নির্বাচনের আগেই হাসিনার প্রতিটি হত্যাযজ্ঞের বিচার চায় হেফাজত
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৮:৩৭ পিএম, ২৫ জুন ২০২৫

নির্বাচনের আগেই শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যাসহ প্রতিটি হত্যাযজ্ঞের বিচার দাবি করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
বুধবার (২৫ জুন) এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, ইসলামবিদ্বেষী, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী চেতনা সংরক্ষণ, রাষ্ট্র-সংস্কারের গণ-আকাঙ্ক্ষা সুসংহতকরণ এবং জাতীয় ঐকমত্য গঠনকল্পে অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে হবে। সেসঙ্গে নির্বাচনের আগেই শাপলা চত্বরে আলেম-ওলামা হত্যাকাণ্ড ও জুলাই গণহত্যাসহ ফ্যাসিস্ট হাসিনার প্রতিটি হত্যাযজ্ঞের বিচার সম্পন্ন করতে হবে। এর অন্যথা হলে ড. ইউনূস সরকারকে ছাত্র-জনতা ক্ষমা করবে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বুঝতে হবে, এখনো বিছানায় কাতরাচ্ছে পঙ্গুত্ব ও অন্ধত্ব বরণ করা হাজার হাজার আহত শাপলা ও জুলাই-যোদ্ধা। অগণিত শহীদের রক্তের ফসল জুলাই বিপ্লব ব্যর্থ হলে গণঅভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার কাছে ড. মোহাম্মদ ইউনূস সরকারকে জবাব দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শাপলা চত্বরের রক্তাক্ত ইতিহাসের পথ বেয়ে জুলাই বিপ্লব আমাদের জাতীয় জীবনে হাজির হয়েছে। জুলাইকে বিস্মৃত হতে দেওয়া যাবে না। জুলাই বিপ্লবের সাথে গাদ্দারি করে জনসমর্থন ধরে রাখা যাবে না। এদেশে যারাই ভারতীয় আধিপত্যবাদের গোলামি করবে, দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিবে, মাফিয়াতন্ত্র জারি রাখবে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করে ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইবে, তাদের বিরুদ্ধে জুলাইয়ের গণপ্রতিরোধের চেতনা বারবার ফিরে আসবে। দেশের জনগণের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে ছাত্র-জনতা আবারও রাজপথে নামতে বিলম্ব করবে না। মনে রাখতে হবে, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। ফেরাউন পারেনি; হাসিনাও পারেনি। ভবিষ্যৎ ক্ষমতাসীনদের এই ঐতিহাসিক শিক্ষা ধারণ করতে হবে।
মাওলানা আজিজুল হক বলেন, জুলাই বিপ্লবের অন্যতম দাবি কাঠামোগত সংস্কার। ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার জন্ম দেওয়া বিদ্যমান রাষ্ট্র-কাঠামোর বিলোপ ও পুনর্নির্মাণের মধ্যেই বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যৎ পরিদৃষ্ট। জুলাই গণঅভ্যুত্থান সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এনে দিয়েছে। গণহত্যার বিচার ও সংস্কার প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্র-সংস্কারের মৌলিক কাজগুলো আরও বেগবান করতে হবে। ব্যক্তিগত ক্ষুদ্র স্বার্থের চেয়ে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষায় আত্মনিবেদিত হওয়ার মধ্যেই মাহাত্ম্য নিহিত।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারকাজে অবশ্যই ইসলামবিরোধী অপশক্তির ফাঁদ ও কু-মন্ত্রণা এড়িয়ে যেতে হবে। সংবিধানের মূলনীতি থেকে বহুত্ববাদ বাদ দিতে হবে। কোরআন-সুন্নাহবিরোধী নারী কমিশন বাতিল করতে হবে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ধর্ম, সভ্যতা সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের আলোকে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করতে হবে।