
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের সার্বিক সহায়তার লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করা জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠালগ্নে ১০০ কোটি টাকার অনুদান পেয়েছিল। পরবর্তী সময়ে দাতা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের অনুদানে আরও ১৯,৮৬,৬৫,৮৯২ টাকা যোগ হওয়ায় ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত মোট তহবিল দাঁড়ায় ১১৯,৮৬,৬৫,৮৯২ টাকায়।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ফাউন্ডেশন শহীদ পরিবারের কল্যাণ, আহতদের চিকিৎসা, পুনর্বাসনসহ সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন মানবিক ও প্রশাসনিক উদ্যোগ পরিচালনা করছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, জুলাই-আগস্টে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে ৮৪৫ জন শহীদ এবং ১৪,৬৩৪ জন আহত বা পঙ্গুত্ববরণকারী ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে।
ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৮২৩টি শহীদ পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তিনটি ক্যাটাগরির ৬,০০৮ জন আহতকে বিকাশ, পে-অর্ডার ও ক্রস-চেকের মাধ্যমে মোট ১১৩,৬৩,০০,০০০ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
আহতদের চিকিৎসা সেবা, পুনর্বাসন, জরুরি সহায়তা, সামাজিক নিরাপত্তা এবং শহীদ পরিবারের জীবনমান উন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।
এখনও সহায়তার অপেক্ষায় রয়েছে ২২টি শহীদ পরিবার এবং ৮,৩২৮ জন আহত ব্যক্তি। এদের সহায়তা দিতে প্রয়োজন অতিরিক্ত ২৪৩,৬২,০০,০০০ টাকা। কিন্তু প্রশাসনিক খরচ, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন, অফিস ভাড়া, যাতায়াত, জ্বালানি, আসবাবপত্র, চিকিৎসা সরঞ্জামসহ বিভিন্ন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম পরিচালনাই সংকটে পড়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার বিভাগের দেওয়া ৩ কোটি টাকার বরাদ্দে অক্টোবর পর্যন্ত কার্যক্রম চালানো গেলেও বর্তমানে তহবিলে অবশিষ্ট মাত্র ৫ লাখ টাকা।
ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, মাত্র ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে এক মাসে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ২৭টি ভুক্তভোগী পরিবারসহ মোট ৩৯টি পরিবারকে ক্ষুদ্র ব্যবসা, গবাদিপশু, অটোরিকশা, সিএনজি ও জীবিকার উপকরণ দেওয়া হয়েছে। এতে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোকে স্থায়ী জীবিকা ও স্বাবলম্বিতা অর্জনে সহায়তা পেয়েছে।
ফাউন্ডেশন বলেছে, শহীদ পরিবার ও আহতদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন এবং সামাজিক সুরক্ষা এখন জরুরি প্রয়োজন। মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, দাতাসংস্থা এবং সমাজের বিত্তবান ও সহৃদয় ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তারা আরও জানিয়েছে, সব জুলাই যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের মর্যাদাপূর্ণ পুনর্বাসনে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ এবং ভবিষ্যতে সহায়তার পরিসর আরও বাড়াতে চায়।