
ইউনূস-তারেক বৈঠক সফল, জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে : আমীর খসরু
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাতে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সোমবার (১৬ জুন) যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে বিমানবন্দরে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনেক দীর্ঘ সময়। বিচার চলমান প্রক্রিয়া। সংস্কার হবে ঐকমত্যের ভিত্তিতে। সেটা হতে এক থেকে দেড় মাসের বেশি লাগবে না। আমীর খসরু বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক পথে এগিয়ে যাবে। মানুষ ২০ বছর ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। তরুণরা ভোট দিতে পারেনি। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের মাধ্যমে অচিরেই দেশের মানুষ ভোটের অধিকার ফিরে পাবে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা।

শাপলা হতে পারে এনসিপির প্রতীক
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নিবন্ধন কার্যক্রমের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। এ নিয়ে কাজ করছে দলটির একাধিক টিম। জেলা-উপজেলা কমিটি গঠন, কার্যালয় স্থাপন, গঠনতন্ত্র প্রণয়ন, ভোটার তালিকাসহ গুছিয়ে নেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট সব প্রস্তুতি। তবে সবার মনোযোগ এনসিপির দলীয় প্রতীকে, কী হতে যাচ্ছে এনসিপির প্রতীক। দলটির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতীক হিসেবে ঘুরেফিরে পাঁচটি নামই আসছে আলোচনায়। যার মধ্যে অন্যতম শাপলা। বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলাকেই দলীয় প্রতীক হিসেবে পছন্দের শীর্ষে রেখেছে এনসিপি। এ ছাড়া সাদা ঘোড়া, চা পাতা, বই এবং মুষ্টিবদ্ধ হাত তাদের আলোচনায় রয়েছে। এনসিপির নেতারা বলেছেন, দেশে বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য যেসব প্রতীক আছে, সেগুলো খুব বেশি প্রাসঙ্গিক নয়। তাই বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের সংরক্ষণে থাকা কোনো প্রতীকে তাদের আগ্রহ নেই। শাপলাকে প্রাধান্য দিয়ে এ ৫টি প্রতীকের জন্য আবেদন করতে পারেন তারা। আজ সোমবার এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিবন্ধন সংক্রান্ত একটি সভা রয়েছে বলে জানা গেছে। সেখানেই চূড়ান্ত হতে পারে প্রতীকসহ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত। নিবন্ধন কার্যক্রমের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত এক নেতা কালবেলাকে বলেন, ‘শাপলাসহ কয়েকটি প্রতীক আমাদের আলোচনার শীর্ষে রয়েছে। আমরা এর মধ্য থেকেই প্রতীক চাইব। এখন যেসব প্রতীক রয়েছে সেগুলো খুব বেশি রিলেভ্যান্ট (প্রাসঙ্গিক) না। গণঅভ্যুত্থান এবং দেশকে রিপ্রেজেন্ট (প্রতিনিধিত্ব) করে এমন কোনো প্রতীক থাকা উচিত বলে আমরা মনে করি।’ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, নিজ দলের প্রতীক নিয়ে ভোটে অংশ নিতে হলে ইসির নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫০টি। এজন্য দলগুলোর বিপরীতে ৫০টি প্রতীক ছাড়াও ৬৯টি প্রতীক তফসিলভুক্ত আছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য এ সংখ্যা বাড়িয়ে ১০০টি প্রতীক করা হবে বলে জানিয়েছে ইসি। দলগুলোর প্রতীক নির্ধারণ করে দেয় নির্বাচন কমিশন। তবে নতুন দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশনের অধিকাংশ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে নতুন প্রতীক সংযুক্ত করার নিয়ম রয়েছে। এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার কালবেলাকে বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষের পথে। কমিটি গঠনসহ প্রায় ৮৫ শতাংশ কাজ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের আগেই আমরা দলের নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন জমা দেব।’ নিবন্ধন কার্যক্রমের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন জানান, প্রতীক নিয়ে তারা এখনো আলোচনা-পর্যালোচনা করছেন। তিনি বলেন, ‘কয়েকটি প্রতীক আমাদের আলোচনায় রয়েছে। নিবন্ধন বিষয়ে আগামীকাল (আজ) আমাদের সভা রয়েছে। সেখানেই এসব বিষয় চূড়ান্ত হতে পারে।’ এদিকে রাজধানী ঢাকায় দলটির বর্তমান অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিকানা হিসেবে রয়েছে বাংলামটরের রূপায়ণ ট্রেড সেন্টার। তবে নতুন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের জন্য খোঁজা হচ্ছে স্থান। অবশ্য নিবন্ধন আবেদনের জন্য সময় বেশি না থাকায় এবং স্থায়ী কার্যালয় দেখানোর বাধ্যবাধকতা থাকায় বর্তমান কার্যালয়কেই স্থায়ী কার্যালয় হিসেবে দেখাতে পারে দলটি। এ ছাড়া কাটাবন, শাহবাগ, সেগুনবাগিচা কিংবা বাংলামটরের আশপাশে হতে পারে নতুন কেন্দ্রীয় কার্যালয়। নির্বাচন কমিশন গত ১০ মার্চ গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদন আহ্বান করে। আবেদনের শেষ তারিখ ছিল ২০ এপ্রিল। পরে এনসিপিসহ কয়েকটি দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুই মাস সময় বাড়ায় নির্বাচন কমিশন। ইসিতে নিবন্ধনের জন্য দলের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সক্রিয় কেন্দ্রীয় অফিস থাকা, অনূর্ধ্ব এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় জেলা অফিস এবং ন্যূনতম ১০০টি উপজেলা বা ক্ষেত্রমতে মেট্রোপলিটন থানায় অফিস (যার প্রতিটিতে সদস্য হিসেবে ন্যূনতম ২০০ ভোটার তালিকাভুক্ত হতে হবে) থাকতে হয়। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় নথিপত্র হিসেবে দলের গঠনতন্ত্র, নির্বাচনী ইশতেহার (যদি থাকে), দলের বিধিমালা (যদি থাকে), দলের লোগো এবং পতাকার ছবি, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি বা সমমানের কমিটির সব সদস্যের পদবিসহ নামের তালিকা, দলের নামে রক্ষিত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও ব্যাংকের নাম এবং ওই অ্যাকাউন্টের সর্বশেষ হিসাব ও দলের তহবিলের উৎসের বিবরণ ইসিতে জমা দিতে হবে। এনসিপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত সারা দেশে দলের ১২০টি উপজেলা এবং ৩০টি জেলা সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। চলতি জুনের শুরুতে ঢাকার দুই মহানগরীতে কমিটি ঘোষণার মাধ্যমে অঞ্চলভিত্তিক কমিটি দেওয়া শুরু করে এনসিপি। এরপর ঈদের আগে ধাপে ধাপে পঞ্চগড় সদর, তেঁতুলিয়া, দেবীগঞ্জ, বোদা, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া, নড়াইলের লোহাগড়া, কালিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর, সরাইল, বাগেরহাটের কচুয়াসহ বিভিন্ন উপজেলার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। জেলার মধ্যে টাঙ্গাইল, কুড়িগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, ঝালকাঠি, মেহেরপুর, বরিশাল, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, লালমনিরহাট, নড়াইল, চুয়াডাঙ্গা ও মুন্সীগঞ্জে কমিটি ঘোষণা করা হয়। আর ঈদের পর বান্দরবান, বগুড়া, জামালপুর ও টাঙ্গাইলের আরও কয়েকটি উপজেলায় কমিটি দেয় নতুন দলটি। রংপুরের পীরগাছাসহ বিভিন্ন উপজেলায় কয়েকটি দলীয় কার্যালয়ও স্থাপন করা হয়েছে। দলের গঠনতন্ত্র, ইশতেহারও প্রস্তুত। কেন্দ্রীয় কার্যালয় স্থাপন, ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণ এবং প্রতীক নির্ধারণের কাজ চলছে। এসব কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ হবে বলে আশা করছেন এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত। তিনি কালবেলাকে বলেন, ‘আমাদের নিবন্ধন কার্যক্রমের প্রয়োজনীয় শর্তাবলি পূরণের জন্য এরই মধ্যে ১২০টি উপজেলা সমন্বয় কমিটি গঠিত হয়েছে এবং ৩০টি জেলা সমন্বয় কমিটি হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা নিবন্ধনের জন্য ইসিতে আবেদন করব। দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে ভোটার লিস্ট প্রস্তুতকরণ সেটিও প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সব কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।’

লন্ডনে ‘একান্ত বৈঠকের’ আলোচনা জাতির সামনে পরিষ্কার করতে হবে
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বৈঠক দেশের রাজনীতিতে কিছু সংকট সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এই বৈঠক রাজনীতিতে এক ধরনের অস্বস্তিও তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম চরমোনাই পীর। তিনি বলেন, বিশেষত দুই পক্ষের প্রতিনিধিসহ বৈঠকের পরে দুই নেতার একান্ত বৈঠক রাজনীতিতে কিছু প্রশ্ন তৈরি করেছে। আগামী রাজনীতির স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য এবং দলগুলোর অস্বস্তি দূর করতে একান্ত বৈঠকের আলোচনা ও সিদ্ধান্ত জাতির সামনে পরিষ্কার করতে হবে। রোববার পুরানা পল্টনের অফিসে দলের সিনিয়র দায়িত্বশীলদের সঙ্গে দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনাকালে চরমোনাই পির এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি বহুদলীয় রাজনীতি। বিগত ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াই দেশের বহুসংখ্যক রাজনৈতিক সংগঠন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অংশ নিয়েছে। আগামীর বাংলাদেশ নির্মাণে সবাইকে সমান গুরুত্ব ও মর্যাদা প্রদান করা নৈতিক কর্তব্য। লন্ডন বৈঠকের চরিত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অবমূল্যায়নের ধারণা জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচন আয়োজনের সময় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর নানা রকম দাবি থাকা সত্ত্বেও সব উপেক্ষা করে প্রধান উপদেষ্টা ঈদের আগের দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে একটা সংক্ষিপ্ত সময়সীমা ঘোষণা করেছিলেন। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে যে সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে- তা একটি একান্ত বৈঠকের পরে পুনর্বিবেচনা করার যৌথ ঘোষণা দেওয়া রাজনীতিতে অস্বস্তি তৈরি করেছে। সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি নির্মাণের স্বার্থেই এই অস্বস্তি দূর করা উচিত। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার ও পতিত ফ্যাসিবাদের বিচার নিশ্চিত করার দাবি পুনর্ব্যক্ত করছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। নির্বাচনের ডামাডোলে সংস্কার ও বিচার যাতে আড়াল না হয়, সেদিকে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে চরমোনাই পির বলেন, নির্বাচন নিয়ে আপনাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। এখন দেশকে ভবিতব্য সব স্বৈরতন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করতে সাংবিধানিক সংস্কারে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি। প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, এনসিসি (জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল) গঠন, সংসদীয় কমিটির প্রধান বিরোধী দল থেকে দেওয়াসহ স্বৈরতন্ত্র প্রতিরোধে যেসব সতর্কতামূলক আইনি প্রতিবন্ধকতা প্রস্তাব করা হয়েছে- তাকে বিএনপি সমর্থন করবে বলে আশা করছি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান।

গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু মারা গেছেন
গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রোববার (১৫ জুন) বিকেল ৫টা ১০মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। মোস্তফা মহসিনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তারা শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

তারেক রহমান দেশে ফিরবেন কবে, জানালেন আব্দুল আউয়াল মিন্টু
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক টিম প্রধান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে নির্বাচন এগিয়ে আনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন করা গেলে বুঝতে হবে বৈঠক ফলপ্রসু হয়েছে। রোববার (১৫ জুন) দুপুরে বরিশালে ক্লাবের হল রুমে মহানগর বিএনপির উদ্যোগে সদস্য ফরম নবায়ন ও তৃনমূল পর্যায়ে প্রাথমিক সদস্য ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, দেশের মধ্যে যে অস্থিতিশীলতা রয়েছে তা কমে আসবে এবং স্থিতিশীল হবে। এতে অর্থনেতিক প্রবৃত্তি বাড়বে ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে। এ কারণে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন তিনি। ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কিছু দল বিরোধীতা করার বিষয়ে মিন্টু বলেন, এটাকে গুরুত্ব না দিয়ে দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল কি চায় সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে। দেশে বিএনপিসহ ৬২টি দল রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই নির্বাচনের পক্ষে। নির্বাচনের পূর্বে তারেক রহমান দেশে ফিরবেন বলেও জানান তিনি। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে প্রধান অতিথি মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দের কাছে সদস্য ফরম নবায়ন ও তৃণমূল পর্যায়ে প্রাথমিক সদস্য ফরম তুলে দেন। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুকের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান ও মাহাবুবুল হক নান্নুসহ কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক অনেকের মনে জ্বালা ধরিয়েছে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এই বৈঠক কেন জানি মনে হয়েছে অনেকের মনে জ্বালা ধরিয়েছে। অনেকেই এটা মেনে নিতে পারছেন না। কেন এই জ্বালা ভাই আপনাদের? আপনাদের উদ্দেশ্য কী? শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুরে মুক্তিযোদ্ধা কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, আমাদের দেশের বিরুদ্ধে সব সময়ই ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চলছে। আমরা কেউই এই চক্রান্তের বাইরে নই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, ছাত্র-জনতার আন্দোলন এবং বিএনপির ১৫-১৬ বছরের এক রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি ড. ইউনূস সাহেব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হয়েছেন। নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, রজমান মাসে কি নির্বাচনী প্রচারণা করা যায়? তবে ফেব্রুয়ারি এবং মার্চের পর গোটাটাই রমজান থাকবে আর থাকবে ঈদের আয়োজন। আপনি এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে কোথায় প্রচারণা চালাবেন? কখন আইনি প্রক্রিয়া হবে। কখন নমিনেশন পেপার জমা দেবেন? কখন প্রচার চালাবেন? কীভাবে প্রচার চালাবেন? সারাদিন রোজা রেখে কী করে এপ্রিল মাসের মধ্যে নির্বাচন হওয়া সম্ভব? আমাদের এমন একটি সময়, যে সময়ের মধ্যে অন্য কোনো, ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠান, ধর্মীয় কোনো উৎপারোক, রোজা-ঈদ থাকবে না, সে সময়টাতেই উপযুক্ত সময় হওয়া উচিত। তাহলে যদি লন্ডনের বৈঠকে এটা হয় যে আমরা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বা প্রথম সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচনটা হবে, তো এর মধ্যে কোনো রমজান নেই, কোরবানির ঈদ নেই, বড় কোনো অনুষ্ঠান নেই, পহেলা বৈশাখ নেই। আবহাওয়া ভালো থাকে, শুকনো মৌসুম, হালকা শীত থাকে। এই সময়ই বরাবরই আন্দোলন সংগ্রাম হয়, এই সময়ই নির্বাচন হয়। জামায়াতকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, আজকে আমাদের কিছু রাজনৈতিক বন্ধু তারা উষ্মা প্রকাশ করেছেন, লন্ডনের বৈঠককে তারা বলেছেন নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হবে। ভাই আপনাদের ইতিহাসটা বলুন তো দেখি। আপনারা কখন নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন। পাকিস্তান আন্দোলনে আপনারা সমর্থন করেননি। আপনারা ৭১ সালে জনগণের বিরোধিতা করেছেন। আপনারা ৮৬ সালে শেখ হাসিনার সাথে নির্বাচন করেছেন। ৯৫ সালে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে হাসিনার সাথে একসাথে আন্দোলন করেছেন। আপনারা এই বার ৫ আগস্টের পর বলেছেন আওয়ামী লীগকে মাফ করে দেব, ভারতের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করব। তাহলে আপনাদের রাজনীতিটা কিসের রাজনীতি? রাজনীত মানেই জনগণের কাছে ওয়াদা, জনগণের কাছে অঙ্গীকার, যেটি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান বারবার বলেছেন এই হাসিনা দুর্বৃত্ত, এই হাসিনা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন করেছে, মানুষের কথা বলতে গেলে তার ঠিকানা হয়েছে আয়নাঘরে, তার ঠিকানা হয়েছে পুলিশের অত্যাচার, র্যাবের অত্যাচার তার বিরুদ্ধে শত শত মামলা, তার স্থায়ী ঠিকানা হয়েছে কারাগারে। আপনি সেই আওয়ামী লীগকে মাপ করে দেবেন? আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা জুলাই আগস্টের রক্তাক্ত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এক শহীদ মুগ্ধ, আরেক দিকে আবু সাঈদ, চট্টগ্রামের ছাত্রদল নেতা মহসীন, আহনাফ, সৈকত একের পর এক শিশু-কিশোর-তরুণ- এদেরকে হত্যা করে গেছে। আপনাদের রাজনীতিটা ভুলে ভরা। এই ভুলে ভরা রাজনীতি আপনারা শুরু থেকেই করে এসেছেন। আর বিএনপির সময় ইতিবাচক রাজনীতি করেছে। আমরা আমাদের দেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে, আমরা সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে, আমাদের ভূ-খণ্ড রক্ষার ক্ষেত্রে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজকে যদি আপস করতেন, তাহলে তাকে ৫-৬ বছর জেলে থাকতে হতো না। তার ওপর যে নিপীড়ন নির্যাতন- এতখানি হতো না যদি তিনি আপস করতেন। তিনি জনগণকে ছেড়ে কখনো যাননি, শেখ হাসিনা গেছেন। খালেদা জিয়া কখনো মাথা নত করেননি জানিয়ে রিজভী বলেন, এত বড় বড় কথা বলেছেন, বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে কত অপপ্রচার, বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে কত কুৎসা রটিয়েছেন। কত কি কথা বলেছেন, কিন্তু বেগম জিয়া তো দেশ ছেড়ে যাননি। বলেছেন শেখ হাসিনা যা বলছে, যে অপবাদ দিচ্ছে সেটি মিথ্যা। বরণ করেছেন নির্যাতন, কারাগারের মধ্যে থেকেছেন। যে কারাগার ২০০ বছরের পুরোনো কারাগার। শুধু ধুলা ওড়ে, বালু ওড়ে। উনার চোখের অপারেশন। সেই ধুলাবালু উড়ে তার চোখকে আরও ক্ষতিগ্রস্থ করেছেন। তারপরও শেখ হাসিনার অন্যায়ের কাছে তিনি মাথা নত করেননি। গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য একেএম ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ও জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক রিয়াজুল হান্নানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার, শ্রীপুর পৌর বিএনপির সদস্য সচিব বিল্লাল হোসেন বেপারী, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু তাহের মুসল্লী, এমদাদুল হক মুসল্লী প্রমুখ।

উত্তরের জনপদগুলো এই বৈষম্য আর মেনে নেবে না: সারজিস আলম
প্রতি বছর ঈদযাত্রায় দীর্ঘ যানজটে উত্তরাঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি নিয়ে কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম। আগামীতে এই অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ লাগবে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। শনিবার (১৪ জুন) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এই আহ্বান জানান। সারজিস লিখেছেন, ‘শুধু সংকীর্ণ টোল প্লাজার কারণে উত্তরবঙ্গের মানুষ যমুনা সেতুর পূর্বে ২০ কিলোমিটারের অধিক রাস্তা জ্যামে আটকে থাকে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে যায় সেই জ্যামে। তারপরও কারও টনক নড়ে না।’ তিনি বলেন, ‘ঢাকা থেকে রংপুর চার লেনের মহাসড়কের কাজ চলছে সেই এক দশক ধরে। এখনো শেষ হয়নি। গোবিন্দগঞ্জ আর পলাশবাড়িতে রাস্তার অর্ধেক কাজ হয়ে পড়ে থাকার কারণে ঘণ্টার অধিক সময় ধরে সেখানেও জ্যামে আটকে থাকতে হয়েছে। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক এখনো চার লেন হয়নি।’ সারজিস বলেন, ‘ঢাকা থেকে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় রেলে যেতে এখনো ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা সময় লাগছে। সাধারণত ঢাকা-বগুড়া-রংপুর হয়ে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় যাওয়ার কথা। অথচ তাদের রাজশাহী-নওগাঁ-নাটোর হয়ে ট্রেনে করে প্রায় ২০০ কিলোমিটার অধিক রাস্তা ঘুরে যেতে হয়। যেখানে বগুড়া হয়ে রংপুর দিয়ে ট্রেনলাইন থাকলে এই ২০০ কিলোমিটার পথ ঘুরতে হতো না।’ এই তরুণ বলেন, ‘এই ঈদে ঢাকা থেকে পঞ্চগড় যেতে আমার সময় লেগেছে ১৭ ঘণ্টা। আসতে সময় লেগেছে ১৫ ঘণ্টা। কারও ২০ ঘণ্টাও পেরিয়ে গেছে। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে ঢাকা থেকে দেশের এক প্রান্তে যেতে যদি এত দীর্ঘ সময় লাগে তাহলে উন্নয়নের গল্প খুবই অপ্রাসঙ্গিক। যমুনা সেতুতে ব্যয়কৃত অর্থ আজ থেকে ৬-৭ বছর আগেই টোলের মাধ্যমে আদায় হয়েছে। তারপরও টোল প্লাজাকেন্দ্রিক এই ভোগান্তির নিরসন হয়নি। হয় টোল আদায় এখন বন্ধ করা উচিত, না হলে টোল সংগ্রহের বুথ অন্তত তিনগুণ বৃদ্ধি করে কৃত্রিম জ্যাম তৈরির এই ক্ষেত্রগুলো বন্ধ করা উচিত। মানুষের ভোগান্তি লাঘব করা উচিত।’ ‘উত্তরের জনপদগুলো থেকে আওয়ামী লীগ শুধু শোষণ করেছে, দেওয়ার বেলা ছিল পক্ষপাতদুষ্ট।’ তিনি বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশে উত্তরের জনপদগুলো এই বৈষম্য আর মেনে নেবে না। ঢাকা থেকে বিভাগীয় শহরগুলোর রাস্তা এক্সপ্রেসওয়ে অথবা চার লেন করতে হবে। আন্তঃবিভাগীয় রেলের লাইনগুলো সর্বনিম্ন সময়ে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আন্তঃনগর ট্রেনের নছিমনের মতো বগিগুলো পরিবর্তন করে মানসম্মত, ভ্রমণ উপযোগী বগি সরবরাহ করতে হবে।’ এনসিপির এই নেতা আরও লিখেছেন, ‘একটা দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য ওই দেশের সকল অঞ্চলের অবকাঠামোগত উন্নয়নের ভারসাম্য প্রয়োজন। আগামীতে উত্তরবঙ্গের মানুষের সেই উন্নয়ন ভারসাম্যে সজাগ দৃষ্টি থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের গণমানুষ, আপনারা আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলো তুলে ধরুন। এই সমস্যার সমাধানই হতে হবে উত্তরবঙ্গকে নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহার। যারা লুটপাট, চাঁদাবাজি, ক্ষমতার অপব্যবহার, দখলদারত্ব বাদ দিয়ে জনগণের জন্য কাজ করবে তাদেরই ভোট দেবেন। যারা করবে না তারা যে দলেরই হোক না কেন তাদের বর্জন করবেন।’

লন্ডনে যৌথ প্রেস ব্রিফিং প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতাকে ক্ষুণ্ন করেছে: জামায়াত
লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক হয়েছে। বৈঠক শেষে দেওয়া যৌথ বিবৃতির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটি বলছে, বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ বিবৃতি প্রদানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় ঘটেছে। এর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তার নিরপেক্ষতাকে ক্ষুণ্ন করেছে। এদিকে শনিবার (১৪ জুন) সকাল ১০টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্ব করেন। যেখানে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা শেষে দলের পক্ষ থেকে গতকালের বৈঠক নিয়ে এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়। জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুপুরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ১৩ জুন লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যে বৈঠক হয়েছে, এটাকে জামায়াতে ইসলামী খুবই স্বাভাবিক মনে করে। এরইমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা পৃথক এবং যৌথভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত ৬ জুন তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। তার এই ঘোষণার পর লন্ডনে সফরকালে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ প্রেস ব্রিফিং এবং বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ বিবৃতি প্রদান করা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় বলে মনে করি আমরা। এর মাধ্যমে একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন তিনি, যা তার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে। আমরা মনে করি দেশে ফিরে এসে প্রধান উপদেষ্টার অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে তার অভিমত প্রকাশ করাই সমীচীন ছিল। জামায়াতের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনে করে, সরকার প্রধান হিসেবে কোনো একটি দলের সঙ্গে যৌথ প্রেস ব্রিফিং নৈতিকভাবে কিছুতেই যথার্থ নয়। প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ প্রেস ব্রিফিং করায় আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার বিষয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে জনগণের মধ্যে। যেখানে বাংলাদেশে অনেকগুলো রাজনৈতিক দল সক্রিয়ভাবে বিদ্যমান, সেখানে শুধু কোনো একটি দলের সঙ্গে আলাপ করে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সঠিক বলে বিবেচিত হতে পারে না। আমরা আশা করি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকার নিরপেক্ষ থেকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবেন এবং বিচার ও সংস্কারের ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করবেন। বিবৃতিতে সরকারের নিরপেক্ষতা এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে যে সংশয় দেখা দিয়েছে তা নিরসনকল্পে প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকা জাতির সামনে স্পষ্ট করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ।

নির্বাচনের জন্য ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ই উপযুক্ত: সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ই সবচেয়ে উপযুক্ত হবে। এর পরে দেশের আবহাওয়া প্রতিকূল থাকে। তা ছাড়া বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা হয়। নির্বাচনের জন্য এর পরের সময়টা উপযুক্ত নয়। আজ শুক্রবার যুক্তরাজ্যে সফররত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন জোনায়েদ সাকি। বৈঠককে স্বাগত জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, ‘এর মাধ্যমে রাষ্ট্রের অর্থনীতি ও জনজীবনের সংকট দূর হবে। আমরা আগেই প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছিলাম, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজন করতে। কিন্তু এত দিন সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সরকার এপ্রিলে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিল, যে সময়টা যথাযথ ছিল না।’ নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরি হলে রাজনীতিতে আস্থাপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসবে বলে মনে করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি দেশের জন্য এই পরিবেশ বজায় থাকা জরুরি। সংস্কারের জন্য এই পরিবেশ সহায়ক হবে। এত দিন নির্বাচনের তারিখ নিয়ে উদ্বেগ থাকায় সংস্কার নিয়ে তেমন অগ্রগতি ছিল না। এখন সংস্কারের অগ্রগতি নিয়ে কাজ করা যাবে।’ সংস্কার কার্যক্রমকে জনগণ নির্বাচনের মাধ্যমে মীমাংসা করবে উল্লেখ করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, ‘সংস্কার নিয়ে ইতিমধ্যে আমরা দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা করছি। সর্বোচ্চ মতামতের ভিত্তিতে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি হবে, তার ওপর জুলাই সনদ তৈরি হবে। এসব বিষয়ে আরও আলাপ–আলোচনা দরকার।’ তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই হত্যার বিচার শুরু হয়েছে, এটা আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক। এই পরিস্থিতি ধরে রাখতে হবে।’

ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক নিয়ে হতাশার কথা জানালেন হাসনাত
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের সময় যেভাবে গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা বিচার ও সংস্কার সেভাবে প্রাধান্য পায়নি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। শুক্রবার (১৩ জুন) ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে এক পোস্টে তিনি এ হাতাশার কথা জানান। পোস্টে হাসনাত লেখেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের বৈঠককে আমরা ইতিবাচকভাবে দেখি। জাতীয় ঐক্যমত্যের প্রশ্নে, দেশের স্বার্থে সরকারের সাথে সকল রাজনৈতিক দলের এমন সুসম্পর্কই কাম্য।’ সরকারের উদ্দেশে এই এনসিপি নেতা বলেন, ‘কিন্তু হতাশার বিষয় বৈঠকে নির্বাচনের মাস ও তারিখ যেভাবে গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা বিচার ও সংস্কার সেভাবে প্রাধান্য পায়নি। এই সরকার শুধুমাত্র নির্বাচন দেওয়ার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো রূপ নয় বরং একটি অভ্যুত্থানের উপর দাঁড়িয়ে, দেশের মানুষের অসংখ্য ত্যাগের উপর দাঁড়িয়ে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার কাছে দায়বদ্ধ একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।’ ‘জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই ঘোষণা পত্র ও জুলাই সনদ, মৌলিক সংস্কার, দৃশ্যমান বিচার এবং নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন নির্বাচনের পূর্বশর্ত।’ ‘জুলাই সনদের পূর্বে নির্বাচনের মাস আর তারিখ নিয়ে কথা বলা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়বদ্ধতা ভুলে যাওয়ার নামান্তর। সনদ রচনার পরেই নির্বাচন বিষয়ক আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত।’ সারা দেশে চাঁদাবাজি ও অনিয়মের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের স্থানীয় পর্যায়ে ইতোমধ্যে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, প্রশাসনকে প্রভাবিত করা, পেশি শক্তির প্রদর্শনসহ ক্ষমতার অপব্যবহারের নানা দৃষ্টান্ত প্রতিনিয়ত দৃশ্যমান হচ্ছে। এই অবস্থায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা। যেটা নির্বাচনের অন্যতম আরেকটি পূর্বশর্ত।’ হাসনাত বলেন, ‘নির্বাচনের মাস এপ্রিল কিংবা ফেব্রুয়ারি যেটাই হোক না কেন, তার চেয়ে মুখ্য বিষয় হচ্ছে নির্বাচনের পূর্বে জুলাই সনদ দৃশ্যমান বিচার এবং মৌলিক সংস্কার গুলো হচ্ছে কিনা।’
.webp)
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে রিজভীর বার্তা
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর জাল করে ফেসবুকে ভুয়া বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে একটি বার্তা দিয়েছেন বিএনপির এ নেতা। শুক্রবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বার্তায় রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এই মর্মে দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, কোনো স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহল আমার স্বাক্ষর জাল করে আজ ১৩ জুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি পোস্ট করে। ফেসবুকে পোস্টকৃত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি সম্পূর্ণরুপে মিথ্যা, বানোয়াট ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি বলেন, উল্লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি আমার স্বাক্ষরে বিএনপির দপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়নি। এটি সম্পূর্ণরুপে বানোয়াট ও ভুয়া। আমার স্বাক্ষর জাল করে প্রচারিত ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিটির বিষয়ে দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।

‘অন্তর্বর্তী সরকার ও বিএনপির সমঝোতা রাজনৈতিক সংকট দূর করবে’
অন্তর্বর্তী সরকার ও বিএনপির সমঝোতা রাজনৈতিক সংকট দূর করবে বলে মনে করছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। শুক্রবার (১৩ জুন) এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। তারা বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক পরবর্তী এক বিবৃতিতে বলেছেন, নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা কাজ করছিল। প্রধান বিরোধীদল বিএনপিসহ একাধিক রাজনৈতিক দল ডিসেম্বর-২৫ এ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল। প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক এপ্রিলে নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা রাজনীতিতে একটি চাপা উত্তেজনা তৈরি করেছিল। আজকের বৈঠকে তারেক রহমান ডিসেম্বর থেকে সরে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টাও শর্তসাপেক্ষে তা বিবেচনার কথা বলেছেন। নিজস্ব অবস্থানকে যৌক্তিক কারণে পুনর্বিবেচনা করার এই ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। উভয় নেতাকে এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র বলেন, সংস্কার, বিচার ও জুলাই সনদ নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে নীতিগত সমর্থন পাওয়া গেছে আজকের বৈঠক থেকে। এটা স্বৈরতন্ত্রমুক্ত আগামীর বাংলাদেশ নির্মাণের পথকে মসৃণ করবে বলে বিশ্বাস করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। মাওলানা গাজী আতাউর রহমান আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, আজকের পরে রাজনীতিতে বিদ্যমান উত্তেজনা কেটে যাবে, অনিশ্চয়তা দূর হবে এবং বৃহত্তর ঐকমত্য তৈরি হবে। শুক্রবার যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় (বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ৩টা) তা শেষ হয়। বৈঠক শেষে বিকেল চারটার দিকে উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা যৌথ বিবৃতি দেন। এতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে রোজা শুরুর আগে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছেন তারেক রহমান। প্রধান উপদেষ্টা তাতে সম্মত হয়ে বলেছেন, সব আয়োজন সম্পন্ন হলে রোজার আগে (ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি) নির্বাচন দেওয়া সম্ভব।

আমাদের উদ্দেশ্য সফল না হওয়া পর্যন্ত ক্ষান্ত হবো না: তাসনিম জারা
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা বলেছেন, নারীদের সরাসরি নির্বাচনের সুযোগ এখন সৃষ্টি করতে না পারলে আমরা আরও কয়েক দশক পিছিয়ে যাবো। তাই এখন আমাদের আওয়াজ তুলতে হবে। আমাদের উদ্দেশ্য সফল না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্ষান্ত হবো না। শুক্রবার (১৩ জুন) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা বলেন তাসনিম জারা। ‘বেগম খালেদা জিয়ার বিএনপি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আজকের বিএনপি তার বিরোধিতা করছে’ উল্লেখ করে তাসনিম জারা ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘ঈদের আগে ঐকমত্য কমিশনে যখন সংরক্ষিত আসনে নারীদের সরাসরি নির্বাচনের কথা বলি। বিএনপির প্রতিনিধি সালাহউদ্দিন আহমেদ উত্তর দেন, তাসনিম জারা যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা সামাজিক বাস্তবতা, রাজনৈতিক বাস্তবতা, নারীদের অগ্রগতি বিবেচনায় নিয়ে তারা সমর্থন করছেন না। উনি বলেছেন, সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করা হোক এবং এখন যেভাবে পার্টির প্রধানরা ঠিক করেন কে হবেন সংরক্ষিত নারী এমপি, সেটাই যেন বহাল থাকে। পরবর্তীতে যদি নারীদের যথেষ্ট অগ্রগতি হয়, তখন সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা বিবেচনা করা যেতে পারে।’ ফেসবুকে তাসনিম জারা আরও লেখেন, “বেগম খালেদা জিয়ার বিএনপি ২০০১ সালের নির্বাচনি ইশতেহারকে নাম দিয়েছিল নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি। ইশতেহারকে প্রতিশ্রুতি বলার একটা গুরুত্ববহ দিক আছে। আমাদের সংস্কৃতিতে ‘প্রতিশ্রুতি’ শব্দটার প্রতি একটি বিশেষ মর্যাদা আছে। আমরা যখন কোন কিছু করব বলে আন্তরিকভাবে বোঝাতে চাই, তখন প্রতিশ্রুতি দেই। হয়তো বিএনপি বোঝাতে চেয়েছিল যে, এই কথা তারা রাখবেই। যাই হোক, সেই ইশতেহারের ৩.১৩ ধারায় বেগম খালেদা জিয়া দেশবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন—“সংসদে নারীদের আরো কার্যকরী ভূমিকা পালন ও ক্ষমতায়নের জন্য তাদের আসনসংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে এবং মহিলা আসনে সরাসরি নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে’।” “এটি কেন প্রয়োজন, সেটাও বেগম খালেদা জিয়া ব্যাখ্যা করেছিলেন এই বলে যে, ‘বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। কিন্তু যুগ যুগ ধরে তারা তুলনামূলকভাবে পশ্চাদপদ রয়ে গেছেন। জনসংখ্যার অর্ধেক অংশকে শিক্ষাহীন, আত্মবিশ্বাসহীন ও পরনির্ভরশীল রেখে কোনো জাতি সার্বিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জন করতে পারে না। নারী সমাজকে তাদের যথার্থ সামাজিক অবস্থান ও মহৎ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। এ অবস্থা চলতে দেওয়া উচিত নয়।’এই প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে মানুষ বিএনপিকে ভোট দিয়েছিল, কিন্তু তারা সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ আজকের আলোচনার বিষয় নয়। হয়তো বিএনপি ভবিষ্যতে ব্যাখ্যা করবে কেন তা করতে পারেনি। ২০০১ সালে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, এই অবস্থা চলতে দেওয়া উচিত নয়। আর আজ ২০২৫ সালে, জুলাই আন্দোলনের পর ঐতিহাসিক এই সুযোগের সামনে দাঁড়িয়ে বিএনপির প্রতিনিধি সালাহউদ্দিন আহমেদ বলছেন, সময় এখনও হয়নি”, যোগ করেন এনসিপির এই নেত্রী। ফেসবুক পোস্টে তাসনিম জারা লেখেন, ‘হয়তো আরও ১০ বছর পরে নারীদের নির্বাচন করার উপযোগী অবস্থা তৈরি হবে। কিন্তু তিনি বলেননি, কী দেখে আমরা বুঝবো সেই অবস্থা তৈরি হয়েছে। তিনি বলেননি, বিএনপি কী করবে নারী সমাজকে ইলেকশনের জন্য প্রস্তুত করতে। তিনি বলেননি কেন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতিশ্রুতি সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্য পূর্ণ ছিল না। শুধু বলছেন, নারীদের সরাসরি নির্বাচন সম্ভব না। সেই কাঠামোই বহাল থাক, যেখানে কে হবেন নারী সাংসদ, তা ঠিক করবেন দলের প্রধান। জনগণ নয়। এই নারী সাংসদদের কোনো এলাকা থাকবে না। কোনো ভোটার থাকবে না। জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকবে না। জবাবদিহি থাকবে কেবল দলের কাছে।’ ‘এখন আমরা কী করতে পারি’ এমন প্রশ্ন উল্লেখ করে তাসনিম জারা লেখেন, ‘নারীদের সরাসরি নির্বাচনের সুযোগ এখন সৃষ্টি করতে না পারলে আমরা আরও কয়েক দশক পিছিয়ে যাবো। তাই এখন আমাদের আওয়াজ তুলতে হবে। আমাদের উদ্দেশ্য সফল না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্ষান্ত হবো না।’ তাসনিম জারা আরও লেখেন, ‘আমরা একটি ইভেন্ট খুলেছি। সেখান থেকে আমরা কিছু কাজ হাতে নিচ্ছি। যেমন জনগণের স্বাক্ষর ও খোলা চিঠি। সেখানে যোগ দিন। আপনার অন্য কোনো আইডিয়া থাকলে সেটা ইভেন্টে লিখুন বা আমাকে মেসেজ পাঠান। https://www.facebook.com/share/19ZDWP7JZb/। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কিছু কার্যক্রম হাতে নেবো। আপনি যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট হন আর এই ক্যাম্পেইনে সাহায্য করতে চান, তাহলে আমাকে মেসেজ করুন।’

বিএনপি মানুষের সংকটকালীন দল: সাদিক
বিএনপি একটি আস্থার ও ভালোবাসার দল এবং মানুষের সংকটকালীন দল বলে মন্তব্য করেছেন গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মইনুল হাসান সাদিক। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কর্তৃক জাতির সামনে উপস্থাপিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান আলোচক হিসেবে তিনি এ কথা বলেন। শুক্রবার (১৩ জুন) দিনভর সাদুল্লাপুর উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের দক্ষিণ কাজীবাড়ী গ্রামে এ কর্মসূচির আয়োজন করে সাদুল্লাপুর উপজেলা বিএনপি। ডা. মইনুল হাসান সাদিক বলেন, বিগত ২০২০ সাল থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলে আসছেন। রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের মাঝে ফিরে দেওয়ার জন্য দীর্ঘ ১৭ বছর জীবনবাজি রেখে লড়াই করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ছামছুল হাসান ছামছুলের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আব্দুস ছালাম মিয়ার সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক আনোয়ারুল ইসলাম, যুবদলের সভাপতি মাহিদুল ইসলাম মিঠু, কৃষক দলের সভাপতি শফিয়াজ্জামান, ছাত্রদলের সভাপতি পারভেজ সরকারসহ উপজেলা বিএনপি ও তার সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।

নূর কাউকে মানে না, গায়ের জোরে মব সৃষ্টি করে: হাসান মামুন
পটুয়াখালীর গলাচিপা-দশমিনার নিজ এলাকায় সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর মব সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন। তিনি বলেন, নূর কাউকে মানে না। সে গায়ের জোরে মব সৃষ্টি করে। শুক্রবার (১৩ মে) বিকেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাসান মামুন এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, নুরুল হক নুর ৫ আগস্টের পর থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তার দলীয় নেতা কর্মীদের দ্বারা মব সৃষ্টি করেছে। এখন নিজ এলাকায় মব সৃষ্টির মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে। তবে স্থানীয় জনগণ এবং বিএনপির নেতাকর্মীরা নুরের মব সৃষ্টির চেষ্টা রুখে দিয়েছেন। নুরুল হক নুরের এ ঘটনার সূত্রপাত প্রসঙ্গে হাসান মামুন বলেন, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির বিষয়ে ভারসাম্যহীন বক্তব্য দেন নুর। সেই বক্তব্যের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই বিএনপি নেতা। এরপরই নুর সেখানে মব সৃষ্টির চেষ্টা করে। হাসান মামুনের দাবি, ‘ইউনিয়ন বিএনপি নেতার সংবাদ সম্মেলনের পর নুর তার দলীয় নেতাকর্মীদের দ্বারা মব সৃষ্টির চেষ্টা করে। এসময় ইউনিয়ন বিএনপির অফিস ভাঙচুর করে তারা। নেতাকর্মীদের রক্তাক্ত ছবি দেখে ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ মানুষকে নিয়ে মব প্রতিহত করে। এসময় নুর পাশ্ববর্তী এলাকায় ছিলেন। বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা সাধারণ জনগণকে নিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে।’ ‘এরপরও আমি খবর পেয়ে বকুলবাড়ীয়ায় অবরুদ্ধ গণঅধিকার পরিষদ নেতা ও সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরকে উদ্ধার করার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ জানাই। এবং বিএনপির সকল নেতাকর্মীদেরকেও শান্ত হয়ে পুলিশ প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছি। কিন্তু নূর প্রশাসনের কোন কথাই শুনেনি। এমনকি বিএনপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করলে বিএনপি সেটি মেনেছে, কিন্তু নূর প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কর্মসূচি পালন করেছে’, বলেন বিএনপি নেতা হাসান মামুন। তিনি বলেন, নূর ১৪৪ ধারা জারির কারণে জেলা প্রশাসককে দোষারোপ করেছেন। অথচ পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধে ১৪৪ ধারা জারি করেন ইউএনও। এখানে জেলা প্রশাসককে দোষারোপ করা উদ্দেশ্যমূলক। নূর কাউকে মানে না। সে গায়ের জোরে মব সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে আবার মার খাওয়ার নাটক করে সিম্প্যাথি পেতে চায়। বিএনপির কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, নূর উদ্দেশ্যমূলকভাবে মব সৃষ্টি করে শান্তিপ্রিয় গলাচিপা-দশমিনার পরিস্থিতি উত্তপ্ত ও ঘোলাটে করতে চায়। এ ঘটনায় মব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমি অনুরোধ জানাচ্ছি। প্রসঙ্গত, গলাচিপা উপজেলার পাতাবুনিয়া বাজারে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের অনুসারীরা রাস্তায় গাছ ফেলে হাতে রামদা, রড, লাঠি ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরসহ নেতাকর্মীদের অবরুদ্ধ করে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছিলেন সাবেক ভিপি নূর। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাসান মামুন এসব কথা বলেন।

ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জামায়াতের
ইরানের সামরিক ও পরমাণু স্থাপনায় ইসরায়েলের বিমান হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও গভীর শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার (১৩ জুন) এক বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ১৩ জুন (শুক্রবার) ভোর ৪টার দিকে ইরানের রাজধানী তেহরানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বিবৃতিতে বলা হয়, হামলায় ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আরজিএস)-এর প্রধান হোসেইন সালামি, সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মাদ বাঘেরি, খতম-আল আনবিয়া সেন্ট্রাল হেডকোয়ার্টারের কমান্ডার ঘোলামালি রশিদ এবং কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ ইরানের শীর্ষ উপদেষ্টা আলী শামখানি নিহত হয়েছেন। জামায়াত নেতারা বলেন, আমরা এই বর্বর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। তারা যেন শহীদের মর্যাদা লাভ করেন- এই প্রার্থনা করি। তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, আল্লাহ তায়ালা তাদের জান্নাতে উচ্চ মর্যাদা দিন এবং শোকাহত পরিবার-পরিজনকে ধৈর্য ধারণের তাওফিক দান করুন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা আশা করি ইরানের সরকার ও জনগণ এই শোক ও ক্ষয়ক্ষতির ঘোর কাটিয়ে উঠে শিগগিরই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে সক্ষম হবেন।

‘ড. ইউনূস-তারেকের বৈঠক গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণার শামিল’
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক একটি দলকে খুশি করার জন্য, যা গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণার শামিল’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্নয়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী। শুক্রবার (১৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন। নাসির উদ্দীন অভিযোগ করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপির পক্ষে কাজ করছে। বৈঠকে বিচার, সংস্কার ও জুলাই সনদের কোনো বার্তা নেই। এই বৈঠক একটি দলকে খুশি করার জন্য, যা গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। বৈঠকে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। পাটোয়ারী বলেন, দেশের সিদ্ধান্ত দেশেই হবে, জনগণকে পাশ কাটিয়ে বিদেশের কোনো সিদ্ধান্তকে দেশের জনগণ মেনে নেবে না। বিচার, সংস্কার, জুলাই সনদ ও নির্বাচন কমিশনের পূর্ণগঠন না হলে নির্বাচনে যাবে না হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে যদি এই সরকার ব্যর্থ হয় তাহলে দ্বিতীয় অভ্যুত্থানের দিকে যাবে এনসিপি। এদিকে অপর একটি ব্রিফিংয়ে কথা বলেন এনসিপির যুগ্ম আহবায়ক সারোয়ার তুষার ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব আরিফুল ইসলাম আদিব। আরিফুল ইসলাম আদিব বলেন, জাতীয় নির্বাচনের ইস্যুতে সকল স্টেক হোল্ডার ও শহিদ পরিবারের সঙ্গে বসতে হবে। একটি দল বা একক ব্যক্তির সঙ্গে বসে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয়া একটি অশনিসংকেত। সারোয়ার তুষার বলেন, কি পদ্ধতিতে সংস্কার হবে তা ঠিক হয়নি। এর আগেই প্রধান উপদেষ্টার গণভোট খারিজ করার সিদ্ধান্ত ভালো কিছু না। ইসির নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ। এটা সংস্কার করা অন্যতম মৌলিক সংস্কার বলে মনে করি।

বিদেশের মাটিতে মিটিং দেশের জনগণের জন্য অপমানজনক: এনসিপি
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিদেশের মাটিতে মিটিং ও ঘোষণা দেওয়া দেশের জনগণের জন্য অপমানজনক। শুক্রবার ১৩ জুন বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকের পর এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, পুরনো বন্দোবস্তার দিকেই আগাচ্ছে সরকার। তিনি বলেন, একটি দলের আগ্রহে নির্বাচনী ট্রেনে তুলে দেওয়া হচ্ছে। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মত্যাগের অবমাননা দেশের জনগণ মেনে নেবে না। তিনি আরও বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষা পাশ কাটিয়ে মৌলিক সংস্কার ও জুলাই ঘোষণাপত্র ছাড়া নির্বাচন হলে গণতান্ত্রিক উত্তরণ হবে না।

লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
একটি রাজনৈতিক দলকে খুশি করার জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন এগিয়ে আনা হচ্ছে, যা জুলাইয়ের শহীদদের সঙ্গে প্রতারণা বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। শুক্রবার (১৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। এদিকে, যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বলেও দাবি করেন এনসিপির এ নেতা। তার মতে, এ বৈঠকে দেশের মাটি ও মানুষের কোনো সংযোগ নেই। আজ বাংলাদেশ সময় দুপুর দুইটার দিকে লন্ডনে হোটেল ডরচেস্টারে প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মধ্যে প্রায় দেড় ঘণ্টা মতো একান্ত বৈঠক চলে। আর এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে গেছে বলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আগামী রোজার আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলেও বৈঠকের পর বিএনপিপন্থী সমর্থকরা জানাচ্ছেন। যদিও বৈঠকে ভোটের সময় নিয়ে আলাপের বিষয়ে সরকার ও বিএনপির যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তাব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও মনে করেন ওই সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভালো হয়, তা উল্লেখ করেন তারেক রহমান। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। এই বিবৃতির ঘণ্টাখানেক পরই প্রেস ব্রিফিংয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আরও বলেন, সংস্কার আর বিচারকে পাশ কাটিয়ে সরকার যে নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে, তা ১৮ কোটি মানুষের নির্বাচন হবে না। এমনভাবে নির্বাচনের দিকে গেলে আরেকটা ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে। জনগণ আবারও গণঅভ্যুত্থানে যেতে বাধ্য হবে। তিনি আরও বলেছেন, বিদেশের মাটিতে বসে যখন সরকার বিশেষ দলের সাথে নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে বসে তখন এটা হয়ে যায় গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী। সেখানে জুলাই ঘোষণার স্পষ্ট বার্তা দেখিনি। মৌলিক সংস্কার প্রশ্নেও বার্তা পাইনি। শুধু একটি দলকে খুশি করতে নির্বাচন নিয়ে বার্তা আসছে। বিচার ও সংস্কার না হলে তার দল এনসিপি নির্বাচনে অংশ নেবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। এদিকে, দলটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেছেন, শহীদ পরিবারের সঙ্গে আলাপ করে নির্বাচনের সময় দেয়া উচিত ছিল। এক দলের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেয়া অশনি সংকেত। এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেছেন, কী পদ্ধতিতে সংস্কার হবে তা ঠিক হয়নি। এর আগেই প্রধান উপদেষ্টার গণভোট খারিজ করার সিদ্ধান্ত ভালো কিছু নয়।

প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমানের বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে: মির্জা ফখরুল
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রায় ২ ঘণ্টার বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়ে বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বৈঠকটি সত্যিকার অর্থে টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে কাজ করেছে। এটি আমি আগেও বলেছিলাম। বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়েছে। বৈঠকের প্রধান ইস্যু ছিল নির্বাচন। সেক্ষেত্রে নির্বাচন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে আয়োজন করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টা একমত হয়েছেন। আজকের বৈঠকটি আল্লাহর রহমতে সফল হয়েছে।’ শুক্রবার (১৩ জুন) প্রধান উপদেষ্টার ও তারেক রহমানের বৈঠক শেষে ঢাকায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘এর আগে প্রধান উপদেষ্টা আগামী নির্বাচন এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটি নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত সময় নয়, তাই আমরা সময়টি আরও এগিয়ে নিয়ে আসতে বলেছিলাম। অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, বিষয়টিতে প্রধান উপদেষ্টা সম্মত হয়েছেন এবং নির্বাচনের সময় ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে করার ঘোষণা দিয়েছেন।’ ফখরুল বলেন, ‘প্রথম একটি বৈঠকেই তারেক রহমান দেশনায়ক হিসেবে সফল হয়েছেন। এই বৈঠক নিয়ে পুরো দেশবাসী উদ্বিগ্ন ছিল। নির্বাচন নিয়ে পুরো জাতি একটি অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিল। কিন্তু এই বৈঠকের মাধ্যমে জাতি আবার একটি নিশ্চয়তা পেয়েছে।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অতীতে বিভিন্ন ধরনের কথা হয়েছে। সেসব ভুলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে আমাদের কাজ করতে হবে। ফ্যাসিস্ট আমলের ১৫ বছরের যে ধ্বংসতূপ, সেসব থেকে যেন আমরা একটা গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে যেতে পারি এবং জাতীয় আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারি, সেটির জন্য কাজ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমি স্মরণ করছি যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট সরকার পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। চারদিকে অনিশ্চিয়তা ছিল কিন্তু এই দুই নেতা আবার প্রমাণ করলেন, বাংলাদেশের মানুষ প্রয়োজনে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে, নেতারা নেতৃত্ব দিতে পারেন।’ ফখরুল বলেন, ‘বৈঠক শেষে তারেক রহমানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে। তিনি জুলাই আন্দোলনের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং যেসব সাধারণ মানুষ আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন। এছাড়া দীর্ঘ সময়ে বিএনপির যেসব নেতাকর্মীরা লড়াই-সংগ্রাম করেছেন, তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।’ বিএনপি মহাসচিব আরও বলেণ, ‘গণতন্ত্র এক দিনের বিষয় নয়, এটি চর্চার বিষয়। সারাদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় বকাবকি করে নয়, বরং আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে দেশকে পুনর্গঠনের জন্য সবার ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’

দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত সময়মতো নেবেন তারেক রহমান: খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত সময়মতো নেবেন তারেক রহমান। শুক্রবার লন্ডন সফররত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। তারেক রহমান দীর্ঘদিন যাবৎ এখানে (লন্ডনে) অবস্থান করছেন এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন তার দেশে ফিরতে কোনো বাধা নেই। এই ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না কিংবা তারেক রহমান কবে দেশে ফিরতে পারেন- এমন প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, এ ব্যাপারে আলোচনার কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমি মনে করি না। তারেক রহমান সাহেব যখন ইচ্ছা দেশে ফিরে যেতে পারেন। তবে এটার সিদ্ধান্ত তিনি নেবেন, সময়মতো।

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে আগামী নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ হয়েছে
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকটি সত্যিকার অর্থে একটি টার্নিং পয়েন্টে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই বৈঠকে পর একটি যৌথ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সেখানে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে—দুই নেতার বৈঠকটি অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ হয়েছে। শুক্রবার (১৩ জুন) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে উপস্থিতি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। মির্জা ফখরুল বলেন, বৈঠকের আলোচনা বিষয়গুলোর মধ্যে প্রধান ছিল আগামী নির্বাচনের ইস্যু। সেখানে তারেক রহমানের প্রস্তাব ছিল, আগামী এপ্রিলে নির্বাচনের যে তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল, সেটা উপযুক্ত সময় নয় বিধায় এগিয়ে নিয়ে আসা। সেখানে জাতি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে লক্ষ্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা সম্মত হয়েছেন, তারা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে আগামী নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন। বিস্তারিত আসছে...

ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার ও জুলাই সনদ দুটোই হবে: আমীর খসরু
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘বৈঠক নিয়ে আমরা (বিএনপি) সন্তুষ্ট।’ সব বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা তো নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে সামনের দিকে এগোচ্ছি। দেশ গড়ার যে প্রত্যয় আমরা নিয়েছি, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই সেই কাজটা করব। শুধু নির্বাচনের আগে নয়, নির্বাচনের পরেও আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এই কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’ আজ শুক্রবার লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় (বাংলাদেশ সময় বেলা ২ টা) বৈঠকটি শুরু হয়, শেষ হয় সকাল সাড়ে ১০টায়। বৈঠক শেষ করেই বাসার উদ্দেশে রওনা হোন তারেক রহমান। আমীর খসরু বলেন, ‘আমাদের মধ্যে সিদ্ধান্ত আছে যে, ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ হবে। ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা জুলাই সনদ এবং সংস্কার দুটাই করব।’ সংস্কার বিষয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংস্কার বিষয়ে আমরা সবাই একই কথা বলেছি। যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য হবে, সে বিষয়গুলোতে সংস্কার হবে। সংস্কারের বিষয়টা তো চলমান প্রক্রিয়া। এমন না যে, সব সংস্কার এখনই শেষ করতে হবে। নির্বাচনের আগেও কিছু সংস্কার হবে, যেখানে ঐকমত্য হবে। আর নির্বাচনের পরেও এটা অব্যাহত থাকবে। আগে-পরে সংস্কার চলতে থাকবে।’ তারেক রহমানের দেশে ফেরা প্রসঙ্গে খসরু বলেন, ‘এটা নিয়ে আলোচনার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করি না। তারেক রহমান যখন ইচ্ছা দেশে ফিরবেন। এটার সিদ্ধান্ত উনিই নেবেন।’

ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকে সন্তুষ্ট বিএনপি
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ১ ঘণ্টা ৩৫ মিনিটের তাদের এ বৈঠক অত্যন্ত সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলেও জানান তিনি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট বৈঠক করেছেন। এই বৈঠক নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। শুক্রবার (১৩ জুন) বৈঠক শেষে উভয় পক্ষের প্রতিনিধিদের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। আমীর খসরু বলেন, অত্যন্ত সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশে তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী বছরের রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তাব করেন। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও মনে করেন ওই সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভালো হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে। তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার এই অবস্থানকে স্বাগত জানান এবং দলের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। প্রধান উপদেষ্টাও তারেক রহমানকে ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য ধন্যবাদ জানান।