
ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের পক্ষে আন্দোলনের কথা উঠলেই দেশের তরুণদের ভূমিকা আলাদা করে উল্লেখ করতে হয়। রাজধানীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ষষ্ঠ জেসাপ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আজ শুক্রবার সেই সত্যটাই সামনে আনলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘দেশে যখনই ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের আন্দোলন হয়েছে, তখনই তারা সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে।’
সকালে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণকে স্মরণ করেন। ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘মহান জুলাই অভ্যুত্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে তা গর্বের সঙ্গে স্মরণ করছি। তবে এটি নতুন নয়; আমাদের তরুণরা সবসময় দেশে ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিল।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, দেশের তরুণরা শুধু অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নয়, আদালতের জটিল পরিবেশে এবং আন্তর্জাতিক পরিসরেও ন্যায়বিচারের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার সক্ষমতা দেখিয়ে যাচ্ছে। তার ভাষায়, ‘এখানে সমবেত হয়ে তারা প্রমাণ করেছে যে কেবল অধিকার রক্ষায় নয়, বরং আদালত কক্ষে এবং বিশ্ব মঞ্চে ন্যায়বিচারের পক্ষে ওকালতি করতেও সক্ষম।’
এ বছর ৫২টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্মশালায় অংশ নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন শেখা এবং বিতর্কের জন্য জাতীয় যে আবেগের প্রতিফলন এটি। জেসাপ বাংলাদেশ এখন বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জেসাপ যোগ্যতা অর্জনকারী প্রতিযোগিতা। এই অর্জন আমাদের শিক্ষার্থী, কোচ, আয়োজক এবং প্রাণবন্ত মুট কোর্ট সমাজের নিষ্ঠার প্রতিফলন।’
জেসাপের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘জেসাপ কেবল একটি প্রতিযোগিতা নয়। এটি কঠোর গবেষণা দক্ষতা, স্পষ্ট লেখা, প্ররোচনামূলক অ্যাডভোকেসি এবং কার্যকর দলবদ্ধতা তৈরি করে।’ ড. আসিফ নজরুল আশা প্রকাশ করেন, কর্মশালা তরুণদের দক্ষতা আরও শানিত করবে এবং ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি আরও দৃঢ় করবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের আবাসিক আইন উপদেষ্টা সেরা সেথলিকাই, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. ডেভ ডাওল্যান্ড, স্কুল অব ল-এর সহকারী অধ্যাপক মো. মোস্তফা হোসেন, আইএলএসএ’র জাতীয় সমন্বয়কারী নূরান চৌধুরী, হার্থ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক পরব নাসের সিদ্দিক এবং জেসাপ বাংলাদেশের জাতীয় প্রশাসক মাইমুনা সৈয়দ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
জেসাপ বাংলাদেশ এবং ইন্টারন্যাশনাল ল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (আইএলএসএ), মার্কিন বিচার বিভাগ, বিদেশি প্রসিকিউটরিয়াল ডেভেলপমেন্ট, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ল এবং হার্থ বাংলাদেশের সহযোগিতায় দুদিনব্যাপী ‘মে ইট প্লিজ দ্য কোর্ট: দ্য কেস কনসার্নিং দ্য ক্রাফট অফ জেসাপ অ্যাডভোকেসি’ শীর্ষক এই কর্মশালা আয়োজন করা হয়েছে।
কর্মশালাটি শিক্ষার্থীদের অ্যাডভোকেসি দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি ফিলিপ সি জেসাপ আন্তর্জাতিক আইন মুট কোর্ট প্রতিযোগিতার ১০ম বাংলাদেশ যোগ্যতা অর্জনের রাউন্ডে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত করতেই মূলত পরিকল্পিত। আন্তর্জাতিক আইন মুটিংয়ের ‘বিশ্বকাপ’ হিসেবেই জেসাপ পরিচিত।