
ভোটের দিন না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে— এমন বার্তাই দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তার মতে, ১৮ কোটি মানুষকে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত সজাগ থাকতে হবে, কারণ ৫ আগস্ট ছিল গণতন্ত্র উত্তরণের দিন, তবে এখনও চূড়ান্ত বিজয় আসেনি।
বুধবার (৬ আগস্ট) বিকেলে রংপুর শহরের গ্রান্ড হোটেল মোড়স্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ছাত্র ও জনতার বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত বিজয় র্যালি ও সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর বলেন, “যে তারিখে নির্বাচন ঘটিত হবে, সবাই ভোটকেন্দ্রে যাবে, নিরাপদে যার যার ভোট যাকে খুশি তাকে দেবে, সেদিন আমাদের চূড়ান্ত বিজয় হবে।”
তিনি জানান, ঘোষণা আসার আগপর্যন্ত তাঁরা আতঙ্কে ছিলেন। এখনো পুরোপুরি নিশ্চিন্ত বলা যাচ্ছে না। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান নির্বাচন আয়োজনের জন্য কমিশনকে চিঠি দিলেও নির্বাচন বানচালের চক্রান্ত হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। “জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার যেন যথাসময়ে নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারেন, এজন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে।”
আলোচনায় আসে নির্বাচন-পূর্ব সংস্কার ও বিচারের প্রসঙ্গও। গয়েশ্বর বলেন, “পিটুনি তো আমরাও খেয়েছি। সন্তান তো আমরা হারিয়েছি। হাসিনার বিচার আমরা না করলে কারা করবে। বিচারকার্য সময়ের ব্যাপার। শেখ হাসিনার যেন শাস্তি হয় আমরা সেরকম বিচার চাই অর্থাৎ দেশের প্রচলিত আইনে বিচার হবে।”
তিনি স্পষ্ট করেন, কোনো বিচারই বিএনপির ইশারায় হবে না; সেটা আইন ও বিবেক অনুযায়ী বিচারপতিরাই করবেন।
বিএনপির মনোনয়ন প্রসঙ্গে গয়েশ্বর বলেন, “নির্বাচনে প্রার্থী অনেকেই হতে চাচ্ছেন। কিন্তু এজন্য কর্মীদের বিচ্ছিন্ন করবেন না। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সকলে একসঙ্গে বিভিন্ন সভায় যাবেন। একসঙ্গে ধানের শীষের জন্য ভোট চাবেন।”
তিনি রংপুরের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, এবারের নির্বাচন একটি পরীক্ষা। সেটায় প্রমাণ করতে হবে যে, “বিএনপির মধ্যে কোনো ভাইরাস নাই।”
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির ভূমিকা তুলে ধরে গয়েশ্বর বলেন, “বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রথম নৈতিক সমর্থন বিএনপি দিয়েছে... সেখানে বিএনপির নাম থাকবে না, তারেক রহমানের নাম থাকবে না, খালেদা জিয়ার নাম থাকবে না, জিয়াউর রহমানের নাম থাকবে না, সবাই একতা হয়ে আন্দোলন করবে।”
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু, মহানগরের আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ উন নবী ডন, বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলাম মিজু এবং কাউনিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এমদাদুল হক ভরসা প্রমুখ।