
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘ ১৭ বছর পর নিজ দেশে পা রাখলেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জ থেকে বের হয়ে তিনি বাসে চড়ে রাজধানীর পূর্বাচলের ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে এলাকায় আয়োজিত গণসংবর্ধনাস্থলে রওনা দেন। সড়কের পাশে অবস্থান নেওয়া সমর্থক ও নেতাকর্মীরা তাকে এক নজর দেখার জন্য মুখিয়ে ছিলেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে তারেক রহমানকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি স্ত্রী ও কন্যাসহ বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তারেক রহমানকে স্বাগত জানান। ইমিগ্রেশনের প্রক্রিয়া শেষে তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে রওনা হন।
ভিভিআইপি লাউঞ্জ থেকে বের হয়ে তিনি প্রথমে জুতা খুলে শিশির ভেজা ঘাসে পা রাখেন এবং এক মুঠো মাটি হাতে তুলে নেন। এরপর বাসে চড়ে গণসংবর্ধনাস্থলের দিকে যাত্রা করেন। বাসটির গায়ে লেখা ছিল, ‘সবার আগে বাংলাদেশ’। সড়কের পাশে সমর্থকরা তাকে শুভেচ্ছা জানালে, তারেক রহমানও হাসিমুখে হাত নেড়ে তাদের প্রতিক্রিয়া জানান।
পূর্বাচলের ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে এলাকায় তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আয়োজন করা গণসংবর্ধনায় ৪৮ ফুট বাই ৩৬ ফুটের বিশাল মঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। মঞ্চ বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে কুড়িল মোড় সংলগ্ন সড়কের উত্তর পাশে, দক্ষিণমুখী অবস্থানে।
এর আগে সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে তারেক রহমানকে বহনকারী ফ্লাইটটি সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। প্রায় এক ঘণ্টার গ্রাউন্ড টার্নঅ্যারাউন্ডের পর ফ্লাইটটি সকাল ১১টা ১০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ৩৬ মিনিটে হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে তারেক রহমান সপরিবারে বাংলাদেশ বিমানে চড়ে দেশে যাত্রা শুরু করেন।
২০০৭ সালের জানুয়ারিতে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতির অভিযোগে প্রায় ১৮ মাস কারাবন্দী ছিলেন তারেক রহমান। মুক্তির পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য তিনি সপরিবারে লন্ডনে চলে যান। ওই বছরের ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশে ফেরার পথ বন্ধ হয়ে যায়। একের পর এক মামলা তারেক রহমানকে দেশের বাইরে রাখে। অবশেষে দীর্ঘ সেই অপেক্ষা শেষ হলো, প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরলেন তিনি।