
সরকারি কৃষি প্রণোদনা বিতরণে অনৈতিক দাবিতে সাড়া না দেওয়ায় শেরপুরের নকলায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রদলের এক নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত রাহাত হাসান কাইয়ুম, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব, ও তার সহযোগী ফজলুর রহমানের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেল আড়াইটার দিকে নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অফিসে। পরে রাতেই নকলা থানায় নিয়মিত মামলা (নং-৫) নেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
আসামি রাহাত হাসান কাইয়ুম নকলা পৌরসভার ধুকুরিয়া গ্রামের সুরুজ মোওলার ছেলে এবং ফজলুর রহমান একই গ্রামের সিরাজুল হকের সন্তান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহারিয়ার মুরসালিন জানান, “রাহাত ও ফজলু অফিসে এসে জানতে চান আমি এখনো বদলি হইনি কেন, প্রণোদনা কারা পেয়েছে এবং নেতাদের ভাগ কত। আমি জানাই, সরকারি প্রণোদনা প্রকৃত কৃষকদের জন্য, কোনো রাজনৈতিক ভাগাভাগি হয় না। তখন তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে গালাগাল ও মারধর করে।”
তিনি আরও বলেন, “বিষয়টি আমি স্থানীয় বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি খোরশেদ আলমকে জানালে রাহাত আরও ক্ষিপ্ত হয়ে সহকারী ফজলুকে নিয়ে অফিসের ভেতরে আমাকে পেটায়। পরে চিৎকার শুনে অন্যরা এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়।”
বিলুপ্ত উপজেলা বিএনপি কমিটির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, “রাহাত উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব। কৃষি কর্মকর্তা আমাকে ফোনে বিষয়টি জানান। আমি রাহাতের জেঠাত ভাই যুবদল নেতা লুটাসকে জানাই, তিনি রাহাতকে ফোনে ধমক দেন। তারপরও সে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে।”
জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাসেম সিদ্দিকী বলেন, “ঘটনার সত্যতা যাচাই করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাইম হাসান উজ্জ্বল বলেন, “শুরুতে বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বিস্তারিত জানি। একজন কর্মরত কর্মকর্তার ওপর হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ঘটনায় আমরা দলীয়ভাবে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। যেহেতু মামলা হয়েছে, আইন অনুযায়ীও ব্যবস্থা চলবে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে আমরা রাহাত হাসান কাইয়ুমের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।”
অভিযুক্ত রাহাত হাসান কাইয়ুমের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম বলেন, “কৃষি কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”