
খাগড়াছড়িতে সহিংস ঘটনার জেরে টানা তৃতীয় দিনের মতো সড়ক অবরোধ চলছে। রোববার গুইমারা উপজেলায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে তিনজন পাহাড়ি নিহত এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ পাহাড়ি-বাঙালি উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার পর পুরো জেলায় অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে।
গতকাল বিকেলে নিহতদের মরদেহ খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরিচয় নিশ্চিতের প্রক্রিয়া চলছে এবং আজ সোমবার ময়নাতদন্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২৩ সেপ্টেম্বর রাতে এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার পর থেকে পাহাড়ি ও বাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর জেরে হামলা-পাল্টা হামলায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাগড়াছড়ি পৌরসভা, সদর উপজেলা ও গুইমারা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে।
সড়ক অবরোধের কারণে জেলার অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। আজও বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেড বসানো হলেও অবরোধকারীদের প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। শহর ও শহরতলীর সড়কগুলো ফাঁকা, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। লংগদু, বাঘাইছড়িসহ বিভিন্ন বাজারের কাঁচামালবাহী ট্রাক ও পিকআপ আটকে থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।
সহিংসতা ঠেকাতে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ যৌথ টহল জোরদার করেছে। ধর্ষণ মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও অপর দুইজন এখনও পলাতক রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ চলবে বলে জুম্ম ছাত্র-জনতা জানিয়েছে।
খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রিপল বাপ্পি চাকমা বলেন, “পুলিশ মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার পর ময়নাতদন্ত করা হবে।”
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং ১৪৪ ধারা এখনো বহাল রয়েছে।