শেখ হাসিনার মতো কয়েকজন উপদেষ্টাও ব্যাংক লুট করছে: নুর

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা যেভাবে প্রকল্পের নামে ব্যাংক লুট করেছে, সেভাবে কয়েকজন উপদেষ্টাও ব্যাংক লুট করছে। হাসিনার আমলে যেভাবে মিডিয়া কন্ট্রোল করা হতো, এখনো সেভাবে মিডিয়া কন্ট্রোল হচ্ছে। মিডিয়ার স্বাধীনতা নেই। নগদ– এ জালিয়াতি নিয়ে নিউজ করায় সাংবাদিকদের হেনস্তা করা হয়েছে।’ আজ মঙ্গলবার (০৩ জুন) রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন নুর। নির্বাচন প্রসঙ্গে নুর বলেন, ‘সম্প্রতি বিভিন্ন দল নিয়ে যে ৫টা মিটিং হয়েছে তা ফলপ্রসূ হয়নি। প্রধান উপদেষ্টা নিজেই বলেছিলেন, ডিসেম্বরে নির্বাচন দিতে চান। এখন সেখান থেকে জুনে কেন আসলো, তা নিয়ে আমাদের সন্দেহ রয়েছে।’ গণঅধিকার পরিষদের এই সভাপতি বলেন, ‘এনসিপি সেনাবাহিনীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে। কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাকে রিফাইন্ড আওয়ামী নেতা বলে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সে হিসেবে তো এই সরকারও চায় রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ রাজনীতি করুক। এর পেছনে ২ জন উপদেষ্টা জড়িত।’ বাজেট প্রসঙ্গে নুর বলেন, ‘ভঙ্গুর এই অর্থনৈতিক অবস্থায় সরকার চাইলেও ভালো বাজেট দিতে পারত না।’ পরাজিত শক্তি যেন চিরতরে জার্মান নাৎসিদের মতো বিলীন হয়ে যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে বলেও মন্তব্য করেন নুর।

শেখ হাসিনার বাজেটের সঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেটের পার্থক্য নেই: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আপনারা (সরকার) ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছেন। এই বাজেট শেখ হাসিনার সাথে পার্থক্য কী বলুন? শেখ হাসিনাও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিল, আপনারাও দিয়েছেন। মঙ্গলবার (৩ মে) দুপুরে পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের উদ্যোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে দুস্থদের মাঝে ঈদসামগ্রী বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন,'আমরা চাই বাংলাদেশ ভালো চলুক। দেশে সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। নির্বাচনটা কবে হবে আর কত দেরি হবে জিজ্ঞেস করলে উপদেষ্টা চুপ করে থাকে। একটা সময় সংস্কারকে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী করেছে। সংস্কারকে সামনে নিয়ে এসেছে। এখন তাও বলছে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দেওয়া বাজেট সম্পর্কে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন,'আপনারা (সরকার) ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছেন। এই বাজেট শেখ হাসিনার সাথে পার্থক্য কী বলুন? শেখ হাসিনাও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিল আপনারাও দিয়েছেন। এটা তো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ডক্টর ইউনূসের সরকার। এই সরকারের হাত দিয়ে কেন খারাপ কাজ হবে এটা মানুষ জানতে চায়। ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেটে এই বাজেটের ২৩ শতাংশ উপরে যাবে শুধুমাত্র প্রশাসনের বেতনের জন্যে। আর সুদের টাকা যাবে ১৪ শতাংশ। তাহলে গরিব মানুষের জন্য কী রেখেছেন?লাভের গুড় তো পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলছে। তাহলে জনগণের জন্য কী করলেন? রিজভী বলেন,'স্বাস্থ্য খাতে, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কম। কিন্তু আমাদের তো বেশি দরকার স্বাস্থ্য খাতে ও শিক্ষা খাতে। সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা তো সরকারই দেখবে। ডক্টর ইউনূস ক্ষমতায় আসার আগে অনেক কথা বলেছে। এখন তো তিনি নিজে ক্ষমতায়। তিনি তো গরিব মানুষকে দেখবেন। তিনি বলেছিলেন, দারিদ্রকে জাদুঘরে পাঠাবেন। এখন দেখছি, ওনার হাত দিয়ে লুটেরা, ব্যাংক ডাকাতরা, যাদের হাতে কালো টাকা তারা সাদা করার সুযোগ পাচ্ছে। যদি শিক্ষা,স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কম থাকে তাহলে মানুষের কল্যাণে যে লড়াই ১৫ বছর ধরে হয়েছে সর্বশেষ জুলাই আগস্টে ছাত্র-জনতা আত্মাহুতি দিয়েছে, শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করছে।দেশের প্রতিটি গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল ডক্টর ইউনূসকে সমর্থন দিয়েছে যে আপনি বেশ ভালো চালান। তার হাত দিয়ে যে বাজেট সে বাজেট গরিবকে আরও গরিব করা এবং মুদ্রাস্ফীতি কমানোর বিষয়টা তো দেখতে পাচ্ছি না। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের চাপ আরও বাড়বে। বিএনপি'র প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিভিন্ন স্মৃতি তুলে ধরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, জিয়াউর রহমানকে শুধু নেতা বললে হবে না, তিনি একটা যুগ সৃষ্টি করা নেতা। জনগণ তাকে নাম দিয়েছে রাখাল রাজা। তিনি মাইলের পর মাইল হেঁটে জনগণের দুর্দশা উপলব্ধি করেছেন। তিনি অনেক ভালো ভালো কর্মসূচি করেছেন। জিয়াউর রহমান জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন। তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান এমন সময় ক্ষমতায় এসেছেন, একদিকে রাজনৈতিক সংকট এবং অন্যদিকে অর্থনৈতিক সংকট। '৭৪-এর দুর্ভিক্ষের সময় ক্ষুধা-দারিদ্র্যে মানুষ এক মুঠো ভাত পাচ্ছে না। এসমস্ত বিপর্যয়কর পরিস্থিতির পরে তিনি ক্ষমতায় এসেছেন। তিনি এগুলো রক্ষার মাধ্যমে কি করে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে, মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে, এ কারণে তিনি সারাদেশে খাল খনন করেছেন। খাদ্য উৎপাদনের জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। অল্প সুদে তিনি ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছেন। এভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে গোটা জাতিকে তিনি একটা শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করিয়েছেন। রিজভী আরও বলেন, জিয়াউর রহমান মানুষের কাছে একজন অনুকরণীয় নেতৃত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তাকে দেশ-বিদেশের আন্তর্জাতিক শক্তি যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে পছন্দ করে না, সেজন্য তাকে (জিয়াউর রহমান) আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে হত্যা করা হলো– তিনি কেন নিজ দেশকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেষ্টা করছেন, দেশকে কেন স্বাবলম্বী করছেন, কেন দেশকে গণতন্ত্র দিচ্ছেন। তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রের নমুনা শেখ হাসিনার আমলে দেখেছি, তার বাপের আমলেও তা-ই ছিল। সে আইন করেছে, কালাকানুন অনেক করেছে৷ কিন্তু মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ছিল না। যারা কিছুটা মতপ্রকাশ করেছেন, তাদের ঠিকানা হয়েছে কারাগারে। এই আমলের ব্যতিক্রম ছিল বিএনপির আমল। বিএনপির আমলে যে কোনও মানুষ নির্বিঘ্নে মতপ্রকাশ করতে পারতো। গণতন্ত্রের নিশ্চয়তার দল হচ্ছে বিএনপি। তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় এসময় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

প্রবাসীদের ভোটার করার দাবি জামায়াতের

প্রবাসীদের ভোটার করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। মঙ্গলবার (০৩ জুন) রাজধানীর বনানী ‘শেরাটন ঢাকা’য় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান এ দাবি জানান। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দল হিসেবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের এক সর্বসম্মত রায়ের মাধ্যমে নিবন্ধন ফিরে পাওয়া উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। জামায়াতের আমির বলেন, জীবন বাজি রেখে যারা দেশ পরিবর্তনের জন্য লড়াই করেছিলেন। তাদের লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিজমকে বিদায় করা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ফ্যাসিস্টরা বিদায় নিয়েছে, ফ্যাসিজম রয়ে গেছে। এর কালো ছায়া এখনো জাতির কাধে রয়ে গেছে। দলের নিবন্ধন বাতিলের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না- এ প্রশ্নের জবাবের তিনি বলেন, যারা আমাদের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল তাদের নিয়ে তেমন কোন চিন্তা আমরা করিনি। তবে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে আমরা চিন্তা করবো। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধিনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির বলেন, আমরা এখনই আশা-নিরাশার কথা বলতে চাচ্ছি না। আমরা তাদের (নির্বাচন কমিশন) পারফরম্যান্স আরও দেখতে চাই। এসময় দলের সিনিয়র নেতাদের পাশাপাশি ঢাকায় অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ট্রাইব্যুনালে গুমের অভিযোগ জমা দিলেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন

শেখ হাসিনাসহ ৭ জনকে বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নিজের গুমের অভিযোগ জমা দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। মঙ্গলবার (৩ জুন) ট্রাইব্যুনালে এ অভিযোগ জমা দেন তিনি। অভিযোগ জমা দিয়ে বিএনপি নেতা সাংবাদিকদের বলেন, গুম, খুনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হবে। তবে এখনো এ ব্যাপারে দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম দেখা না যাওয়ায় ক্ষোভ জানান তিনি। বিচারে দাবিতে তিনি বলেন, এ সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ গুম-খুনে জড়িত সবার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। গুমের ঘটনায় এখন পর্যন্ত যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের সাজা এবং যারা পালিয়ে গেছেন তাদের কমিশনকে খুঁজে বের করার অনুরোধ জানান। তিনি আরও বলেন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল হাসানসহ যারা গুমের সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এই সরকারের দায়িত্ব সবাইকে আইনের আওতায় আনা। সেইসঙ্গে দেশ থেকে গুম-খুনের সংস্কৃতি চিরদিনের জন্য বন্ধ করতে হবে।

প্রস্তাবিত বাজেটকে 'বাস্তবতা বিবর্জিত' আখ্যা বিএনপির

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে 'বাস্তবতা বিবর্জিত' আখ্যা দিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, এই বাজেটে গুণগত কিংবা কাঠামোগত কোনো পরিবর্তন নেই। সোমবার (২ জুন) বিকেলে বনানীর হোটেল সারিনায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অভিযোগ করেন, এই বাজেট রাজস্ব আয়ের সঙ্গে সম্পর্কহীন। তার মতে, সরকার যদি ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করে, তাহলে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের সুযোগ কমে যায়। তিনি আরও বলেন, রাজস্ব আয়ের পুরোটাই পরিচালন ব্যয়ে চলে যাবে। বাজেটের মৌলিক দিকগুলো নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আমীর খসরু বলেন, "এই বাজেটে মৌলিক জায়গায় দূরত্ব রয়ে গেছে। গুণগত দিক থেকে আমরা কোনো পরিবর্তন দেখি না। কাঠামোগত কিন্তু আগেরটাই রয়ে গেছে।" তিনি মনে করেন, রাজস্ব আয়ের ওপর ভিত্তি করে বাজেট প্রণয়ন করা উচিত।

ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় জামায়াত

ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। এ নিয়ে কোনো দলের নির্ধারিত সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পক্ষে নয় দলটি। সোমবার (২ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে চলমান সংস্কার প্রক্রিয়ায় যুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের পর জামায়াতের প্রতিনিধিদলের প্রধান হিসেবে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। ডা. তাহের বলেন, বৈঠকে কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার করতে হবে। তারপর জুলাই সনদে সই করবে সব দল। রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের প্রতি আস্থার কথা বলেছে। তার (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) নেতৃত্বেই জাতীয় নির্বাচন হবে। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন। আমরা তাকে বলেছি, মে-জুন বর্ষা। এর মধ্যেই রোজা ও পরীক্ষা আছে। তাই নির্বাচনের ডেটলাইন ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে হলে বিতর্ক থাকবে না। প্রধান উপদেষ্টা যা-ই করতে চান, একটি রোডম্যাপ করে দিন, আমরা এটা চাই। তাহলে মানুষের মধ্যে আর শঙ্কা থাকবে না। তিনি বলেন, দেশের বাইরে ১ কোটি ১০ লাখ প্রবাসীকে ভোটাধিকারের বিষয়ে কমিশনের কোনো কর্মযজ্ঞ দৃশ্যমান নেই। আমরা এ বিষয়ে অগ্রগতির কথা বলেছি। আমরা নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড চাই। নির্বাচন স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করতে হবে। প্রশাসনকে স্বচ্ছতায় নিয়ে আসতে হবে। ভোট উৎসবমুখর করতে হবে। নির্বাচনের আগেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই মানুষের মধ্যে অনিশ্চয়তা থাকবে না। প্রতিনিধিদলে ছিলেন জামায়াতের দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান ও এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ।

এটি একটি অর্থহীন বাজেট: মঈন খান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, এক কথায় বলতে গেলে সত্যিই আমি বিব্রতবোধ করছি, এক বাক্যে বলতে গেলে এটি একটি অর্থহীন বাজেট। প্রথমত স্বভাবতই বাজেটের আকার সরকার কমিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে। কেননা, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রাজস্ব সংগ্রহের আসলে কোনো নৈতিক শক্তি নেই। সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন তিনি। মঈন খান বলেন, মজার বিষয় হলো, বাজেটের আকার সরকার নমিনালী (নামমাত্র) কমিয়ে আনলেও রাজস্ব বাজেট কিন্তু বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সরকারের আর্থিক ব‍্যবস্থাপনার একটি দুর্বলতা প্রকাশ করে। কাজেই এটা স্পষ্ট যে, এ বাজেটে সরকার গুণগত কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি। তিনি বলেন, এ দেশের নিম্ন আয়ের মানুষ তথা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন‍্যেও সরকার এ বাজেটে কোনো রকম উল্লেখযোগ্য দিক-নির্দেশনা দিতে সক্ষম হয়নি। সার্বিকভাবে এক কথায় বলতে গেলে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অনুপস্থিতিতে এই রুটিন বাজেটের কতদূর বাস্তবায়ন হবে তাও সম্পূর্ণ অনিশ্চিত।

জুলাই সনদের পর নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নির্বাচনের তারিখ জুলাই সনদের আগে ঘোষণা করা ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, জুলাই সনদের পর জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে। তার আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা ঠিক হবে না। সোমবার (২ জুন) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠক শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন। বৈঠকে ৩টি বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে জানিয়ে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশ করতে হবে। চলতি বছর ৫ আগস্টের আগে জুলাই সনদ কার্যকর করতে হবে এবং জুলাই সনদের পরে রোডম্যাপের ঘোষণা করতে হবে। তার আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা ঠিক হবে না। নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা বলেছি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন সংস্কার করা উচিত। নির্বাচন কমিশনকেও পুনর্গঠন করতে হবে।’ এর আগে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠকে জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে প্রথম পর্যায়ের বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো নিয়ে জুলাই সনদ তৈরি করা হবে। বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে দলটির তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল যোগ দেন। আরও যোগ দেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ। এছাড়া এনসিপির নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদ, এবি পার্টি, এলডিপি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতারাও যোগ দেন এই বৈঠকে। এতে অংশ নেয় ২৮টি রাজনৈতিক দল।

দ্রুত নির্বাচন ছাড়া দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে না: প্রিন্স

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, দ্রুত নির্বাচন ছাড়া দেশে স্থিতিশীলতা , শান্তি ও গণতন্ত্র ফিরে আসবে না। নির্বাচনকে যারা সংস্কার ও ফ্যাসিস্টদের বিচারের শর্তের আবর্তে ঘুরপাক করাচ্ছেন তারা রাজনীতিতে অপরিপক্ক ও অনভিজ্ঞ। সংস্কার ও ফ্যাসিস্টদের বিচার চলমান প্রক্রিয়া , সংস্কার ও ফ্যাসিস্টদের বিচার শুরু করে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে। তিনি আজ সকালে ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ পল্লী চিকিৎসক এসোসিয়েশনের উদ্যোগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রখছিলেন। আলোচনা সভায় এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন , ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে অবিলম্বে রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। তিনি বলেন ,যারা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায় তারা গণতন্ত্র , সংস্কার ও ফ্যাসিস্টদের বিচার এবং গণ অভুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে অংগীকারাবদ্ধ। ছাব্বিশের জুনের মধ্যে যারা নির্বাচন চাচ্ছে ,তাদের ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে। তিনি বলেন , দুই একজন উপদেষ্টা ও সরকারের ঘনিষ্ট একটি মহলের কর্মকান্ড ও বক্তব্য সরকারের নিরপেক্ষতাকে ক্ষুন্ন করেছে, একই সাথে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এর মধ্যে জাপানে যাবার আগে ও পরে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য ও কর্মকান্ড রহস্যজনক। তিনি প্রধান উপদেষ্টার প্রতি পক্ষপাতিত্ব না করে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণ ও নির্বাচনের রোডম্যাপ দেয়ার আহবান জানান। তিনি আরও বলেন , অভিজ্ঞতার আলোকে বিএনপিসহ অর্ধ শতাধিক রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আবশ্যক বলে মনে করে। ডিসেম্বর পার হয়ে গেলে ভিন্ন মতলবকারীরা নির্বাচনকে অনিশ্চিৎ করে নতুন চক্রান্তে মেতে উঠবে। দেশ আবার অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। বিএনপি জেনে শুনে দেশকে আবার অন্ধকারে ঠেলে দিতে পরে না। আলোচনা সভায় বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, পল্লী চিকিৎসক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অনবদ্য সৃষ্টি। পল্লী এলাকার সাধারণ নিরীহ মানুষ অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিক ভাবে চিকিৎসার জন্য পল্লী চিকিৎসকদের সরণাপন্ন হন। তাই পল্লী চিকিৎসকদের অবজ্ঞা ও উপেক্ষা করে সর্বজনীন চিকিৎসা বা সবার জন্য চিকিৎসা সম্ভব নয়। তারেক রহমানের রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে বলেন , তারেক রহমানের “সবার জন্য চিকিৎসা “ও “সর্বজনীন চিকিৎসা “ নীতি এবং সকল নাগরিকের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা বাস্তবায়নে পল্লী চিকিৎসকদের ভূমিকা অপরিহার্য। তিনি পল্লী চিকিৎসকদেরকে ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানিয়ে বলেন পল্লী এলাকার সাধারণ মানূষের সাথে তাদের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। পল্লী এলাকার সাধারণ মানূষের মাঝে শহীদ জিয়ার আদর্শ ও বিএনপির রাজনীতির বার্তা পৌঁছে দিতে পল্লী চিকিৎসকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। পল্লী চিকিৎসক এসোসিয়েশনের সভাপতি এ এস এম মারুফ হোসাইন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রহমত আলী, চট্রগ্রাম জেলা সভাপতি মামুনুল ইসলাম চৌধুরী, সুরুজ আলী, অনোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ রাসেল, আমির খান, রমিজ উদ্দিন, লোকমান হোসেন প্র্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

অধিকার ফিরিয়ে না দিলে জনগণ ক্ষমা করবে না: ডা. জাহিদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, যত দ্রুত জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিবেন তত দ্রুত সব সমস্যার সমাধান হবে। জনগণ আশ্বস্ত হবে। বসবাসের উপযোগী ও সুশাসনের বাংলাদেশ হবে। জনগণের অধিকার জনগণের কাছে ফেরত না দিলে ইতিহাস আপনাদের ক্ষমা করবে না। সোমবার (০২ জুন) দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। এ দেশের মানুষ বিএনপি ভালোবাসে। গত ১৭ বছর মানুষ ফ্যাসিবাদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে বিএনপির সঙ্গে রাজপথে ছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য মানুষের ভোটাধিকার এখনো প্রতিষ্ঠা হয়নি। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ১০ মাস পরে হলেও ফ্যাসিবাদের বিচার শুরু করেছেন কিন্তু সাগর-রুনি হত্যা মামলা আগের মতোই চলছে কেন? ইলিয়াস আলী চৌধুরীর খোঁজ বের করা হচ্ছে না কেন? এ সময় ডা. জাহিদ দ্রুততার সঙ্গে সংস্কার, বিচার ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও বাস্তবায়নের দাবি জানান। সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক (সদস্যসচিব) পদ মর্যাদার অ্যাডভোকেট আব্দুল হকের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন সিলেট বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক মেয়র আলহাজ জিকে গউজ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতা সিদ্দিকী, সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নুরুল ইসলাম নুরুল। সভায় ১৬টি ইউনিটের সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। সভায় ১৬টি ইউনিটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সালাহ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধিদল

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিতে বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রবেশ করেছে। সোমবার (২ জুন) বিকাল পৌনে ৪টায় রাজধানীর বেইলী রোডে অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিএনপির প্রতিনিধিদল প্রবেশ করে। প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

সালাহউদ্দিনের নেতৃত্বে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নেবে বিএনপি

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেবে। আজ বিকেল ৪টায় রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধি দল অংশ নেবে। বাকি সদস্যরা হলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

ঢাকা মহানগর উত্তরে সমন্বয় কমিটি ঘোষণা এনসিপির

রাজনৈতিক কার্যক্রমকে গতিশীল করতে চেষ্টা চালাচ্ছে নবগঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সেই ধারাবাহিকতায় এবার ঢাকা মহানগর উত্তর শাখায় সমন্বয় কমিটি ঘোষণা করেছে দলটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা আকরাম হুসাইনকে এই কমিটির প্রধান করে ১৩ সদস্যের সমন্বয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (২ জুন) মধ্যরাতে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ কমিটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে মোস্তাক আহমেদ শিশিরকে যুগ্ম সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কমিটির বাকি ১১ জন সদস্য হিসেবে যুক্ত হয়েছেন। জানা যায়, আকরাম হুসাইন গত অর্ধযুগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী নির্যাতনের বিরুদ্ধে ও শিক্ষার্থীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট দাবিদাওয়া আদায়ের বিভিন্ন আন্দোলনের পরিচিত মুখ। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের এই শিক্ষার্থী একসময় ছাত্র অধিকার পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের তৎকালীন সরকার ও দলটির ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা আকরাম কারাবরণও করেছেন। আকরাম হুসাইন বলেন, সমন্বয় কমিটির কাজ হবে ঢাকা মহানগর উত্তরের থানা পর্যায়ে এনসিপির কমিটি করা। রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে এনসিপির নিবন্ধনের আবেদনের শর্ত পূরণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই সমন্বয় কমিটি করা হচ্ছে।

শহীদ জিয়াই বাংলাদেশের প্রথম সংস্কার শুরু করেছিলেন: আবু নাসের

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্র সংস্কার শুরু করেছিলেন বলে জানিয়েছেন দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ। রোববার (০১ জুন) বরিশাল নগরীর ২৫ নং ওয়ার্ড, সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ও টুঙ্গীবাড়িয়া ইউনিয়নে বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মীর উদ্যোগে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী পালনে ৪ দিনব্যাপী কর্মসূচির তৃতীয় দিনে পৃথক আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও তবারক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। এ সময় রহমাতুল্লাহ বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং ভঙ্গুর অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে প্রথম স্বনির্ভর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন। তিনি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার আগে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা এই দেশকে তলাবিহীন ঝুঁড়িতে পরিণত করেছিল। তিনি আরও বলেন, সাংবিধানিক অধিকার, ভোটের অধিকার ও রাজনৈতিক অধিকার এমনকি ধর্মীয় অধিকার হরণ করে দেশের মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষাকে ভুলূন্ঠিত করা হয়েছিল। সেখান থেকে শহীদ জিয়াউর রহমান দেশের মানুষকে উদ্ধার করেছিলেন। বিএনপির এই নেতা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের নাম করে গত সাড়ে ৯ মাসে যা করেছে, তাতে দেশের মানুষ আশাহত হয়েছে। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা, সরকারের বাস্তবমুখী অনভিজ্ঞতার কারণে সেই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন এগুচ্ছে না। ২৫ নং ওয়ার্ডে মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজিক দাঈয়ান ঈশতীর সভাপতিত্বে এবং নগর ছাত্রদল নেতা ইউসুফ আলী বাপ্পির সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন নগর বিএনপির সদস্য জাহিদুর রহমান রিপন, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহবায়ক মিলন চৌধুরী, নগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ওবায়দুর রহমান উজ্জ্বল, স্বাধীনতা ফোরাম মহানগরের সদস্য সচিব নাজমুস সাকিব প্রমুখ। শায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন বিএনপি নেতা হেমায়েত হোসেন মুরাদের সভাপতিত্বে এবং জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ইলিয়াস আহমেদের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সামসুল কবির ফরহাদ, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আসিফ আল মামুনসহ অন্যরা। টুঙ্গীবাড়িয়া ইউনিয়নে বিএনপি'র যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার হোসেন মৃধার সভাপতিত্বে এবং ছাত্রদল নেতা কেএম মনির ও জাহিদুল ইসলাম শাকিলের যৌথ সঞ্চালনায় ইউনিয়নের অন্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ডা. শফিকের গোপনে বিদেশ সফরের গুঞ্জন, কড়া প্রতিবাদ জামায়াতের

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান সম্প্রতি গোপনে কাতারের রাজধানী দোহা সফর করেছেন বলে সামাজিক মাধ্যমে খবর ছড়িয়েছে। তবে এ খবরটিকে স্রেফ মিথ্যাচার আখ্যা দিয়ে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জামায়াত। রোববার (১ জুন) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান অতি সম্প্রতি গোপনে কাতারের রাজধানী দোহা সফর করেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে, তা সত্য নয়। আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান অতি সম্প্রতি কাতারের রাজধানী দোহা কিংবা অন্য কোনো দেশ সফর করেননি। তিনি দেশেই ছিলেন। জামায়াত আমীরের দেশে অবস্থানের প্রমাণস্বরূপ ২৮ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত তিনি যেসব অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন, সেসবের বিস্তারিত তুলে ধরেছে জামায়াত। দলটির বিবৃতি অনুযায়ী, বুধবার (২৮ মে) সকালে ডা. শফিকুর রহমান সংগঠনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল জনাব এটিএম আজহারুল ইসলামকে শাহবাগ মোড়ে সংবর্ধনা দিয়েছেন এবং বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মগবাজার আল-ফালাহ মিলনায়তনে তার সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। তিনি একই দিন বিকালে মগবাজার কাজী অফিস লেনে সাবেক আমীরে জামায়াত অধ্যাপক গোলাম আযমের কবর এবং আজিমপুর কবরস্থানে যথাক্রমে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক ও এটিএম আজহারুল ইসলামের স্ত্রীর কবর জিয়ারত করেন। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ডা. শফিকুর রহমান সারাদিন নিজ বাসা বসুন্ধরায় এবং একই দিন রাতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করেছেন। পরদিন শুক্রবার (৩০ মে) ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করেছেন। এদিন বাদ মাগরিব কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আমীরে জামায়াতের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৯ ও ৩০ মে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জামায়াত আমীরের প্রবেশ ও বৈঠকের সিসিটিভি ফুটেজ কেউ চাইলে যাচাই করে দেখতে পারেন বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে দলটি। এছাড়া ৩০ ও ৩১ মে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের উদ্যোগে জেলা ও মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্যদের দুইদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত শিক্ষাশিবিরের সমাপনী দিনে ডা. শফিকুর রহমান প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন; যার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক মাধ্যমে এবং শিক্ষাশিবিরে প্রদত্ত বক্তব্য দৈনিক পত্রিকায় এসেছে। ৩১ মে জামায়াত আমীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে সকাল ৭টায় সৈয়দপুর বিমানবন্দরের উদ্দেশে যাত্রা করেন এবং একই দিন সন্ধ্যা ৭টায় সৈয়দপুর বিমানবন্দর থেকে ঢাকায় অবতরণ করেন। মাওলানা এটিএম মা’ছুম আরও বলেন, আমরা মনে করি, আমীরে জামায়াতকে জনগণের নিকট হেয় প্রতিপন্ন ও বিতর্কিত করার হীন উদ্দেশ্যেই তার বিরুদ্ধে এই মিথ্যা তথ্য ও প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছে।

আগামীকাল সিইসির সঙ্গে বৈঠকে বসবে জামায়াত

নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পেতে আগামীকাল সোমবার (২ জুন) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে বসবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। রোববার (১ জুন) সিইসির একান্ত সচিব মো. আশরাফুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম ফোন দিয়েছিলেন। তাদের একটি প্রতিনিধি দল কাল সাক্ষাতের সময় চেয়েছিলেন। সিইসি সোমবার দুপুর ১২টায় সময় দিয়েছেন। তারা চার-পাঁচজন আসতে পারেন। এর আগে সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ দলটির নিবন্ধন ফিরিয়ে দিতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। সেইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে অবিলম্বে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। এছাড়া দাঁড়িপাল্লা প্রতীকেই নিবন্ধন হবে কি না সেই সিদ্ধান্তও ইসি নেবে। দুপুরে জামায়াতের নিবন্ধন ফেরত দেওয়া প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, এখন পর্যন্ত জামায়াতের নিবন্ধন এবং প্রতীকের ব্যাপারে আমরা কোনো পর্যবেক্ষণ পাইনি। পর্যবেক্ষণ পাওয়ার পরে আইনগতভাবে যেটা প্রযোজ্য সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ইসি সচিব বলেন, জামায়াতের প্রতীকের ব্যাপারে আইনগতভাবে যেটা প্রাপ্য সেভাবেই পাবে। প্রতীকের ব্যাপারে তাদের নিবন্ধনের ব্যাপারে কী পর্যবেক্ষণ আছে, ডকুমেন্ট না থাকলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আমার কিছু বলার থাকে না।

সাবেক মন্ত্রীর পালানোর বর্ণনা দিয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার স্ট্যাটাস

সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার শ ম রেজাউল করিমকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম তাপস। তাপস নাজিরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক। তিনি কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সদস্য ও উপজেলা শেখ মাঠিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান চৌধুরী (নান্নু) ছোট ভাই। জানা যায়, তাপস ৫ আগস্টের আগপর্যন্ত শ ম রেজাউল করিমের অনুসারী ছিলেন। ছাত্রলীগ সভাপতির বড় ভাই আতিয়ার রহমান চৌধুরী নান্নু সাবেক বন্ধুর বাল্যবন্ধু। তাপস তার স্ট্যাটাসে বলেন, ‘জনাব শ ম রেজাউল করিম, আপনি একজন ভালো আইনজীবী হতে পারেন কিন্তু ভালো মানুষ না। যারা কাছ থেকে দেখেছি তারা জানি, নিজের প্রয়োজনে আপনি এমন কোনো ভয়ংকর কাজ নাই যা আপনি করতে পারেন না। আপনার দীর্ঘ বক্তব্যে আপনি বলেছেন, ওয়ান ইলেভেনে একজনের স্ত্রীর মামলা আপনি লড়েছেন সেই লোক ছিলেন সমন্বয়ক। সে আপনাকে বাসা থেকে পালাতে সহযোগিতা করেছে। তার কাঁধে মাথা রেখে অসুস্থতার অভিনয় করে এক কাপড়ে বাসা থেকে পালিয়েছেন। আচ্ছা ওয়ান ইলেভেনে যার স্ত্রী ছিল! সে কীভাবে এই আন্দোলনের ছাত্র সমন্বয়ক হয়! আপনি যেমন করে শিশু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভুয়া সনদ নিয়েছিলেন, তেমন করে?’ ‘আপনি যে বাক্যটি বলেছেন সেটি হুবহু এমন, -নাজিরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি যাকে আমি টাকা দিয়ে বানিয়েছি। আপনি যদি টাকা দিয়ে আমাকে সভাপতি বানিয়ে থাকেন তাহলে সেই টাকা কাদের হাতে দিয়েছেন কবে কোথায় কার মাধ্যমে? ইতোমধ্যে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সেটি প্রত্যাখান করে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। আমার রাজনৈতিক জীবনে দলীয় বা রাষ্ট্রীয় কোনো প্রোগ্রামে ১টি পয়সাও খরচ হিসেবে আমাকে দেন নাই। আর আপনি সভাপতি বানাতে টাকা খরচ করেছেন! এ কথাতো আপনার বাড়ির গৃহকর্মীটিও বিশ্বাস করবে না।’ ‘আপনি বলেছেন- আপনি কয়েকবার বাসা পাল্টে এক দূরবর্তী আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন, সেটা কেউ জানে না। আমি আপনাকে ফোন ট্র্যাকিং করে খুঁজে বের করেছি এবং জেলা উপজেলার জামায়াত-বিএনপির লোকজন নিয়ে আপনাকে ধরতে গিয়েছি। আপনি তো নিজে বললেন বাসা থেকে বের হওয়ার সময় মোবাইল এবং চশমাটি পর্যন্ত নিতে পারেননি, তাহলে কীভাবে আমি আপনার ফোন ট্র্যাকিং করলাম! যেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আপনাকে খুঁজে পাচ্ছিল না, সেখানে আমি কীভাবে খুঁজে পাব! এ প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই আপনাকে দিতে হবে।’ ‘আপনার কথামত আপনার বাসা বাড়ি লুট হয়েছে, আগুনে পুড়েছে, এক কাপড়ে বেরিয়ে এসেছেন! শুধু পাসপোর্ট পুড়লে না! দিব্যি লন্ডন চলে গেলেন! আমি যদি বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকি এবং আপনাকে ধরার জন্য খুঁজতে থাকি, তাহলে ৫ আগস্টের পর আপনার নির্বাচনী এলাকায় সেই জামায়াত বিএনপি আমার নামে এতগুলো মামলা করল কেন? যার অধিকাংশে আমি ১ নম্বর ও ২ নম্বরের মধ্যে! এলাকায় আপনি কয়টা মামলা খেয়েছেন? আপনার নিজ ভগ্নিপতি কাশেমের কথা মনে আছে? যাকে আপনি বিএনপির সভাপতি থেকে আওয়ামী লীগ বানিয়েছিলেন এবং তাকে দিয়ে আপনি এলাকায় এমন কোনো অপকর্ম নেই যা আপনি করেননি। সত্যিকারের আওয়ামী লীগরা কোনঠাসা হয়ে পড়েছিল আপনাদের প্রভাবে।’ ‘আপনার দাবি অনুযায়ী আমি অপহরণকারী দল নিয়ে এসেছিলাম তখন আপনার ভাই আমাকে পায়ের নিচে পাড়িয়ে ধরে রাখল। আমার সঙ্গে থাকা বাকি অপহরণকারীরা কি তখন ফটোসেশন করছিল? আপনি বলেছেন আমি দলবল নিয়ে মব করেছি। তাহলে এত লোকের মধ্যেও আপনি তামিল নায়কের মতো এতগুলো মানুষ পেরিয়ে মোটরসাইকেলে করে চলে যেতে পারলেন।’ ‘সত্যটা হলো আমি একা একটি মানুষ ছিলাম। তিনি বলেছেন- আমি তার নির্বাচনী এলাকার জামায়াত বিএনপির লোকের সঙ্গে ঐক‍্যবদ্ব হয়ে তাদের সঙ্গে নিয়ে তাকে ধরতে গিয়েছি সেই ভিডিও ফুটেজ তার কাছে আছে। লোকগুলো যেহেতু তার নির্বাচনী এলাকার তাই সবাইকেই তার চেনা উচিত তাহলে ভিডিও ফুটেজ পাবলিক করে আমার সঙ্গে থাকা জামায়াত-বিএনপির লোকগুলোকে চিহ্নিত করে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন।’ ‘আপনি বলেছেন আমি আপনাকে ধরতে গেছি, কিন্তু আপনার স্ত্রী ভাইকে কেন ধরিনি? রাত দেড়টা পর্যন্ত বাসা ঘিরে রাখলে, সেখানেতো আরও অনেক মানুষ জুটে যাবার কথা! আর আমিই বা কেন আপনার স্ত্রী ভাইকে ধরিয়ে দিলাম না? আপনি বলেছেন সীমান্তে পাচারকারীরা বিনা পয়সায় আপনাকে পার করে দিয়েছে। কী সম্পর্ক তাদের সঙ্গে আপনার! সবাই আপনাকে এমনি এমনি সাহায্য করলে! এই গল্পেতো হলিউড সিনেমা হয়ে যাবে। আপনি যেখানেই যান, একজন পিওন বা একজন পরিচিত লোক হঠাৎ করে হাজির হয়ে যায়! কতজন পিওন আপনার?’ ‘ঘটনার আসল চিত্র এবার সত্য জানুক সবাই। একদিন হঠাৎ একট অপরিচিত নম্বর থেকে রেজাউল করিম আমাকে ফোন করেন। তিনি নিজে একটি সময় নির্ধারণ করেন, উপস্থিত থাকতে বলেন। আমি সেই সময়ের এক ঘণ্টা আগেই পৌঁছায়। পরে বুঝতে পারি তিনি দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন এবং তার নিরাপত্তা দিতে তার সঙ্গে সীমান্ত পর্যন্ত যাবার কথা বলেন।’ ‘এরপর তিনি আমাকে এক লাখ (গুণে দেখিনি) কম বেশি হতে পারে। টাকা হাতে দিয়ে বলেন- তোমার জন্য এটা। আমি তা নিতে অস্বীকৃতি জানাই। বলি আমি যদি এটা নিই আপনি মানুষকে বলবেন আমাকে আপনি টাকা দিয়েছেন কিন্তু কত টাকা তা হয়তো বলবেন না। এতে নেতাকর্মীরা আমাকে ভুল বুঝবে। এই কথায় তিনি আমার প্রতি ক্ষুব্ধ হন এবং সিদ্ধান্ত বদলে বলেন, এখন বিদায় হও।’ ‘আত্মীয়স্বজন উপস্থিত হলে আপনি পালানোর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। আমি তখন রেগে বলি- আপনি আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে ফেলে রেখে পালাতে পারেন না। আগে একটা দিকনির্দেশনা দিন, একটা মিটিং অত্যন্ত করেন। তখনই বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এরপর তিনি লিফটে ঢুকে পড়েন। আমিও সাথে সাথে লিফটে উঠে যাই, লিফটের ভিতরে তিনি আমাকে ভয় দেখান এবং অপমানজনক ভাষা ব্যবহার করেন, তখন সেখানে আমাদের মধ্যে সামান্য অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।’ ‘লিফট থেকে নেমে দেখি তার আত্মীয়স্বজন ও সহযোগীদের একটি দল লিফটের নিচে অপেক্ষা করছে। লিফটের দরজা খোলা মাত্র তারা আমাকে ঘিরে ধরে টানাহেঁচড়া শুরু করে। আমি তাকে থামানোর অপ্রাণ চেষ্টা করি। আপনার মুখে প্রায় ইসলামের দোহাই শুনেছি অথচ আপনার মেয়ে লন্ডনের একজন খ্রিস্টান ব্রিটিশ নাগরিককে বিয়ে করে হারাম জীবন-যাপন করছে। এটা দ্বিমুখী চরিত্রের চূড়ান্ত রূপ নয় কী? আপনার ব্যক্তি জীবনের সঙ্গে কথিত ইসলামী মূল্যবোধের এই সংঘর্ষিকতার কী কোনো ব্যাখ্যা আছে?’ ‘আপনার বক্তব্যে প্রতিনিয়ত দ্বিচারিতা অসংলগ্নতা ও মিথ্যাচার ফুটে উঠেছে। আপনি এলাকায় একমাত্র আওয়ামী লীগার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সব কাজই করেছেন, এই অপপ্রচার তারই ধারাবাহিক কাজ। আমার বড় ভাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগে নৌকার মনোনয়ন পেলে, তার প্রতিপক্ষকে জিতিয়ে আনতে আপনি ও আপনার ভাই নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে সব ধরনের সহায়তা করেছেন। তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি। নৌকা বিপুল ভোটে জয় পায়। আমি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছি। ভবিষ্যতে আমরা রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে যেন না পারি, তার জন্য এই দুঃসময়ে এসেও এত বড় মিথ্যাচার এতদিন পরে এসে আপনি করছেন! যেখানে রাজনৈতিকভাবে আপনাকে এলাকায় প্রতিষ্ঠিত করতে আমার সর্বোচ্চ শ্রম আপনার পেছনে দেওয়া। তার প্রতিদান এই!’ ‘অসংখ্য মানুষ আমাকে প্রশ্ন করছে, সেজন্য ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য হলাম। আপনি কথায় কথায় দুর্নীতি করেন নাই বলে দাবি করেন। এ তথ্যগুলো এবার জনগণকে জানাবার সময় এসেছে। অপেক্ষা করুন...!’ উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী-এমপি ও নেতার মতো দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। ইউটিউব চ্যানেলে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সাংবাদিক ফজলুল বারীকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শ ম রেজাউল করিম ৫ আগস্টের দিন ছাত্র-জনতার হাত থেকে বেঁচে যাওয়া ও দেশত্যাগের ঘটনার রোহমর্ষক বর্ণনা দেন। এ সময় নাজিরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপ‌তি ত‌রিকুল ইসলাম চৌধুরী তাপসের বিরুদ্ধে অপহরণ চেষ্টার অভিযোগ আনেন তিনি।

তারেক রহমানসহ সব আসামির খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি

আলোচিত একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের অনুমতি দিয়েছেন আপিল বিভাগ। রবিবার (১ জুন) হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। আগামী ১ জুলাই আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত। এ তথ্য নিশ্চিত করে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, আপিল বিভাগ লিভ দিয়েছেন। আগামী ১ জুলাই আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন। এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের সারসংক্ষেপ দাখিল করতে বলা হয়েছে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ভুঞা। আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এর আগে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিলের ওপর গত ১৫ মে শুনানি শুরু হয়। এরপর গত ২৮ মে ও আজ শুনানি নিয়ে লিভ মঞ্জুর করে আদেশ দেওয়া হয়। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। এতে ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলটির শতাধিক নেতাকর্মী।

বদলে যাবে জিয়া উদ্যানের লেকের চেহারা

রাজধানীর শেরে বাংলানগরের জিয়া উদ্যানের লেকটি পরিচর্যার অভাবে অনেকটা শ্রীহীন হয়ে পড়েছিল। লেকের পানিতে শ্যাওলা জমে রঙ পাল্টে গিয়েছিল। তবে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের চেষ্টায় বদলে যেতে শুরু করেছে লেক এবং আশপাশের স্থাপনার চেহারা। সম্প্রতি লেকের মাঝের ঝুলন্ত সিঁড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার পর রোববার (১ জুন) আমরা বিএনপি পরিবারের সদস্যরা লেকের মধ্য রোপণ করেছেন শাপলা ফুলের চারা। উদ্যোক্তারা আশা করছেন, লেকের পানিতে শাপলা ফুটলে অন্যরকম চেহারা পাবে জিয়া উদ্যান। রোববার (১ জুন) ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের নেতৃত্বে এই ‘শাপলা ফুলের চারা’ রোপণ কর্মসূচি অভিযান শুরু হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই জামান সেলিম, সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সদস্য মাসুদ রানা লিটন ও ফরহাদ আলী সজীব। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়া বিএনপির সভাপতি প্রকৌশলী বাদলুর রহমান খান বাদল, জাতীয় প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনি, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি হাবিবুল বাশার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাসানুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান রনি, ঢাবি ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান অনিক, শেকৃবি ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন, বেসরকারী ইউনিভার্সিটি ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক মশিউর রহমান মহান, ঢাকা কলেজ ছাত্রদল নেতা আব্দুল্লাহ-আল মিসবাহ, শেকৃবি ছাত্রদল নেতা মেজবাহ উদ্দিন, আব্দুল্লাহ আল মারুফ, শোয়েব হাসান, অনিক হাসান, শাহরিয়ার হোসেন, মারুফ মেলিন ও বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ইমতিয়াজ সেতু, ঢাকা মহানগর যুবদলের নেতা মইনুল ইসলাম রনি, ফয়সাল হায়দার ও লিটন ফকির প্রমুখ।

উপদেষ্টা পরিষদ ছাত্রদের ভুল পথে পরিচালিত করছে: হাফিজ

জুলাই আন্দোলনের লড়াকু ছাত্রদের বর্তমানের উপদেষ্টা পরিষদ ভুল পথে পরিচালিত করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। রোববার (১ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ দলের উদ্যোগে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের যে ছাত্রসমাজ আছে তাদের উচিত লেখাপড়া শেষ করে নিজেদের শিক্ষিত করে তারপরে পেশায় আত্মনিয়োগ করা। রাজনীতি করার জন্য উন্মুক্ত দরজা আপনাদের আছে। সার্টিফিকেট নিয়ে আসেন তারপর রাজনীতি করুন । আপনারা আগামী দিনের প্রধানমন্ত্রী-প্রেসিডেন্ট হোন। কিন্তু এখন বারবার তদবির করে, মব করে সচিবালয় হাজির হয়ে অটোপাসের দাবিতে হুমকি দেন যে, আপনাদের ডিগ্রিটা দেন; এটা আপনাদের জন্য সম্মানজনক নয়। তিনি বলেন, এই উপদেষ্টা পরিষদ ছাত্রদেরকে লাইসেন্স দিয়ে দিয়েছে। দুই তিনজন যারা (ছাত্র) ছিল উপদেষ্টা পরিষদে মন্ত্রীর মর্যাদায়, তাদের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। তারা চেয়ারে বসার পর তাদের আত্মীয়-স্বজনরা সব তার মন্ত্রণালয় লাইসেন্স করা শুরু করেছে। এতে করে দেশের ক্ষতি হলো, তাদেরও ক্ষতি হলো। এই ছাত্রদের উপদেষ্টা করাটা বিরাট এক ভুল হয়েছে। তারা যে রাজনৈতিক দলটা গড়েছে এটি কিন্তু আগামী দিনের বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ হতে পারত। তারা যদি দল সৃষ্টি করে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করত, রাজনীতিতে সুবাতাস বইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করত তাহলে তাদের একটা উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ হতো। কিন্তু অল্প বয়সে তাদের এই মন্ত্রী পরিষদে ঢুকিয়ে দিয়ে তাদের নষ্ট করে দেওয়া হলো। তিনি আরও বলেন, হাসিনার শাসনামলে এই দেশটি ভারতের একটি রাজ্যে পরিণত হয়েছিল। আমি এই দেশের ছাত্রদের এবং সাধারণ নাগরিকদের অভিনন্দন জানাই। দেড় হাজার ছাত্র যুবক সাধারণ মানুষের জীবনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা আবার মুক্ত হয়েছি। এই যুদ্ধে প্রতিটি মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। একটি নবগঠিত রাজনৈতিক দল বলার চেষ্টা করে তারা এ দেশকে আবার নতুন করে স্বাধীন করেছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ ভালো লাগে না তাই সেকেন্ড রিপাবলিকের কথা আকাশে বাতাসে বলে বেড়াচ্ছে। ৭২ এর সংবিধান ছুঁড়ে ফেলার কথা বলছে। সংবিধানতো যেকোনো নির্বাচিত সরকার পরিবর্তন করতে পারে। আমূল পরিবর্তন করতে পারে। কিন্তু একাত্তরের গন্ধ আছে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধারা এর সাথে জড়িত ছিল এজন্য একাত্তরের কোনো কিছুই এখানে অনেকের ভালো লাগে না। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আশাহত করেছেন জানিয়ে মেজর হাফিজ বলেন, ড. ইউনূস দেশের কৃতি সন্তান, দেশের গৌরব। আমরা তাকে সব রাজনৈতিক দল সমর্থন দিয়েছি ভবিষ্যতেও দেব। কিন্তু তিনি আমাদেরকে আশাহত করেছেন। বিশেষ করে উনি যে অসত্য কথা বলবেন এটাতো আমরা কল্পনাও করিনি। তাও বলেছেন বিদেশে। জাপানে গিয়ে তিনি বলেছেন একটা মাত্র দল বিএনপি যারা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। এটা কি সত্য ? ৪২টি দল তার সামনে গিয়ে বলেছেন আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চাই। তিনি বলেন, দ্রুত নির্বাচন দেন, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা এই দেশের সকল সংস্কার করবে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, এবি পার্টি সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ।

জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে

দীর্ঘ এক যুগ পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনর্বহাল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়ের ফলে দলটি আবারও নির্বাচন কমিশনের অনুমোদিত রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পেল এবং জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ ফিরে পেল। রবিবার (১ জুন) দেশের সর্বোচ্চ আদালত জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের ২০১৩ সালের হাইকোর্টের রায় বাতিল করে নির্বাচন কমিশনকে আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন। বিষয়টি দেশি-বিদেশি নানা সংবাদমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হয়েছে। তুরস্কের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম আনাদলু এজেন্সী সংবাদ শিরোনাম করেছে, ‘বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনর্বহাল করল সর্বোচ্চ আদালত’। সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, এই রায় দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটিয়েছে এবং আগামী মাসগুলিতে নির্ধারিত দেশের ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীকে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছে। পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন তাদের সংবাদের শিরোনাম করেছে, ‘জামায়াতে ইসলামীকে পুনর্বহাল করল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত’। খবরে বলা হয়, বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ২০১৩ সালে হাইকোর্টের আদেশে বাতিল করা হয়। তবে সম্প্রতি শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দলটি ওই আদেশের পুনর্বিবেচনার আবেদন করে এবং অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট তাদের পক্ষে রায় দেয়। জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামীর ছবি যুক্ত করে সামা টিভি শিরোনাম করেছে, ‘জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনঃস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট’। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের সংবাদ শিরোনামে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত বৃহত্তম ইসলামী দলকে ফিরিয়ে এনেছে’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার আমলে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছিল এবং এর নেতাদের উপর কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। তবে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর জামায়াতের ফেরার পথ সুগম হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি লিখেছে, নিষিদ্ধ জামায়াত-ই-ইসলামির দল নিবন্ধন পুনর্বহাল করল বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট। তারা বলছে, বাংলাদেশ রোববার বৃহত্তম ইসলামী দলটির নিবন্ধন পুনঃস্থাপন করেছে, যা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নির্বাচনের বাইরে থাকা দলটির নির্বাচনে ফেরার সুযোগ তৈরি করেছে। ডনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়ে, বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্প্রতি আওয়ামী লীগকেও সাময়িক নিষিদ্ধ করেছে এবং শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচার শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। ১ জুন সেই মামলার শুনানি সরাসরি বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) সম্প্রচারিত হয়। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা উসকানি, সহায়তা, ষড়যন্ত্র এবং প্রতিরোধে ব্যর্থতাসহ কমপক্ষে পাঁচটি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গণহত্যা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আজ রবিবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্য ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এ মামলায় কারাগারে থাকা আরেক আসামি, অভ্যুত্থানের সময় আইজিপির দায়িত্বে থাকা চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ১৬ জুন ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এদিন ১৩৪ পৃষ্ঠার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন। এই বিচারকাজ সারা বিশ্বকে দেখাতে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ট্রাইব্যুনালের শুনানি সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। গত ১২ মে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। তদন্ত প্রতিবেদনে জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার নাম উঠে আসে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। প্রসিকিউশনের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।

নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার রায়ে যে প্রতিক্রিয়া জানালেন জামায়াত আমির

রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। নির্বাচন কমিশনকে অবিলম্বে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। তবে দলটির প্রতীক দাঁড়িপাল্লার বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি আদালত। আপিল বিভাগ প্রতীকের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। রোববার (০১ জুন) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৪ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। এ সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় বাতিল করে দেশের সর্ব্বোচ আদালত এ রায় দেন। এদিকে এ রায়ের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের অভিব্যক্তি জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। রোববার সকালে জামায়াত আমির তার ভেরিফাইয়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধনসংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া ন্যায়ভ্রষ্ট রায় আজ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ বাতিল ঘোষণা করেছে। মহান রবের দরবারে নতশিরে শুকরিয়া আদায় করি—আলহামদুলিল্লাহ, সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ। তিনি আরও লিখেছেন, পরবর্তী প্রক্রিয়া নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। মহান রবের সাহায্য চাই—আমরা যেন দ্রুতই আমাদের পূর্ণ অধিকার ফিরে পাই। আমিন। এর আগে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরে হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামায়াতে ইসলামী। তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানিতে জামায়াতের মূল আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় গত বছরের নভেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ বলে আপিল খারিজের আদেশ দেন। ফলে রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল থাকে। এরপর গত ১৪ মে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পেতে আপিলের শুনানি শেষ হয়। এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য ১ জুন দিন ধার্য করা হয়েছিল।

নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিন: ছালাউদ্দিন ছালু

অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান শেখ ছালাউদ্দিন ছালু। এ সময় সংস্কারের জন্য আর কতদিন প্রয়োজন বলে সরকারের কাছে প্রশ্ন রাখেন তিনি। শনিবার (৩১ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এনপিপির প্রধান অঙ্গ-সংগঠন ন্যাশনাল পিপলস যুব পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি। এনপিপির চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে দেশে একটি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্রান্তিকাল চলছে। প্রধান উপদেষ্টাকে বলতে চাই, জনগণ অনেক আশা ও প্রত্যাশা নিয়ে আপনার দিকে তাকিয়ে রয়েছে, দেশের জন্য আপনি নতুন কিছু করবেন। কিন্তু জনগণ এখন পর্যন্ত ক্রান্তিকাল অতিক্রম করার নতুন কিছু দেখতে পাচ্ছে না। জনগণের প্রত্যাশা, আপনি আপনার ক্যারিশম্যাটিক লিডারশিপ দিয়ে বৈষম্য দূর করবেন এবং মৌলিক অধিকার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবেন। ন্যাশনাল পিপলস্ যুব পার্টির আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম সুমনের সভাপতিত্বে এবং ন্যাশনাল পিপলস্ স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সভাপতি এমাদুল হক রানার সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন-এনপিপির যুগ্ম আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল হাই মন্ডল, মো. ইদ্রিস চৌধুরী, শেখ আবুল কালাম, সৈয়দ মাহমুদুল হক আক্কাছ, মো. ইমরুল কায়েস, জাগপার সভাপতি এ কে এম মহিউদ্দিন আহাম্মেদ (বাবলু) প্রমুখ। সম্মেলন শেষে ন্যাশনাল পিপলস্ যুব পার্টির আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম সুমনকে সংগঠনের সভাপতি ঘোষণা করা হয়।