
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিকে ঘিরে সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনায় নতুন করে চারটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। শনিবার (১৯ জুলাই) রাতে সদর থানায় এই মামলাগুলো রুজু করা হয়। প্রতিটি মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ১,৪০০ থেকে ১,৫০০ জন করে আসামি করা হয়েছে, যা মিলিয়ে মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৫,৪০০ জন।
সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে পাঁচজন প্রাণ হারান। নিহতরা হলেন— উদয়ন রোডের দীপ্ত সাহা (২৫), টুঙ্গিপাড়ার সোহেল রানা মোল্লা (৩০), বিসিক এলাকার রমজান কাজী (১৭), এবং সদর উপজেলার ভেড়ারবাজার এলাকার ইমন তালুকদার (১৭)। এছাড়া আহত অবস্থায় ঢাকায় চিকিৎসাধীন রমজান মুন্সি (৩৫) পরদিন মারা যান।
প্রতিটি মামলায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বাদী হয়েছেন। দীপ্ত সাহার পক্ষে এসআই শামীম হোসেন, সোহেল রানার পক্ষে এসআই আবুল কালাম আজাদ, রমজান কাজীর পক্ষে এসআই আইয়ুব আলী এবং ইমন তালুকদারের পক্ষে এসআই শেখ মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন।
গোপালগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এরইমধ্যে, শনিবার রাত থেকে চালানো অভিযানে গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ৯ জন এবং কোটালীপাড়ায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের রোববার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত এসব ঘটনায় জেলায় মোট গ্রেপ্তার হয়েছে ৩২১ জন।
গত কয়েক দিনের সহিংসতা, গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, সড়ক অবরোধসহ নানা অরাজকতার ঘটনায় মোট ৮টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৮,৪০৮ জনকে আসামি করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৫৮ জন নামীয় এবং বাকিরা অজ্ঞাত।
জেলা প্রশাসন রোববার সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করে। এ সময়ের মধ্যে শহরের পরিবহণ ব্যবস্থা সচল থাকলেও জনসাধারণের চলাচল সীমিত ছিল। রিকশা, অটোরিকশা ও ভ্যান চললেও যাত্রী ছিল খুব কম। তবে শহরে কোনো ধরনের সভা, সমাবেশ বা আইন অমান্যের ঘটনা ঘটেনি।
শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা চলমান থাকায় এইচএসসি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণে কোনো বাধা ছিল না। কাঁচাবাজার, ফার্মেসি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকানপাট খোলা থাকলেও অধিকাংশ অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল।