
প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা এবার তাদের দাবি একধাপ বাড়িয়ে ৫ দফা করে তুলেছে। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সরকারের স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা উপদেষ্টা তাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত হবে না।
বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৫টায় শাহবাগ হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের এক্সিট গেটের সামনে সংবাদ সম্মেলনে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ এই দাবিগুলো তুলে ধরেন।
জুবায়ের আহমেদ বলেন, আজ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলমকে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে এবং জবাবদিহি করতে হবে। আন্দোলনে জড়িত রোকনের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। পুলিশের দায়িত্বও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
তিনি আরও বলেন, প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে গঠিত কমিটি প্রত্যাখ্যান করা হলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের নিয়ে দ্রুত নতুন কমিটি গঠন করতে হবে। পূর্বে ঘোষিত ৩ দফা দাবি মান্য করে নির্বাহী আদেশে প্রজ্ঞাপন দিতে হবে। উপদেষ্টা ফওজুল করিম, আদিলুর রহমান ও সৈয়দা রিজওয়ান হাসানকে আসতে হবে এবং হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খরচ বহন করতে হবে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং যৌক্তিক আন্দোলনের ওপর আর কোনো হামলা চলতে দেওয়া যাবে না।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পুলিশের হামলায় অন্তত ৬০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
এর আগে সকাল ১১টায় প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা পূর্বঘোষিত ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে শাহবাগে অবস্থান নেন। দুপুর দেড়টার দিকে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করলে পুলিশ বাধা দেয়। তখন লাঠিচার্জ, ইট নিক্ষেপ, টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেডের ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে শিক্ষার্থী ও পুলিশ উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হন।
এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা নানা স্লোগান দেন যেমন, পুলিশ দিয়ে আন্দোলন দমানো যাবে না, এক দুই তিন চার, দাবি আদায়ে আমরা এক, আমার দাবি আমার দাবি, মানতে হবে মানতে হবে ইত্যাদি।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম বলেন, শাহবাগ মোড়ে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়েছিলেন। আমরা তাদের সরানোর জন্য অনুরোধ করেছি, কিন্তু তাদের সঙ্গে কোনো কঠোর আচরণ করা হয়নি।
শিক্ষার্থীদের টানা ৭ ঘণ্টা আন্দোলনের কারণে শাহবাগ ও আশপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে রাজধানীর বেশিরভাগ সড়কে যানজট তৈরি হয়েছে এবং সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছেন।
পথচারী আসাদুজ্জামান বলেন, গুলিস্তান থেকে গাবতলি যাওয়ার জন্য বাসে উঠেছিলাম। প্রায় এক ঘণ্টা জ্যামে বসে হেঁটে যাচ্ছি। তারপর আবার বাসে উঠতে হবে।
অপরদিকে, শাহবাগ ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে র্যাব-পুলিশসহ বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।