
লক্ষ্মীপুর জেলায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর ৬ দিন ধরে টানা অভিযান চালাচ্ছে। সদর, রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় পরিচালিত অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০টি অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে সদর উপজেলার তেয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের যুবলীগের সাবেক সভাপতি আবু সাঈদ ওরফে রুবেল সানীর দুটি ইটভাটা ‘সংসার’ ও ‘মহানগর’ এখনোও অক্ষত রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসন থেকে রুবেল সানীর দুটি ইটভাটাকে ভাঙা হবে না বলে আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে সরজমিনে তেয়ারীগঞ্জে গিয়ে দেখা যায়, উভয় ভাটায় শ্রমিকরা উৎসবের মতো ইট তৈরির কাজে ব্যস্ত। কৃষকের জমি অবৈধভাবে কেটে ভাটাগুলোতে পাহাড় সমান মাটি জমা করা হয়েছে। এ অবস্থায় প্রশাসনের অভিযান সত্ত্বেও ভাটাগুলোর কার্যক্রম থেমে যায়নি।
স্থানীয়রা জানায়, সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে কুশাখালী ও পরাশগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালানোর খবর পেয়ে রুবেল সানী তার দুটি ভাটার সামনের সড়কে দুটি ট্রাক দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন, যাতে প্রশাসনের গাড়ি ভাটায় ঢুকতে না পারে। ট্রাকগুলোর চাকাও খুলে রাখা হয়েছিল।
অভিযান গত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) থেকে রামগতি উপজেলার চর আফজাল এলাকা থেকে শুরু হয়। ৬ দিনে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় ২০টি অবৈধ ইটভাটা ধ্বংস করা হয়েছে। ভেকু মেশিন ব্যবহার করে ভাটার চুল্লি, চিমনি এবং কাঁচা ইট সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট করা হয়েছে। অভিযান চলাকালে শ্রমিকরা রাস্তায় গাছ ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করলেও প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখে।
লক্ষ্মীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ পাঠান জানান, রামগতি ও কমলনগরে মোট ৫১টি ইটভাটা রয়েছে, যার মধ্যে ৪৯টি সম্পূর্ণ অবৈধ। তিনি বলেন, “অবৈধ ভাটাগুলো ধ্বংসের পরও যাতে আবার চালু না করা যায়, তা নিশ্চিত করার জন্য অভিযান অব্যাহত থাকবে। যে কোনো শক্তিশালী ব্যক্তি হলেও এই ভাটাগুলো থেকে খোলা ছাড় দেয়া হবে না।”
স্থানীয়রা উল্লেখ করেছেন, গত বছরও রুবেল সানীর দুই ইটভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করেছিল এবং জরিমানা করা হয়েছিল। এবারও শুনেছেন, জেলার এক প্রভাবশালী নেতার সুপারিশে এই দুটি ইটভাটা ভাঙা হবে না। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।