
বাংলাদেশের গণমাধ্যম অঙ্গনে সাম্প্রতিক সহিংসতা শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের ওপর আঘাত নয়, বরং পুরো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয় বলে মন্তব্য করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনাকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের অধিকার লঙ্ঘনের শামিল বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।
রোববার ২১ ডিসেম্বর দুপুরে প্রথম আলো কার্যালয়ে গিয়ে সংহতি প্রকাশের সময় এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলো কার্যালয়ে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
প্রথম আলো ভবনের সামনে কিছু সময় অবস্থান করে সেখানকার সার্বিক পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন মাইকেল মিলার। পরে তিনি পত্রিকাটির জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে হামলার দিনের পুরো ঘটনার বিবরণ শোনেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কেও অবহিত হন।
এ সময় ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, “গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোর ভবনে সংঘটিত অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর পত্রিকাটির সব সাংবাদিকের প্রতি সংহতি জানাতেই আমি এখানে এসেছি। প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারে হামলা মানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত।”
নির্বাচনের প্রাক্কালে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ যখন নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে, তখন মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিসর বজায় রাখা কতটা গুরুত্বপূর্ণ—আমি সেটা বিশেষভাবে তুলে ধরতে চাই । আমি আশা করি, এমন ঘটনা আর কখনোই আমরা দেখব না। এটি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য একটি ভয়াবহ মুহূর্ত ছিল।”
সংবাদমাধ্যমের দায়িত্ব ও দৃঢ়তার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন মাইকেল মিলার। তিনি বলেন, “এখন আপনাদের হতে হবে দৃঢ়। আবার নিজেদের পায়ে উঠে দাঁড়াতে হবে। নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে এগোতে পারে সে জন্য আপনাদের পত্রিকার প্রকাশনা চালিয়ে যেতে হবে, সংবাদ পরিবেশন অব্যাহত রাখতে হবে এবং সবার জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।”
এ সময় প্রথম আলোর পক্ষ থেকে পরিস্থিতি সম্পর্কে ইইউ রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক, উপ-সম্পাদক লাজ্জাত এনাব মহসি এবং হেড অফ অনলাইন শওকত হোসেন।