
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের পুরনো ভবন, বিভিন্ন রুমের ছাদে ফাটল, ক্ষতিগ্রস্ত দেয়াল আরও নানা ধরনের অবকাঠামোগত ত্রুটির কারণে দীর্ঘদিন ধরেই এ হলের শিক্ষার্থীরা নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে। গত শুক্রবারে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তারা নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ে। পরে কর্মচারীদের একটি ভবন দখল করে রাত কাটায়।
শনিবার (২২ নভেম্বর) সকালে দেখা যায়, যেসব ফ্ল্যাট খালি ছিল সেখানে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন, আর যেসব ফ্ল্যাটে কর্মচারীরা ছিলেন, তারা সেখানেই আছেন।
গত শুক্রবার রাত দেড়টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করলেও ভবন নির্মাণের বিষয়ে সুস্পষ্ট নিশ্চয়তা না পেয়ে শিক্ষার্থীরা শেষ পর্যন্ত কর্মচারী ভবনেই রাত্রিযাপন করেন।
হলের প্রাধ্যক্ষ ড. সিরাজুল ইসলাম রাতে সাংবাদিকদের জানান, ভূমিকম্পের পর শিক্ষার্থীরা চরম ভয়ের মধ্যে আছে। তারা যেহেতু হলে থাকতে ভয় পাচ্ছে, উপাচার্য স্যার বলেছেন আপাতত অন্যান্য হলে তাদের শিফট করে রাখার ব্যবস্থা করতে।”
তিনি আরও বলেন, “হলটি রিচেক করা হবে। সব ঠিক থাকলে ফিরতে বলা হবে। তবে এখানে (কর্মচারী ভবনে) তারা থাকতে পারবে না। আপাতত ভয়ে থাকলে থাকতে পারে।”
এর আগে শুক্রবার সকালে ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে মুহসীন হলের চারতলা ভবন থেকে লাফ দিয়ে তানজীর হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। এছাড়া আরও দুই শিক্ষার্থী ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আহত হন।
ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা নতুন ভবনের দাবিতে কর্মচারী ভবনের ফটক আটকে বিক্ষোভ শুরু করে। বিকেল ২টার দিকে তারা বিভিন্ন ফ্ল্যাটে তালা দেন। পরিস্থিতি শান্ত করতে উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমদ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।
মুহসীন হল ছাত্র সংসদের সমাজসেবা সম্পাদক এম. সাইফুল্লাহ বলেন, “আমরা মৃত্যুপুরী মুহসীন হলে আর থাকব না। আমাদের জন্য অন্য কোনো নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। বাইরের কোনো অপ্রতিশ্রুত আশ্বাসে আমরা অবস্থান থেকে সরে যাব না।”
উল্লেখ্য, শুক্রবার নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় উৎপত্তি হওয়া ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে তিন জেলায় ১০ জন নিহত এবং ছয় শতাধিক মানুষ আহত হন। ঢাকার বিভিন্ন ভবনে ফাটল ও হেলে পড়ার ঘটনা ঘটে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।