "এর বাইরে স্বাভাবিকভাবেই উনি অত্যন্ত একজন স্বনামধন্য মানুষ। অত্যন্ত বিজ্ঞ মানুষ উনি। এর বাইরে তো অবশ্যই স্বাভাবিকভাবে সৌজন্যমূলক কথাবার্তা হয়েছে। এর বাইরেও উনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন যে, জনগণ যদি আপনাদেরকে সুযোগ দেন, তাহলে আপনারা কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য? এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।"
তারেক রহমান জানান, দেশের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েও ইউনূসের সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে। তাঁর ভাষায়, "আমার চিন্তাভাবনা দেশের মানুষকে নিয়ে, দেশের জনগণকে নিয়ে, দেশকে নিয়ে। আমরা যদি সুযোগ পাই, জনগণ আমাদেরকে যদি সেই সুযোগ দেন, তাহলে আমরা কি কি বিষয়ে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করব, সেই বিষয়গুলো নিয়ে কিছু কিছু আলোচনা হয়েছে।"
বিষয়টি ঘিরে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ছিল ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে তারেক রহমানের পূর্ববর্তী মন্তব্য। সাংবাদিকরা জানতে চান, তিনি কি এখনো মনে করেন সেই সরকার নিরপেক্ষ নয়?
উত্তরে তারেক রহমান স্মরণ করিয়ে দেন, তিনি যখন সে মন্তব্য করেছিলেন, তখন সরকার পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট কোনো নির্বাচনকালীন রোডম্যাপ উপস্থাপন করা হয়নি। তিনি বলেন, "আমি যখন এই কথাটি বলেছিলাম, এই মুহূর্তে আমার যতটুকু মনে পড়ে সেই সময় পর্যন্ত ওনারা কিন্তু নির্বাচনের ব্যাপারে সঠিক কোনো টাইম ফ্রেম বা কোনো কিছু বলেননি।"
তিনি যুক্তি দেন, সেই সময় শুধুমাত্র তাঁর নয়, অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বের মনেও সন্দেহ ছিল। কিন্তু ইউনূস যখন নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ সামনে আনেন এবং পরে তা বাস্তবায়নে দৃঢ় অবস্থান নেন, তখন থেকে মানুষের মধ্যে সন্দেহ কমতে শুরু করে।
তারেক রহমান বলেন, "আমি মনে করি, উনারা যা বলেছেন যতক্ষণ পর্যন্ত দৃঢ় থাকবেন, উনাদের বক্তব্যে উনাদের কাজে যত বেশি দৃঢ় থাকবেন, ততই সন্দেহ চলে যাবে আস্তে আস্তে।"