
কুমিল্লার দুইবারের সাবেক মেয়র ও বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মনিরুল হক সাক্কু স্বীকার করেছেন, মনোনয়নপত্র কেনা তার একটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল এবং এজন্য তিনি সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। তিনি আরও জানান, কেনা মনোনয়নপত্র তিনি জমা দেবেন না।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লা নগরের নানুয়া দিঘির পাড়ে নিজের বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান সাক্কু।
সংবাদ সম্মেলনে সাক্কু বলেন, হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সঙ্গে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন কিনেছিলেন। তবে পরে তিনি বুঝতে পেরেছেন, এই সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। তিনি বলেন, “আমি ধানের শীষের পক্ষের লোক। আমাদের প্রিয় নেতা মনিরুল হক চৌধুরীকে বিজয়ী করতে কাজ করছি এবং ভবিষ্যতেও করব।”
তবে তিনি শর্তসাপেক্ষ অবস্থানও স্পষ্ট করেছেন। কুমিল্লা-৬ আসনে যদি দলীয় মনোনয়ন বদল করে হাজী ইয়াছিনকে দেওয়া হয়, তাহলে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবেন।
সাক্কু আরও বলেন, “আমি বিএনপির জন্য নিবেদিত প্রাণ। দুইবার কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। সর্বশেষ দুটি নির্বাচনে জনগণের চাপে অংশ নিয়েছিলাম। ওই দুই নির্বাচনে হাজী ইয়াছিন তার শ্যালক কায়সারকে প্রার্থী করিয়ে এবং সাবেক এমপি বাহারের সঙ্গে সমন্বয় করে আমার ভোট ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। আমি ৭০ থেকে ৮০ হাজার ভোট বেশি পেয়েছিলাম, কিন্তু সেগুলো নষ্ট করা হয়েছে।”
হাজী ইয়াছিনের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নিয়েও তিনি সমালোচনা করেন। সাক্কু বলেন, ইয়াছিন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক থাকাকালীন কোনো উপজেলায় কার্যকর কমিটি গঠন করতে পারেননি এবং সাংগঠনিক দিক থেকে কার্যক্রম পরিচালনায় কোনো সাফল্য পাননি। তার মূল কার্যক্রম ছিল সাক্কুর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করা।
দল থেকে বহিষ্কারের প্রসঙ্গে সাক্কু জানান, মনোনয়ন ঘোষণার আগেই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাকে ডেকেছিলেন। সেখানে তিনি কুমিল্লা-৬ আসনের রাজনৈতিক বাস্তবতা তুলে ধরেন এবং জানান, মনিরুল হক চৌধুরীকে ধানের শীষ না দিলে আসনটি দল হারাতে পারে। বহিষ্কার আদেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটি দলের সিদ্ধান্ত এবং এ বিষয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমি বিএনপির রাজনীতি করি। শহীদ জিয়ার আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।”
উল্লেখ্য, কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী। একই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন। ২০২২ সালে দলের নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় মনিরুল হক সাক্কুকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রোববার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন কিনেছিলেন।